রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :::
ডেইলি চিরন্তন অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য সিলেটসহ দেশ বিদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহীরা ইমেইলে যোগাযোগ করুন
শিরোনাম ::
শিশু মুনতাহাকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করা হয়,গ্রেপ্তার ৪ রেকর্ড গড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন জো রোগান আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবির ২ শিক্ষকসহ ৯ জন বহিষ্কার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার কোন শিক্ষায় বড় করছেন মেয়েকে, জানালেন ঐশ্বরিয়া বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের ৬ষ্ট প্রতিষ্টা বার্ষিকী উদজাপন ‘মাজার ভাঙচুর করে সুন্নি জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না’ জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার কঠোর বার্তা পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের মেসির মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন মায়ামি কোচ বন্যায় আরো মৃত্যু, সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায় প্রাথমিকের ‘শপথ বাক্য’ থেকে বাদ গেল বঙ্গবন্ধুর অংশ অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন দপ্তর পেলেন নোবেল বিজয়ী থেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য উপদেষ্টা যারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ আশঙ্কা ছিল এ ধরনের একটা আঘাত আসবে : প্রধানমন্ত্রী
চলে যাওয়ার দুই বছর

চলে যাওয়ার দুই বছর

imagesমান্না দে। গানের জগতের এক কিংবদন্তি। গায়ক হিসেবে আধুনিক বাংলা গানের রাজ্যে চিরকালের রাজা। উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, ‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’ শীর্ষক বিখ্যাত গানের এ গায়ক বাংলা, হিন্দি, মারাঠি, গুজরাটি, পাঞ্জাবি, অসমীয়াসহ বিভিন্ন ভাষায় অজস্র গান গেয়ে বিশ্ব সংগীতাঙ্গনে নিজের স্থান করে নিয়েছেন বেশ দাপটের সঙ্গে। বৈচিত্র্যের বিচারে তাকেই হিন্দি গানের ভুবনে সর্বকালের সেরা গায়ক হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন অনেক সংগীতবোদ্ধা। উপমহাদেশের এ অসামান্য সংগীতপ্রতিভূর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯১৩ সালের এ দিনে না ফেরার দেশে চলে  গেছেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৯৪ বছর। ১৯১৯ সালের ১লা মে কলকাতার একটি সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে পিতা পূর্ণ চন্দ্র এবং মা মহামায়া দে-র ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন মান্না দে। তার আসল নাম প্রবোধ চন্দ্র দে হলেও দীর্ঘ ষাট বছরের সংগীতময় জীবনে ‘মান্না দে’ ডাকনামেই খ্যাতি লাভ করেন তিনি। কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী মোহাম্মদ রফি, কিশোর কুমার এবং মুকেশদের মতো তিনিও ১৯৫০ থেকে ১৯৭০-এর দশক পর্যন্ত ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সংগীত জীবনে তিনি সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেন। জন্মের পর পিতামাতার সংস্পর্শ ছাড়াও, পিতৃসম্পর্কীয় সর্বকনিষ্ঠ কাকা সংগীতাচার্য (সংগীতে বিশেষভাবে দক্ষ শিক্ষক) কে সি দে (পূর্ণ নাম: কৃষ্ণ চন্দ্র দে) মান্না দে-কে খুব বেশি অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করেছেন। ‘ইন্দু বাবুর পাঠশালা’ নামে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল এবং স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। স্কটিশ চার্চ কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি তার সহপাঠীদের গান শুনিয়ে আসর মাতিয়ে রাখতেন। কাকা কৃষ্ণ চন্দ্র দে এবং ওস্তাদ দবির খানের কাছ থেকে গানের শিক্ষা লাভ করেন তিনি। ওই সময় আন্তঃকলেজ গানের প্রতিযোগিতায় ধারাবাহিকভাবে তিন বছর তিনটি আলাদা শ্রেণীবিভাগে প্রথম হয়েছিলেন মান্না দে। ১৯৪২ সালে কাকা কৃষ্ণ চন্দ্র দের সঙ্গে মুম্বই দেখতে যান তিনি। সেখানে শুরুতে কৃষ্ণ চন্দ্র দের অধীনে সহকারী হিসেবে এবং তারপর শচীন দেব বর্মণের (এস.ডি. বর্মণ) অধীনে কাজ করেন। পরে তিনি অনেক স্বনামধন্য গীতিকারের সান্নিধ্যে আসেন এবং তারপর স্বাধীনভাবে নিজেই কাজ করতে শুরু করেন। ওই সময় বিভিন্ন হিন্দি চলচ্চিত্রের জন্য সংগীত পরিচালনার পাশাপাশি ওস্তাদ আমান আলী খান এবং ওস্তাদ আবদুল রহমান খানের কাছ থেকে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতে তামিল নেন মান্না দে। ১৯৪৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তামান্না’ চলচ্চিত্রে গায়ক হিসেবে তার অভিষেক ঘটে। এতে সুরাইয়ার সঙ্গে একটি দ্বৈত সংগীতে কণ্ঠ দেন মান্না দে। গানটির সুরকার ছিলেন কৃষ্ণ চন্দ্র দে। ওই সময় গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৫০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মশাল’ ছবিতে শচীন দেব বর্মণের গীত রচনায় ‘ওপার গগন বিশাল’ নামে একক গান গেয়েছিলেন মান্না দে। এ গানের কথা লিখেছিলেন কবি প্রদীপ। ১৯৫২ সালে মান্না দে বাংলা এবং মারাঠি ছবিতে একই নামে এবং গল্পে ‘আমার ভূপালী’ শীর্ষক একটি গান করেন। এসবের মধ্য দিয়েই সংগীতাঙ্গনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ও পাকাপোক্ত করেন তিনি এবং জনপ্রিয় গায়ক হিসেবে সংগীতপ্রেমীদের কাছ থেকে স্বীকৃতি পান। মান্না দে ভীমসেন জোসির সঙ্গে একটি জনপ্রিয় দ্বৈত গান ‘কেতকী গুলাব জুহি’তে কণ্ঠ দেন। এছাড়াও, তিনি কিশোর কুমারের সঙ্গে আলাদা গোত্রের দ্বৈত গান হিসেবে ‘ইয়ে দোস্তি হাম নেহী তোরেঙ্গে (শোলে)’ এবং ‘এক চতুর নার (পদোসান)’ গেয়েছেন। এছাড়া, মান্না দে শিল্পী ও গীতিকার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়সহ (হেমন্ত কুমার) আরও বেশ কিছু গীতিকারের সঙ্গে বাংলা ছবিতে গান গেয়েছেন। দ্বৈত সংগীতে লতা মুঙ্গেশকারের সঙ্গে ‘কে প্রথম কাছে এসেছি (শঙ্খবেলা)’ গান করেছেন। রবীন্দ্র সংগীতসহ প্রায় ৩৫০০ গান গেয়েছেন এ সংগীতজ্ঞ। ১৯৫৩ সালের ১৮ই ডিসেম্বর দক্ষিণাঞ্চলের কেরালার মেয়ে সুলোচনা কুমারনকে বিয়ে করেন মান্না দে। তাদের সংসারে শুরোমা (১৯৫৬) ও সুমিতা (১৯৫৮) নামে দুই কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করেন। ২০১২ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সুলোচনা। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুম্বইয়ে কাটানোর পর মৃত্যুর আগে কয়েক বছর ধরে বেঙ্গালুরুর কালিয়ানগর শহরে বসবাস করছিলেন মান্না দে। ২০০৫ সালে বাংলা ভাষায় তার আত্মজীবনী ‘জীবনের জলসাঘরে’ খ্যাতিমান আনন্দ প্রকাশনীর মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পরে এটি ইংরেজিতে ‘মেমরিজ কাম এলাইভ’, হিন্দিতে ‘ইয়াদেন জি ওথি’ এবং মারাঠী ভাষায় ‘জীবনের জলসাঘরে’ নামে ভাষান্তর হয়। মান্না দের জীবনী নিয়ে ‘জীবনের জলসাঘরে’ নামে একটি তথ্যচিত্র মুক্তি পায় ২০০৮ সালে। মান্না দে সংগীত একাডেমি তার সম্পূর্ণ আর্কাইভ বিকশিত ও রক্ষণাবেক্ষণ করছে। প্রখ্যাত রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় মান্না দের সংগীত সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ষাট বছরের সংগীত জীবনে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’, ‘পদ্মবিভূষণ’ এবং ‘দাদা সাহেব ফালকে’ খেতাবসহ অসংখ্য খেতাব অর্জন করেন তিনি। এছাড়া, ২০০৪ সালে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও ২০০৮ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ডি.লিট সম্মাননা লাভ করেন। মান্না দের অসংখ্য হিট গানের মধ্যে কিছু গান যেমন: বাংলা কফি হাউজের সেই আড্ডা, সবাই তো সুখী হতে চায়, যদি কাগজে লিখ নাম, পৌষের কাছাকাছি রোদ মাখা সেইদিন, কতদিন দেখিনি তোমায়, এই কূলে আমি, কথা দাও, খুব জানতে ইচ্ছে করে, আমি সারারাত, এ নদী এমন নদী, মাঝরাতে ঘুম, এই আছি বেশ, এই রাত যদি, কি এমন কথা, ক’ফোঁটা চোখের জল, সে আমার ছোটবোন, দীপ ছিল শিখা ছিল, যদি হিমালয়-আল্পসের সমস্ত জমাট বরফ, শাওন রাতে, আমার ভালোবাসার রাজপ্রাসাদে, স্বপ্নে বাজেগো বাঁশি, তীর ভাঙা ঢেউ, না না যেও না, তুমি আর ডেকো না, সুন্দরী গো দোহাই দোহাই এবং হিন্দি ইয়ারি হে ইমান মেরা ইয়ার মেরি জিন্দেগি, না মাঙ্‌গু সোনা চান্দি, জিন্দেগি ক্যয়সি হে পাহেলি হায়, পেয়ার হুয়া ইকরার হুয়া, লাগা চুনরি মে দাগ, এ মেরি জোহরা জাবিন, চুনরি সামহাল গোরি, এক চতুর নার কারকে সিঙ্গার, ইয়ে দোস্তি হাম নেহি তোরেঙ্গে, মুড় মুড় কে না দেখ প্রভৃতি সংগীতপ্রেমীদের মুখে মুখে ফেরে।

সংবাদটি ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

November 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  



© All rights reserved © dailychironton.com
Design BY Web Nest BD
ThemesBazar-Jowfhowo