আঙুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক) পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের সময় এক মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
শনিবার বিকালে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের মতামতকে সব সময় গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। এখনও দিচ্ছে। জনস্বার্থে আঙুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ৩১ মে রাত ১২টা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তারানা হালিম বলেন, ওইদিন রাত ১২টার পর থেকে সব অনিবন্ধিত সিম একেবারে বন্ধ করে দেয়া হবে। বন্ধ করে দেয়া সেই সিম ১৫ মাস পর্যন্ত বিক্রি করা হবে না। তবে প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য নয়।
আজ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত যে সব সিম নিবন্ধিত হয়নি সতর্ক বার্তা হিসেবে সেসব সিম ১ মে থেকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে তিন ঘণ্টা বন্ধ রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী এই সময়সীমার মধ্যে সব গ্রাহককে তাদের অনিবন্ধিত সিম নিবন্ধন করে নেয়ারও আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে বর্তমানে যে গতিতে আঙুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের কাজ চলছে, তা যেন কোনোভাবেই শ্লথ না হয়, মোবাইল অপারেটরগুলোর প্রতি তাগিদ দেন তিনি।
তারানা হালিম বলেন, দেশের ১৫ লক্ষাধিক প্রতিবন্ধী রয়েছে। তারা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের জন্যে গেলেও তাদের সহযোগিতা করা হয়নি। ৩১ মে পর্যন্ত প্রত্যেক শনিবার তাদের জন্যে অফিস খোলা থাকবে। তাদের সিম নিবন্ধন করতে সার্বক্ষণিক দু’জন করে লোক থাকবেন। তাদের প্রতি অবশ্যই ভাল আচরণ করতে হবে।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ৯ লাখ সিম পুনঃনিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। সিম পুনঃনিবন্ধন সম্পন্ন হলে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। এর মাধ্যমে সরকারের প্রতিদিন আয় হবে ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা।
সিম নিবন্ধন কার্যক্রমের মেয়াদ বাড়ানোর পর তিন ঘণ্টা করে সিম বন্ধ রাখার যৌক্তিকতা জানতে চাইলে তারানা হালিম বলেন, ‘এতদিন যারা প্রচণ্ড দাবদাহ সহ্য করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পুনঃনিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন, তারা যাতে মানসিকভাবে কষ্ট না পান এ জন্যই এ ব্যবস্থা। তা ছাড়া আমরা চাই সবাই যাতে পুনঃনিবন্ধনের আওতায় আসে।’
উল্লেখ্য, গত ১৬ ডিসেম্বর বিটিআরসির কার্যালয়ে সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তারানা হালিম। এরপর পরীক্ষামূলকভাবে এ পদ্ধতিতে নিবন্ধন শুরু হয় গত ১ নভেম্বর।
সিম নিবন্ধনের সময় বেঁধে দেয়া হয় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এরপর সিম নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানো হবে না। ১ মে থেকে অনিবন্ধিত সিম ৩ ঘণ্টা করে বন্ধ করে দেয়া হবে।
এরই মধ্যে গত ১৪ মার্চ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
গত ১২ এপ্রিল ওই রুল নিষ্পত্তি করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম নিবন্ধনকে বৈধ ঘোষণা করেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
তবে এই সময়সীমার মধ্যে অনেক গ্রাহক তাদের সিম নিবন্ধন করতে পারেনি জানিয়ে বিটিআরসিতে মোবাইল অপরারেটরগুলো সময় বাড়ানোর আবেদন করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এ ঘোষণা দিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। –
Leave a Reply