মঙ্গলবার, ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
বছরে সাশ্রয় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা Reviewed by Momizat on . বছরে সাশ্রয় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ডেইলি চিরন্তনঃপদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে দক্ষিণের ১৯ জেলায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে দূরত্ব কমবে, বাঁচবে সময়। দ্রুত যাতায়াতে বছরে সাশ্রয় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ডেইলি চিরন্তনঃপদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে দক্ষিণের ১৯ জেলায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে দূরত্ব কমবে, বাঁচবে সময়। দ্রুত যাতায়াতে Rating: 0
You Are Here: Home » জাতীয় » বছরে সাশ্রয় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা

বছরে সাশ্রয় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা

বছরে সাশ্রয় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা

ডেইলি চিরন্তনঃপদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে দক্ষিণের ১৯ জেলায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে দূরত্ব কমবে, বাঁচবে সময়। দ্রুত যাতায়াতের জন্য যাত্রীরা উপকৃত হবেন।

সেতু দিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছাতে ৫৫ থেকে ১১০ শতাংশ সময় কম লাগবে। দূরত্ব কমবে ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ। এতে ২০২৩ সালে অর্থনীতিতে পরিচালন ব্যয় সাশ্রয় হবে ৪৫০০ কোটি টাকা। প্রতিবছর এ সাশ্রয় ৭ থেকে ১০ শতাংশ হারে বাড়বে। ফলে ২০৪৪ সালে সাশ্রয় বেড়ে দাঁড়াবে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।

পদ্মা বহুমুখী সেতুর বিষয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বিশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে এ সম্ভাবনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানে বহুমুখী ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। সারা দেশের মানুষের মধ্যেও এর প্রভাব থাকবে।

কেননা যোগাযোগে দূরত্ব ও সময় কমবে, দুর্ভোগ লাঘব হবে। ফলে অর্থনীতিতে পরিচালন খরচ কমে গিয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে জিডিপিতে। পাটুরিয়া ফেরিঘাট দিয়ে ঢাকা থেকে খুলনার দূরত্ব ২৪০ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগে কমপক্ষে ৭ ঘণ্টা ৫০ মিনিট।

পদ্মা সেতু দিয়ে গেলে সময় লাগবে সাড়ে ৩ ঘণ্টা। এক্ষেত্রে ৪ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় বাঁচবে। মাওয়া ফেরিঘাট দিয়ে খুলনার দূরত্ব ১৭০ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগে ১২ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। পদ্মা সেতু দিয়ে গেলে সময় বাঁচবে ৯ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। এক্ষেত্রে সময় সাশ্রয় হবে গড়ে ৫৬ থেকে ৭৫ শতাংশ। দূরত্ব কমবে হবে ৩০ শতাংশ।

পাটুরিয়া ফেরিঘাট দিয়ে ঢাকা থেকে যশোরের দূরত্ব ২১০ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগে ৭ ঘণ্টা। মাওয়া ফেরিঘাট দিয়ে দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগে ১২ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট। পদ্মা সেতু দিয়ে দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট। পাটুরিয়া ফেরিঘাটের চেয়ে দূরত্ব কমবে ৫০ কিলোমিটার। সময় সাশ্রয় হবে ৩ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। মাওয়া ফেরিঘাট দিয়ে যেতে দূরত্ব একই হলেও সময় সাশ্রয় হবে ৯ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। এক্সেত্রে সময় বাঁচবে ৪৮ থেকে ৭৫ শতাংশ। দূরত্ব কমবে ২৫ শতাংশ।

গবেষণায় স্বাভাবিক অবস্থায় যাতায়াতের সময় হিসাব করা হয়েছে। কিন্তু ছুটির দিন বা বিশেষ দিনগুলোতে সময় আরও বেশি লাগে। কেননা তখন গাড়ির চাপ বেশি থাকে। এতে যানজট প্রকট হয়। কখনও কখনও ঢাকা থেকে পাটুরিয়া বা মাওয়া ফেরি পার হতে সময় লাগে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা। কখনও কখনও আরও বেশি। মাঝে মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। এতে যাতায়াতের সময় আরও বেড়ে যায়। এতে মানুষ ও গণপরিবহণের অপচয়ও বাড়ে।

সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব ৮৬ কিলোমিটার। এখন মাওয়া দিয়ে যেতে সময় লাগে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা। পদ্মা সেতু দিয়ে যেতে সময় লাগবে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। ঢাকা থেকে মাওয়া দিয়ে কুয়াকাটার দূরত্ব ৩০১ কিলোমিটার। এখন যেতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৬ ঘণ্টা। কখনো আরও বেশি। পদ্মা সেতু দিয়ে যেতে সময় লাগবে ৫ ঘণ্টা। তবে পদ্মা সেতুর ওপারে ভাঙ্গার পর যানজট বেড়ে গেলে সময় আরও বেশি লাগবে। তখন অর্থনীতিতে সাশ্রয়ও কম হবে।

পাটুরিয়া দিয়ে ঢাকা থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব ৪০৫ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগে ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা। কখনও আরও বেশি। পদ্মা সেতু দিয়ে গেলে দূরত্ব কমে হচ্ছে ৩০১ কিলোমিটার। সময় লাগবে ৫ ঘণ্টা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পদ্মা সেতুর কারণে যাতায়াতে সময় ও দূরত্ব কমায় মানুষ উপকৃত হবে। এতে ২০২৩ সালে পরিবহণ পরিচালনা খরচ কমবে ২১ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা ২ হাজার কোটি টাকা। সময় সাশ্রয় হওয়ার কারণে অপচয় কমবে ২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার বা ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

ফেরি দিয়ে যাতায়াত করলেও সাশ্রয় হবে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ৪৭৪ কোটি ডলার। এভাবে আগামী বছরে সাশ্রয় হবে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রতিবছরই পদ্মা সেতু ব্যবহারের মাত্রা বাড়বে। ফলে অপচয়ও কমবে। প্রতিবছর অপচয় কমে অর্থনীতিতে সাশ্রয় গড়ে ৭ থেকে ১০ শতাংশ হারে বাড়বে। প্রথমদিকে এ সাশ্রয় হবে সাড়ে ৯ শতাংশ হারে। ধীরে ধীরে তা কমতে থাকবে। ২০৪৪ সালে সাশ্রয় বাড়বে ৭ শতাংশ।

২০২৪ সালে সাশ্রয় হবে ৫৩ কোটি ডলার বা ৪৯০০ কোটি টাকা। ২০২৫ সালে সাশ্রয় হবে ৫৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা ৫৩৬৬ কোটি টাকা। এভাবে ২০৪৪ সালে গিয়ে সাশ্রয় হবে ১৬২ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা ১৫০৯৪ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক সিনিয়র গবেষণা পরিচালক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, এডিবি যখন গবেষণা করেছিল তখন অর্থনীতির আকার ছিল ছোট। এখন প্রত্যাশার চেয়ে অর্থনীতির আকার বেড়েছে। যমুনা সেতুতে যেভাবে যান চলাচলের হিসাব করা হয়েছিল এখন তার তিন গুণের বেশি চলে। ফলে পদ্মা সেতুতেও যা ধারণা করা হচ্ছে তার চেয়ে বেশি যানবাহন চলবে। এতে অর্থনীতিতে সেতুর অবদান এডিবির হিসাবের চাইতে অনেক বেশি হতে পারে।

সূত্র জানায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যে সম্পদ রয়েছে তা অর্থনীতিতে পুরো মাত্রায় কাজে লাগেনি যোগাযোগ দুর্বলতার কারণে। সেতু হওয়ায় ঢাকা থেকে খুলনা, মোংলা, বরিশাল, কুয়াকাটা অর্থনৈতিক করিডোর খুলে যাবে। বিশেষ করে মোংলা, পায়রাবন্দর ও পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চল অর্থনীতির হাবে পরিণত হবে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশে পুঁজি বিনিয়োগের রেট অব রিটার্ন বা মুনাফার হার সাধারণত ১৫ শতাংশ। কিন্তু প্রতিবেদনে বলা হয়, সেতুর ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ সহজ হওয়ার কারণে বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফার হার বেড়ে ২০ শতাংশে দাঁড়াবে। কৃষিতে মুনাফার হার ১৮ শতাংশ হতে পারে।

About The Author

Number of Entries : 450

Leave a Comment

সম্পাদক ও প্রকাশক মো: ইকবাল হোসেন
অফিস: ৯ নং সুরমা মার্কেট,৩য় তলা সিলেট।
ইমেইল-dailychironton@gmail.com
ওয়েব-www.dailychironton.com
মোবাইল-০১৭১৬-৯৬৯৯৭৮

© 2015 Powered By dailychironton.Designed by M.A.Malek

Scroll to top