সবাই আমরা একরকম না সব মিলে তবুও এক/ আবার যখন ডাক এসেছে, পথেই নেমে দেখ/ ডাক এসেছে শুনো, একই সুরে আজ হাল তুলো/ একই পতাকা তোলো..
আউল বাউল বাংলার মানুষ বড় আবেগী। কেউ কবিতায়, কেউ গানে বা ছন্দে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে শুভকামনা জানিয়েছেন। নবউদ্যমে সামনের দিকে হেঁটে চলার অঙ্গীকার সে সব গল্প-গান আর কবিতায়। এলআরবি, চিরকুট, আসিফ আকবর, ইমরান, বাপ্পা মজুমদার, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, কণা ও ন্যান্সির মতো জনপ্রিয় শিল্পীরা গান গেয়েছেন বিশ্বকাপ উপলক্ষে। নাট্যব্যক্তিত্ব শিমূল ইউসুফ তার ফেসবুকে লিখেছেন-‘যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ
সোনার ছেলেরা, সবাই জেনো, তোমরা তাদের দান।’
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি পাল্টে নিয়েছেন ফেসবুকের দেয়াল। সেখানে এখন লাল-সবুজ জার্সির দামাল ছেলের দল। নায়করাজ রাজ্জাক অসুস্থতার তোয়াক্কা না করে হাতে তুলে নিয়েছেন রিমোট কন্ট্রোল। খেলা দেখতে দেখতে স্মৃতির পটে তার ভেসে উঠেছে শৈশবের সে দিনগুলো। মৌসুমী, ওমর সানি, ফেরদৌস, ইমন, আরিফিন শুভ, জাকিয়া বারী মম, বিদ্যা সিনহা মীম_ সবাই মেতেছেন খেলা নিয়ে। এরই মধ্যে নাটকের শুটিং বন্ধ করে নিজ দেশের খেলা দেখার ঘটনাও নাটকের সেটে। খেলাপাগলের নামে যুক্ত হয়ে গেছে শহীদুজ্জামান সেলিম, অনিমেষ আইচ, মৌসুমি হামিদ, মির সাবি্বর, নওশীন, হিল্লোল, রওনক হাসান, জ্যোতিকা জ্যোতিসহ অনেকের নাম। শুধু ছোটপর্দা, বড়পর্দা নয়, শাহবাগের মোড়ে উন্মুক্ত পর্দায় মহড়া শেষে খেলা দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
চার-ছক্কার সঙ্গে তাদের আনন্দধ্বনি ধ্বনিত হয় পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। গাজী টিভির ক্রিকেট ম্যানিয়া, ক্রিকেট এক্সট্র্রা এবং ক্রিকেট হাইলাইটস অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করে ক্রিকেটের সুসময়ের সাক্ষী হয়েছেন সামিয়া আফরিন, মারিয়া নূর এবং শ্রাবণ্য তৌহিদা।
সামিয়া আফরিন বলেন, ‘বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের নাড়ি-নক্ষত্র জানা থাকলেও অন্যান্য দেশের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে পড়াশোনা করতে হয়। দিনের অধিকাংশ সময় তাই তিন অনুষ্ঠান নিয়ে কেটে যায়। যে কারণে অন্যান্য কাজ নিয়ে ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অনুষ্ঠান, অফিস ও পরিকল্পনা নিয়েই দিন চলে যায়। তিনি জানান, এ বছর বাংলাদেশের জেতার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কারণ বাংলাদেশের খেলা এখন আত্মবিশ্লেষণের জায়গায় পেঁৗছে গেছে। এখন আমাদের ক্রিকেট নিয়ে নানাভাবে বিশ্লেষণ হয়, আলোচনা হয়।
ভালো খেলার কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।
জিটিভির তিনটি অনুষ্ঠান সময়ের কারণে মারিয়া ও শ্রাবণ্য তৌহিদার সঙ্গে ভাগাভাগি করে করছেন তিনি। পাশাপাশি নতুন যারা উপস্থাপনা করছেন, তাদের প্রস্তুত করার কাজটিও করছেন।
মারিয়া নূর এ মুহূর্তে ব্যস্ত উপস্থাপনা নিয়ে। ‘ক্রিকেট এক্সট্রা’র কল্যাণে খুব কাছ থেকে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন। তার মতে, খেলায় হারজিৎ থাকবেই। তেমনি ভালো সময়, খারাপ সময় থাকাটাও স্বাভাবিক। তবে এ মুহূর্তে বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো সময় পার করছে। সাকিব আল হাসান এবং মাশরাফির নেতৃত্বে তারা এখন একটি শক্তশালী অবস্থান ফিরিয়ে এনেছেন। এ সময়ে তাদের সঙ্গে থাকাটা নিজেকে সৌভাগ্য বলেই মনে করছেন তিনি।
তবে খেলা দেখার সময় তিনি সাধারণ মানুষের মতো খেলা উপভোগের চেষ্টা করেন। সচেতন থাকেন স্কোরবোর্ড ও খেলার নিয়ম-কানুন নিয়ে। অনেক সময় খেলা দেখার সময় ঠিক করে নেন, কোন কোন বিষয় তুলে ধরবেন সেদিনকার অনুষ্ঠানে। মারিয়ার বিশ্বাস, এবারের টি২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। তামিম, সাকিব, তাসকিন, মাশরাফি, সৌম্য সরকার, মাহমুদুল্লাহ, সাবি্বরদের হাত ধরে তারা পেঁৗছে যাব বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। তার একটাই চাওয়া, কাপটা যেন আমাদের হয়।
শ্রাবণ্য তৌহিদা ‘ক্রিকেট ম্যানিয়া’ অনুষ্ঠানে চুক্তিবদ্ধ হলেও বর্তমানে সময় সুবিধার কারণে দুটি অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করছেন। যে কারণে বল টু বল, উইকেট টু উইকেট খেলা দেখার চেষ্টা করেন তিনি। পাশাপাশি ইন্টারনেট, পেপার কাটিং তো আছেই। তার মতে, এ অনুষ্ঠানগুলো বিশ্লেষণধর্মী। তাই দর্শকের কথা মাথায় রেখে সঠিক বিশ্লেষণটা জরুরি। অনেক সময়, নেতিবাচক প্রসঙ্গ চলে এলেও কীভাবে তা ইতিবাচকভাবে তুলে ধরা যায়, তা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তাই তথ্য জানার পাশাপাশি উপস্থিত বুদ্ধি থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশের সবার খেলা তার প্রিয় হলেও দু’জন খেলোয়াড়ের প্রতি তিনি সম্মান প্রদর্শন করতে চান ভিন্ন কারণে। তার একজন হলো সাকিব আল হাসান এবং অন্যজন ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তারমতে, সাকিব আল হাসান ক্রিকেটে যা দিয়েছে, তা ইতিহাস হয়ে থাকবে। অন্যদিকে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা শরীরে সাতটি সার্জারি নিয়েও কীভাবে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন- একজন ডাক্তার হিসেবে শ্রাবণ্যের চোখে তা এক বড় বিস্ময়! তার মতে, এ বিষয়টি মোটেও সাধারণ নয়। কেবল মনোবল আর বিশ্বাসের কারণেই এ অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তিনি।
তাই বাংলাদেশ নিয়ে সব সময় আশাবাদী তিনি। শ্রাবণ্য জানান, এ অনুষ্ঠানের কারণে খুব অল্প সময়ে দর্শকদের মধ্যে নিজের একটি অবস্থান তৈরি করতে পেরেছেন তিনি। তবে এর আগে এনটিভি, আরটিভি, চ্যানেল নাইন, বৈশাখী ও দেশটিভিতেও উপস্থাপনার কারণেই তার আজকের অবস্থান। এর মধ্যে রেদওয়ান রনির ‘আঙটি’ নাটকের পাশাপাশি নতুন তিনটি বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন শ্রাবণ্য। শিগগির বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচার শুরু হবে সবগুলোর। শ্রাবণ্য জানান, তিনি সবসময় একসঙ্গে একাধিক কাজ করে এসেছেন। এ মুহূর্তে ডাক্তারির পাশাপাশি নিয়মিত কাজ করছেন ছোটপর্দার বিভিন্ন মাধ্যমে।
Leave a Reply