হবিগঞ্জের বাহুবলে চার শিশু নিখোঁজের ঘটনায় স্থানীয় থানায় গেলে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে অভিভাবকদের বাড়ি গিয়ে ‘তসবিহ পড়তে’ বলেছিল পুলিশ।
পাঁচদিন পর বালুচাপা দেয়া অবস্থায় শিশুদের মৃতদেহ উদ্ধার হলে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। তাদের দাবি, পুলিশ তৎপর হলে শিশুদের জীবিত উদ্ধার করা যেতো।
অভিভাবকদের এ অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে পুলিশ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু ওই কমিটির বিরুদ্ধেও গাফিলতির অভিযোগ ওঠেছে।
পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বললেও মঙ্গলবার প্রতিবেদন জমা দেয়ার দিন কমিটি কেবল কাজই শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে তদন্ত দলের প্রধান হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি যুগান্তরকে জানান, তদন্ত চলছে, দ্রুত প্রতিবেদন দেয়া হবে।
পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র যুগান্তরকে বলেন, অ্যাকশন হলেই জানতে পারবেন। এর বেশি কোনো কথা বলতে তিনি রাজি হননি।
জানা গেছে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাহুবলের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার দুই চাচাতো ভাই আবদুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার ছেলে মনির মিয়া (৭) এবং তাদের আত্মীয় আবদুল কাদিরের ছেলে ইসমাঈল হোসেন (১০) নিখোঁজ হয়।
ওইদিনই বাহুবল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যান শিশু তাজেল মিয়ার বাবা আবদুল আজিজ। কিন্তু থানার ওসি (তদন্ত) আবদুর রহমান জিডি নেননি।
পরদিন আরেক শিশু জাকারিয়া শুভর বাবা ওয়াহিদ মিয়া জিডি করলেও বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়নি।
এদিকে বাহুবল থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নিখোঁজ শিশুদের অভিভাবকদের বলা হয়, বাড়ি গিয়ে ‘তসবিহ পড়তে’, ‘মেলায় গিয়ে খোঁজ নিতে’।
নিহত শিশুদের পরিবারের এমন অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল কি-না তা তদন্তে ১৮ ফেব্রুয়ারি ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে কমিটি সদস্য করা হয় হবিগঞ্জ ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় এবং হবিগঞ্জ কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক কাজী কামাল উদ্দিনকে। তাদেরকে ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
সোমবার এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জানান, তিনি চিঠি পাননি। মঙ্গলবার তিনি বলেন, তদন্ত চলছে। দ্রুত রিপোর্ট দেয়া হবে।
Leave a Reply