গাজীপুরের জনপ্রিয় শ্রমিক নেতা, সাবেক সাংসদ, শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যার দায়ে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ ছয়জনের ফাঁসি বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া সাত জনের যাবজ্জীবন কারদণ্ড এবং ১৩ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যার ঘটনায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিল মামলার এ রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকা এই ছয় আসামি হলেন নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দীপু, মাহবুবুর রহমান মাহবুব, শহীদুল ইসলাম শিপু, হাফিজ ওরফে কানা হাফিজ ও সোহাগ ওরফে সরু।
উচ্চ আদালতে ব্যতিক্রম হিসেবে এ মামলার রায় দেওয়া হয় বাংলায়। বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের লেখা রায়ে একমত পোষণ করেছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রোনা নাহরীন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মনজু নাজনিন।
আসামিদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ কয়েকজন আইনজীবী।
এর আগে গত ৮ জুন চূড়ান্ত শুনানি শেষে ১৫ জুন রায়ের এ দিন ধার্য করা হয়।
২০০৪ সালের ৭ মে একদল সন্ত্রাসী গাজীপুরের নোয়াগাঁও এম এ মজিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রকাশ্যে গুলি করে তাকে হত্যা করে। ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল বিএনপি নেতা নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডপ্রাপ্তরা আপিল উচ্চ আদালতে আপিল করে, যার ওপর শুনানি শুরু হয় চলতি বছর ২১ জানুয়ারি।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে দুই জন মারা গেছেন, ১৭ জন কারাগারে, বাকি ৯ জন পলাতক রয়েছে।
আহসান উল্লাহ মাস্টার গাজীপুর-২ আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সংসদ সদস্য, ১৯৯০ সালে গাজীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে পৌরসভা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদ সদস্য ছাড়াও জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
Leave a Reply