বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :::
ডেইলি চিরন্তন অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য সিলেটসহ দেশ বিদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহীরা ইমেইলে যোগাযোগ করুন
শিরোনাম ::
রাজ্য পুলিশের অনুমতি ছাড়া কলকাতায় অবস্থান, আটক সিলেট আ’লীগের ৪ নেতা প্রগতি মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় ১ম স্থান অর্জন করেছে তাওহীদ আহমদ সেজান শিশু মুনতাহাকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করা হয়,গ্রেপ্তার ৪ রেকর্ড গড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন জো রোগান আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবির ২ শিক্ষকসহ ৯ জন বহিষ্কার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার কোন শিক্ষায় বড় করছেন মেয়েকে, জানালেন ঐশ্বরিয়া বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের ৬ষ্ট প্রতিষ্টা বার্ষিকী উদজাপন ‘মাজার ভাঙচুর করে সুন্নি জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না’ জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার কঠোর বার্তা পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের মেসির মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন মায়ামি কোচ বন্যায় আরো মৃত্যু, সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায় প্রাথমিকের ‘শপথ বাক্য’ থেকে বাদ গেল বঙ্গবন্ধুর অংশ অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন দপ্তর পেলেন নোবেল বিজয়ী থেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য উপদেষ্টা যারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর
নারায়ণগঞ্জে মাদক বাণিজ্যে ২২ পুলিশ, তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ

নারায়ণগঞ্জে মাদক বাণিজ্যে ২২ পুলিশ, তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ

83296_f3মাদক ব্যবসা প্রতিরোধে যাদের অভিযান চালানোর কথা, খোদ সেই পুলিশ সদস্যরাই জড়িয়ে পড়ছে মাদক বাণিজ্যে। পুলিশ পাহারায় রাজধানীর পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জে চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা। জেলার প্রায় সব কটি থানা পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ সদস্যদের এ কাজে সহযোগিতা করছে তাদের কথিত সোর্স। শুধু মাদক ব্যবসাই নয়, সোর্সের মাধ্যমে চাঁদাবাজিও করছে এসব পুলিশ সদস্য। সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের ২২ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে ৮ জন কথিত সোর্স ও ২১ জন মাদক ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। গত ৫ই জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ কে এম মফিজুল হক স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এই চিঠিতে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় একাধিক নেতাকর্মীর নামও রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জ জেলার কতিপয় অসাধু পুলিশ সদস্য, তাদের কথিত সোর্সরা প্রতি মাসে নিয়মিতভাবে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মাসোহারা নিচ্ছেন। এসব মাদক ব্যবসায়ীরাই পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে সংশ্লিষ্ট অসাধু পুলিশ সদস্যদের সহায়তা নিয়ে মাদক ব্যবসা করে থাকে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সোর্সদের সঙ্গে অসাধু পুলিশ সদস্যরা নিজেরাও মাদক ব্যবসা এবং চাঁদাবাজি করছে। প্রতিবেদনে যে ২২ জন অসাধু পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলো- বন্দর থানার ওসি নজরুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক মোকারম হোসেন, এসআই ভিক্টর ব্যানার্জী; সদর থানার এসআই মিজানুর রহমান মিজান, এএসআই রাজু আহম্মেদ; সদর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই (টিআই) মোজামেম্মল হক; ফতুল্লা থানার এসআই আজিজুল হক, আশিষ কুমার দাশ ও কামরুজ্জামান, এএসআই ইমরান হোসেন, সাইফুল মালেক ও কামরুল ইসলাম; সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই আলেক ও তুষার; সোনারগাঁও থানার এসআই ইয়াছিন মুন্সি, অজয় কুমার পাল, আলী রেজা, নাসির উদ্দিন; রূপগঞ্জ থানার এসআই আলাউদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, জাহাঙ্গীর আলম ও রূপগঞ্জের ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রবিউল ইসলাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জ জেলা একটি অপরাধ প্রধান, শিল্পসমৃদ্ধ এবং ঘনবসতি এলাকা। এলাকাটি মাদক চোরাচালানের রুট হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ কারণে ফতুল্লা থানায় অবৈধ অর্থলোভী পুলিশ সদস্যদের তদবির করে বদলি হয়ে আসার প্রবণতা রয়েছে। অবৈধ অর্থলোভী ডিবি ও পুলিশ সদস্যরা মূলত সোর্সদের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জনের পথ সুগম করে থাকে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ শহরের আমলাপাড়া মাতৃসদন ভবনের মালিক ও ঢাকায় কর্মরত কাস্টম বিভাগের সুপার শ্রী সুজিৎ দীর্ঘদিন ধরে জেলায় অবৈধভাবে বিদেশী মদ ও বিয়ার সরবরাহ করে থাকে। তাকে সহায়তা করে সদর থানার সেকেন্ড অফিসার মিজানুর রহমান মিজান। কাস্টম সুপার সুজিৎ, এসআই মিজান ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মুন্না নিয়মিত ঢাকা থেকে মাদকদ্রব্য নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যায়। মাদক পরিবহনের ক্ষেত্রে তারা এ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে থাকে। অধিকাংশ সময় ভোর বেলায় এসআই মিজানের ক্লিয়ারেন্স এবং কাউন্সিলর মুন্নার পাহারায় নারায়ণগঞ্জে মাদক ঢুকে। সুজিৎ নিয়মিত নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় বড় অঙ্কের মাসোহারা দিয়ে থাকে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, নারায়নগঞ্জ শহরের শহীদ মিনার এলাকাসহ শহরের ফুটপাথগুলোতে হকারদের মাধ্যমে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করা হয়। সদর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মোজাম্মেল হকের পাহারায় শহরের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চলছে। এর বাইরে মোজাম্মেল ফুটপাথের হকারদের কাছ থেকে দিন হিসেবে সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০-৬০ টাকা অবৈধ ভাড়া উত্তোলন করে। এসব হকারদের মাদক ব্যবসায় ব্যবহার করে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সুমন মোল্লা গ্রুপ। মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও মোল্লা গ্রুপ মাদকের হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা করে আসছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সোনারগাঁও থানাধীন ললাটি গ্রামের বাসিন্দা মনির হোসেন, সেনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা  শামীম, বারেক, খোকন ও লিটনসহ ৮-৯ জনের একটি সিন্ডিকেট মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে। এসকল মাদক ব্যবসায়ীরা সোনারগাঁও থানাধীন মেঘনাঘাট, আননন্দবাজার, মোগড়াপাড়া, বারদি, কাঁচপুর, বৈদ্যের বাজার, শম্ভুপুরা, জামপুর, কাইকেরটেক, তালতলা, আশিয়ারচর, নয়াপুর, সেনপাড়া ও সাদীপুর এলকাকাকে স্পট হিসেবে বেছে নিয়ে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে। এসব স্পটে সাধারণত হিরোইন, ফেন্সিডিল, মদ, গাঁজা ও ইয়াবা বেশি বিক্রি হয়। সোনারগাঁও থানার এসআই ইয়াসিন মুন্সী, এসআই অজয় কুমার পাল, এসআই আলী রেজা এবং নাসির উদ্দীন এসব মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিয়ে থাকে।
প্রতিবেদনের তথ্য মতে, সিদ্ধিরগঞ্জের মাদক ব্যবসায় সহায়তা করেন থানার এসআই আলেক ও তুষার। পুলিশের পাশাপাশি মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন থানা যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতি ও যুবলীগ নেতা শহিদুল্লাহ ওরফে কালা মানিক। সিদ্ধিরগঞ্জের এনায়েতনগর, কুমিল্লা পট্টি, গোদনাইল পাঠানটুলি, জেলপাড়া পুল, আদমজি ইপিজেড, মুক্তি স্মরনি, চট্টগ্রাম রোড ও ট্রাক স্ট্যান্ড এলাকা মাদক স্পট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কালা মানিকের সহযোগীদের মধ্যে কেটু সুমন, দেলোয়ার হোসেন দুলু, ডাকাত মাসুম অন্যতম। দেলোয়ার সম্প্রতি মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলো। তবে কিছুদিনের মধ্যেই সে জামিনে বের হয়ে এবার পুলিশের সোর্স পরিচয়ে আবারও মাদক ব্যবসায় নিয়োজিত হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ বা ডিবি সদস্যরা  সাধারণত বিভিন্ন মামলা তদন্ত করতে গিয়ে আসামিদের সঙ্গে অবৈধ লেনদেনের সম্পর্ক গড়ে তোলে। অনেক আসামিরা পুলিশের অনুকম্পায় জামিনে মুক্ত হয়ে সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করে। পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে আগের চাইতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আরও বাড়িয়ে দেয়। প্রতিবেদনে ৮ জন সোর্সের তালিকা দেয়া হয়েছে, যারা হলো সদর উপজেলার ইউএনওর বাড়িসংলগ্ন ডিবির সোর্স আবদুর রশিদ, ফতুল্লার লালখার পুলিশ সোর্স শিবু, ধর্মগঞ্জের জাফর, ব্যাংক কলোনির জাকির হোসেন, রেলওয়ে স্টেশনের পান্না, পঞ্চবটির আনোয়ার ও বাদল এবং নন্দলালপুরের ডিবির সোর্স নওফেল। প্রতিবেদনে বলা হয়, সোর্স নামধারী ব্যক্তিরা অবৈধ অস্ত্র কিনে তা দিয়ে সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে শিল্পপতি ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে থাকে। ফতুল্লা থানাধীন ৯১ (নতুন), ২/১ (পুরাতন), নিউ চাষাঢ়া, জামতলার বাসিন্দা মেহেদী হাসান মানিক ডিবি পুলিশের সোর্স পরিচয়ে স্থানীয় বিভিন্ন বাড়িল মালিক ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ভয় দেখিয়ে ও ব্ল্যাক মেইলিং করে চাঁদা আদায় করছে।
প্রতিবেদনে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকার মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের একটি তালিকাও সংযুক্ত করা হয়েছে। ওই তালিকায় ২১ জনের নাম রয়েছে। তারা হলো মাসদাইর বেকারীর মোড়ের রকমত (৪০), শাসনগাঁওয়ের নূর হোসেন (৩৫), ফতুল্লার মীর সোহেল (৪০), কাইয়ুমপুরের ফহিজুল ইসলাম (৩৫), বইটা শরীফ এলাকার শরীফুল ইসলাম (৩৫) ও পাগলা হামিদ (৩৫)ম কুতুব আইল কাঠেরপুলের গিয়াস উদ্দিন ওরফে কাইল্যা গেমু (৪০), আজমত আলী (৩৮), দক্ষিণ সস্তাপুরের মাহবুবুল হক টগর (৪২), মঞ্জুরুল হক মাহী (৩৫), কতোয়ালের বাগের মনির হোসেন ওরফে কুত্তা মনির (৪০), পশ্চিম সস্তাপুরের নজরুল ইসলাম ওরফে ছোট নজরুল (৩৫), ইসদাইরের মাসুম (৪০), রসুলপুরের খালেক মুন্সী (৩২), শান্তিধারার মোস্তফা (৪১), গাবতলার মোর আলী (৪৫), মাসদাইরের উজ্জল (৪০), লালপুর টাগারপারের ছিনতাই বাবু (৩০), তল্লার জবনে আলম বিপ্লব (৪০) ও পঞ্চবটির জজ মিয়া (৩২)।

সংবাদটি ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

December 2024
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  



© All rights reserved © dailychironton.com
Design BY Web Nest BD
ThemesBazar-Jowfhowo