রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :::
ডেইলি চিরন্তন অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য সিলেটসহ দেশ বিদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহীরা ইমেইলে যোগাযোগ করুন
শিরোনাম ::
শিশু মুনতাহাকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করা হয়,গ্রেপ্তার ৪ রেকর্ড গড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন জো রোগান আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবির ২ শিক্ষকসহ ৯ জন বহিষ্কার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার কোন শিক্ষায় বড় করছেন মেয়েকে, জানালেন ঐশ্বরিয়া বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের ৬ষ্ট প্রতিষ্টা বার্ষিকী উদজাপন ‘মাজার ভাঙচুর করে সুন্নি জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না’ জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার কঠোর বার্তা পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের মেসির মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন মায়ামি কোচ বন্যায় আরো মৃত্যু, সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায় প্রাথমিকের ‘শপথ বাক্য’ থেকে বাদ গেল বঙ্গবন্ধুর অংশ অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন দপ্তর পেলেন নোবেল বিজয়ী থেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য উপদেষ্টা যারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ আশঙ্কা ছিল এ ধরনের একটা আঘাত আসবে : প্রধানমন্ত্রী
ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচে তৈরি বাংলাদেশ

ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচে তৈরি বাংলাদেশ

Chironton

কয়েক মাইল দূরেই সমাহিত উইলিয়াম শেকসপিয়ার। কে জানে সেখান থেকে উঠে ‘মিডসামার নাইটস ড্রিম’টা নতুনভাবে লিখতে ইচ্ছা হচ্ছে কি না! পরিবর্তিত রচনাটার শিরোনাম হবে ‘এ প্যাশনেট নেশনস ড্রিম’।
চার্লস ডিকেন্স যেমন চরিত্র বদলে নতুন করে লিখতে চাইতেন তাঁর ‘গ্রেট এক্সপেকটেশনস’টা।

আজকের এজবাস্টনে বাংলাদেশ যখন খেলতে নামছে তাঁর ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচে তখন গল্পটা ক্রিকেট ছাড়িয়ে এত বড় মঞ্চ হয়ে যাচ্ছে যে শেকসপিয়ার-ডিকেন্সরাও এসে পড়েন। ইতিহাস রোমাঞ্চ জোগায়, নিকট অতীত উত্তেজনার আলো জ্বালায়। বাংলাদেশ হৃদয়ে ভালোবাসা, বুকে বিশ্বাস আর চোখে রং নিয়ে দেখে ডুবে যায় রঙিন স্বপ্নে। তবে যদি রবীন্দ্রনাথ থাকতেন, তাহলে বিপদে পড়তেন। ‘আমার সোনার বাংলা’ আর ‘জনগণমন অধিনায়ক’-এর মধ্যে একটাকে যে বেছে নিতে হয়!

সত্যি বললে এ দুই দেশ যখন ক্রিকেট খেলে তখন অদ্ভুত একটা সুরেলা ঐক্য তৈরি হয়। এসব মঞ্চে দুই দেশ জাতীয় সংগীত গেয়ে নিজেদের প্রকাশ করে, জাতীয়তাবোধের চূড়ান্ত বিচ্ছুরণ হওয়ার কথা তাতে কিন্তু সেই প্রকাশের জায়গাটা এক হয়ে যায়, যখন দেখা যায় দুটিরই একজন রচয়িতা। আবার ছোট প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে তুলে আনার ক্ষেত্রে ভারতীয় অবদান তো অনস্বীকার্য। মিলেমিশে ভারত-বাংলাদেশ মানে এমন একটা ম্যাচ, যেখানে বাংলাদেশ ছোট ভাই। সেটা বদলে গিয়ে এখন অবস্থা এমন যে কাল দুই দলের সংবাদ সম্মেলন এবং তাতে ভারতীয় পক্ষের এমন শ্রদ্ধা যে এরপর বুঝতে বাকি থাকে না এটা সমতার ম্যাচ। সমান-সমান দুই প্রতিপক্ষের লড়াই। কিন্তু আজ যে সমতাতেও ঠিক চলছে না। চুল পরিমাণ হলেও এগিয়ে থাকতে হবে। তাহলে স্বপ্নরথটা আরো উঁচুতে ওঠে। লন্ডন টাওয়ারের উচ্চতা পেরিয়ে পৌঁছায় আইফেল টাওয়ারে।

আসলে এটা এক অর্থে ‘দ্য লাস্ট ফ্রন্টিয়ার’। শেষ সীমান্ত। ব্যাপারটাকে ক্রিকেটে জনপ্রিয় করেছিলেন স্টিভ ওয়াহ। সব জিতেছেন, কিন্তু ভারতে সিরিজ জেতা হয়নি বলে সেটার এই নামকরণ। এবং এর সঙ্গে বাংলাদেশেরও মিল থাকছে। গত দুইবার যে বাংলাদেশের স্বপ্নের ডানা কাটা গিয়েছিল, তা এই ভারতের কল্যাণেই। ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল সেমিফাইনাল হয়নি, ভারত হতে দেয়নি বলে। গত বছর এশিয়া কাপের শিরোপাও যে হতে হতে হলো না, সেটাও তো প্রতিপক্ষের নাম ভারত ছিল বলে। মাঝখানে বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতেও জেতা ম্যাচটা নিয়ে গেছে ওরা। একদিকে আবেগ-উত্তেজনা-উন্মাদনা মিলিয়ে একটা নতুন ক্রিকেটীয় দ্বৈরথ তৈরি হচ্ছে; কিন্তু সমান্তরালে বড় মঞ্চে ভারত-বাংলাদেশের জন্য গেরোও হয়ে যাচ্ছে না! প্রেরণার জন্য হাত বাড়াতে হয় ইতিহাসে, যে ইতিহাস জানায় ২০০৭ বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড থেকে ভারতকে বিদায় করেছিল কে? উত্তর—বাংলাদেশ। ২০১২ এশিয়া কাপে শচীন টেন্ডুলকার শততম সেঞ্চুরি করলেন। কিন্তু খুব মনে আছে, ম্যাচ শেষে মিরপুরের সংবাদ সম্মেলন কক্ষ যতটা অভিভূত ততটাই প্রশ্নমুখরও। ভারত ম্যাচটা হেরেছে এবং ঠারেঠোরে যা বলা হলো তার মানে তাঁর সেঞ্চুরির দিকে মন দিতে গিয়ে ভারত যথেষ্ট রান করতে পারেনি। কেউ একজন বললেন, ‘দিনের শেষে কি মনে হচ্ছে না যে রানটা একটু কম হয়ে গেছে। আরেকটু চালিয়ে খেলা উচিত ছিল। ’ টেন্ডুলকার সাধারণত খেপেন না। সেদিন খেপে গেলেন, ‘দিনের শেষে তোমার অনেক কিছুই মনে হতে পারে। কারণ এটা দিনের শেষ!’ সেই দিনের শেষটা ছিল বাংলাদেশের। ভারতকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ পৌঁছে ফাইনালে। নিকট অতীতে, যখন বাংলাদেশ উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর তখন ভারতের সঙ্গে পারা যাচ্ছে না। কিন্তু আরো অনুজ্জ্বল সময়ে যখন পারা গেছে, এখন পারা যাবে না কেন? পারার সম্ভাবনা যে কম নয় সেটা সবাই এত মানছে যে একবারও মনে হচ্ছে না বড় প্রতিপক্ষের সঙ্গে নামছে বাংলাদেশ। হার্শা ভোগলে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের দেখে হাসতে হাসতে বললেন, ‘তাহলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ফাইনাল!’ তারপর একটু শুদ্ধ করার দরকার দেখলেন, ‘তা যাই হোক যারা ভালো খেলে তারা জিতুক। কিন্তু মনে হচ্ছে খুব ভালো একটা ম্যাচ হবে। ’

ম্যাচের বাইরের আবেগ-উত্তেজনা নিয়ে অনেক কথা হয়। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ হলে বিষয়টা এমন জায়গায় পৌঁছায় যে কাল সংবাদ সম্মেলনে একাধিক প্রশ্ন আসে, এটাকে বাংলাদেশ অধিনায়ক কিভাবে দেখেন? খেলোয়াড়দের এর থেকে মুক্ত রাখার উপায় কী! সত্যি বললে, আবেগটা কখনো কখনো সীমা ছাড়ায়। এমন বিশ্রী চেহারা নেয় যে খেলোয়াড় বা সংশ্লিষ্টদের জন্য বিব্রতকর হয়। কিন্তু আবার আবেগ না থাকলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের চলে কী করে! যে যাই বলুক বাংলাদেশ দল মাঠে বড় হয়েছে এই সেদিন, কিন্তু মাঠের বাইরে বহুদিন ধরেই। এমনকি ক্রিকেটের যে সিঁড়ি তাতে প্রথম ধাপটা সমর্থকদেরই তৈরি করে দেওয়া। তার জন্যই তো অভিজাত শ্রেণিতে প্রথম প্রবেশাধিকার। সেই দর্শকদের উত্তেজনা থাকবে না! আর খেলাধুলায় কোনো ম্যাচ তো বড় ম্যাচ হয় তখনই যখন আবহে লেগে থাকে উত্তেজনা। পটভূমিতে বাজতে থাকা বদলা কিংবা প্রতিশোধের সুর। বাংলাদেশ-ভারত দ্বৈরথটা যে নতুন মাত্রায় পৌঁছাচ্ছে তাতে তো এরই বিরাট ভূমিকা। এই যে বাংলাদেশ ম্যাচের আগে টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়ি হচ্ছে, ভারতীয়দের ছোঁয়া পেতে মানুষ গেটের কাছে বসে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, হোটেলে ‘জিততেই হবে’ বলে ভিড় করেছে এখানকার স্থানীয় বাংলাদেশিরা—এগুলো অনুষঙ্গে থাকে বলেই একটা ম্যাচ আর দশটা মাচের চেয়ে আলাদা হয়। কিন্তু সমস্যা হলো সীমানা। নিজের দেশকে যেমন ইচ্ছা সমর্থন করতে অসুবিধা নেই, কিন্তু অন্য দলকে অপমানে অসুবিধা আছে। সীমা মেনে এই মাত্রাটুকুর সংযুক্তি খেলারই রং বাড়ায় এবং খেলোয়াড়দেরও সাধারণত তাড়িত করে নিজের সর্বস্বটা ঢেলে দিতে; কিন্তু সীমা লঙ্ঘনে যে তিক্ততাটুকু তৈরি হয় তা বরং চাপ হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশ সেই চাপ চায় না। মাশরাফি কিংবা অন্য কেউ যাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে এই কয়দিনে, প্রত্যেকে আগুনটাকে নেভাতেই চেয়েছেন। চেয়েছেন মাঠের ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে। বাংলাদেশের মানুষের আবেগ একসময় খেলোয়াড়দের ক্ষমতার সর্বোচ্চটাকে বের করেছে, এখানকার কিছু উন্মাদের জন্য যেন হাওয়াই চাপ না হয়। সমর্থক-উন্মাদনা মাঠের ক্রিকেটের রং বাড়ানোর জন্য যতক্ষণ ততক্ষণ এটা অলংকার। যখন বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে ক্রিকেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তখন এটা কেলেঙ্কারি। অলংকারটা যেন কলঙ্ক না হয় সেটারও দরকার বাংলাদেশেরই স্বার্থে। চাপ চায় না বাংলাদেশ। নির্ভার ক্রিকেট খেলতে চায়। উৎসাহ চায়, যাতে পরের ধাপটা পেরোনো যায়। উগ্রতা চায় না, যা দলকে বাধাগ্রস্ত করে।

একটা সময় ছিল যখন ভারত মানেই ছিল স্পিনে পরাক্রমশালী রাজা, পেস বোলিংয়ে অসহায় প্রজা। দিন বদলেছে। এখন দেশের বাইরে পেস বোলিং কন্ডিশনেও জিতে আসে। ওদের পেসার মানেই আর বলের শাইন উঠিয়ে বলকে স্পিন উপযোগী বানানোর কারিগর নন। কিন্তু ভারতকে যেন ইতিহাসের সেই অন্ধকার দিনে ফেরাতে চায় বাংলাদেশ। চার পেসার নিয়ে দিতে চায় চাপ; গত ম্যাচে সাফল্যের কারণেই নয়, বাংলাদেশ মনে করে তবু ভারতের পেস বোলিং খেলতে অস্বস্তি আছে। তা ছাড়া ম্যাচের আগে চার পেসারও ওদের ম্যাচপূর্ব ভাবনায় চিন্তার উদ্রেক করে আর ওদিকে জানানো হবে যে বাংলাদেশ আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে তৈরি। এখানে প্রথম ১০ ওভার বাদ দিলে বাকি সময় বোলার আর গড়াগড়ি খাওয়া রোলারের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য থাকছে না, তবু বাংলাদেশের চার পেসারের চার রকম মাত্রা আক্রমণকে ধারালো করে রাখে। যদিও সাকিব আছেন, তবু স্পিনে ওদের দক্ষতার কারণে সাকিব বা মোসাদ্দেক নন, যা করার করতে হবে মূলত এই চার পেসারকে। বাজিতে আছেন মুস্তাফিজও। যদিও এমন কিছু পারফরম্যান্স নেই তবু প্রতিপক্ষ ভারত বলে আর একটা বড় পারফরম্যান্স বকেয়া আছে বলে মুস্তাফিজকে আজ দরকার সর্বোচ্চ ক্ষমতায়। সেটা দিয়ে ভারতের ব্যাটিংকে ধাক্কা দিতে হবে। আর যে যেভাবেই দেখুক চাপটা ভারতের দিকে। বিরাট কোহলি কাল সংবাদ সম্মেলনে একজনের প্রশ্নে রসিকতা করে বললেন, ‘তবু ভালো যে তুমি বলছ আমরা ভালো খেলছি। আমাদের এখানে তো শিরোপা না জিতলেই বলা হয় আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ’ এটা তাঁর রসিকতা কিন্তু সত্য কথাও। ভারত খেলে শিরোপার জন্য, সেমিফাইনাল জেতাটা যেন তাই দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। যখন বাংলাদেশের না জিতলেও এমন কিছু যায় আসে না। শুরুতে একটু চাপে ফেলতে পারলেই এ জায়গাটুকু বেরিয়ে যাবে। ঠিক যেভাবে কাল ফেভারিট ইংল্যান্ড চাপটা সামাল দিতে সমস্যায় পড়ল। গত ম্যাচের একাদশ নিয়েই খুব সম্ভব বাংলাদেশ নামছে, সেই একাদশের সিনিয়র খেলোয়াড়রা দায়িত্ব পালন করে রেখেছেন। তরুণ খেলোয়াড়রা! নতুন দিন, নতুন স্বপ্নে তো তরুণ প্রাণই বেশি জেগে ওঠে। সাব্বির-সৌম্যদের তিন ম্যাচে না পারা হোক বড় মঞ্চের জন্য সেরাটা জমিয়ে রাখা। হোক সাময়িক বিরতি। ঝাঁপিয়ে পড়ার আগের ঘুম।

যদি হয় তা-ই, স্বপ্নরথ যদি রূপকথার পথে তাহলে শেকসপিয়ার বোধ হয় সত্যিই জাগবেন। লিখবেন নতুন আঙ্গিকের ‘ড্রিম। ’ ডিকেন্সের ‘গ্রেট এক্সপেকটেশনস’ও হয়ে যাবে সত্যি।

আর রবীন্দ্রনাথেরও কোনো দ্বিধা থাকবে না। তাঁর ‘আমার সোনার বাংলা’ এমন সোনায় মাখা হয়ে যাবে যে তাই দেখে অপার মুগ্ধতায় বলবেন, ‘আমি তোমাদেরই লোক। ’

ও হ্যাঁ, তখন সম্ভবত তাঁর এই আফসোসও হবে, ক্রিকেট নিয়ে যে কেন কিছু লিখে গেলাম না! বাংলাদেশ আর এর ক্রিকেট ভালোবাসা নিয়ে লিখে না যাওয়াটা মস্ত ভুল হয়েছে!

সংবাদটি ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

November 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  



© All rights reserved © dailychironton.com
Design BY Web Nest BD
ThemesBazar-Jowfhowo