বগুড়ার নন্দীগ্রামে ষোড়শী নারী ও স্বর্ণের পুতুলের প্রলোভন দেখিয়ে মানিক (৩৬) নামে এক দুবাই প্রবাসীকে অপহরণ করে লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
সোমবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার সংসারদীঘি গ্রামের একটি ঘর থেকে পুলিশ ওই অপহৃতকে উদ্ধার করেছে। অপহরণকারী চক্রের লিডার এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভিকটিমের ভাই থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
বিকালে গ্রেফতারকৃতদের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড চাওয়া হলে বিচারক ৯ মার্চ শুনানির দিন ধার্য করেন।
গ্রেফতার অপহরণকারীরা হলো- নন্দীগ্রাম উপজেলার পাঠান মির্জাপুর গ্রামের আবদুল ওয়াহাবের অষ্টম স্ত্রী অপহরণকারী চক্রের লিডার মিনা খাতুন (৩০), সদস্য একই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে ইয়াকুব আলী (৫০) ও ধনকুচা গ্রামের সেলিম হাসানের ছেলে মাসুদ (৪০)।
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান শামীম ইকবাল জানান, কাহালু উপজেলার হরিপুর শীতলাই গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে মানিক দুবাই প্রবাসী। তিনি সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন।
মিনা খাতুনের নিয়োজিত এক দালাল মানিকের মোবাইলফোন নম্বর সংগ্রহ করে। মিনা মোবাইলফোনে মানিকের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে এবং তাকে সুন্দরী ষোড়শী ভোগ ও কমদামে স্বর্ণের মূর্তি বিক্রির প্রলোভন দেয়।
গত রোববার বিকাল ৩টার দিকে মানিক নন্দীগ্রামের পাঠান মির্জাপুর গ্রামে মিনার বাড়িতে যান। এ সময় মিনা ও অন্য আসামিরা তাকে জানায়, নারী ও পুতুল শিবগঞ্জে আছে।
পরে মানিককে শিবগঞ্জের সংসারদীঘি গ্রামের একটি বাড়ির ঘরে নিয়ে আটকে রাখা হয়। এরপর ফোনে পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মানিক বাধ্য হয়ে তার চাচাতো ভাই দেলোয়ার হোসেনকে ফোন করলে তিনি ২০ হাজার টাকা বিকাশ করেন। এরপরও তাকে ছেড়ে না দিয়ে ৮০ হাজার টাকা পেতে চাপ সৃষ্টি করে।
এ নিয়ে দেলোয়ার হোসেন সোমবার সকালে নন্দীগ্রাম থানায় মামলা করেন। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও সোর্স নিয়োগ করে অবস্থান নিশ্চিত হবার পর সংসারদীঘি গ্রামে অভিযান চালানো হয় বলে ওসি জানান।
পুলিশ জানায়, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা ভিকটিম মানিককে ফেলে পালিয়ে যাচ্ছিল। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে একটি বাড়ি থেকে মানিককে উদ্ধার করা হয়।
মিনা খাতুন দালালদের মাধ্যমে ধনী ও প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। পরে ফোনে ওইসব ব্যক্তিদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। তাদের নারীর টোপ দিয়ে ডেকে নিয়ে টাকা ও অন্যান্য দাবি জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়।
দুইদিন আগেও মিনা এক ব্যক্তিকে নারী ও স্বর্ণের মূর্তির লোভ দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে ৬৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সম্মানের ভয়ে ওই ব্যক্তি আইনের আশ্রয় নেননি।
Leave a Reply