ইভটিজিং ও ছিনতাইরোধে এবার ছদ্মবেশে মাঠে নেমেছে নারী গোয়েন্দা পুলিশ। ঈদ বাজারে দিনরাত তারা মাঠে থাকবেন। ছদ্মবেশে ব্যস্ততম বিপণি বিতানে অবস্থান করে অপরাধীকে শনাক্ত করতে কাজ করবেন। তাদের সহযোগিতা করবেন পুলিশের অন্য সদস্যরা। পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন মার্কেটের নিরাপত্তারক্ষী ও আনসার সদস্যরাও তাদের সহযোগিতা করবেন। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি (পূর্ব) মাহাবুবে আলম বলেন, বিভিন্ন উৎসব-পার্বণে শপিংমল ও শৌখিন স্থানগুলোতে আমাদের চৌকস নারী গোয়েন্দারা মাঠে থাকেন। এতে ওই এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য ঠিকমতো পাওয়া যায়। দুর্বৃত্তরা ওই নারী সদস্যদের দেখে বুঝতেই পারেন না যে তিনি পুলিশের সদস্য। তিনি আরও জানান, ঈদ ও রোজা উপলক্ষে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ডিবি, এসবি, এনএসআই ও র্যাবের গোয়েন্দারা মাঠে কাজ করেন। তাদের মূলত সহযোগিতা করার জন্য নারী গোয়েন্দা সদস্যরা কাজ করবেন। প্রতিবারের মতো এবারও তাদের মাঠে নামানো হয়েছে। ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে অভিজাত শপিংমল ও ব্যস্ততম এলাকায় মানুষের ভিড় বাড়ে। বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ বাজার করতে আসেন। টাকার লেনদেন বাড়ে। ব্যস্ত হয়ে উঠে শপিংমলগুলো। তখন শপিংমল গুলোর ভেতরে ও বাইরে দুর্বৃত্তরা সক্রিয় থাকে। মার্কেটে আসা পুরুষ ও নারীদের বিভিন্ন হয়রানি করে। বিশেষ করে নারীরা ইভটিজিংয়ের শিকার হয়। কেউবা শপিংমলের বাইরে ছিনতাইয়ের শিকার হয়। উচ্ছৃঙ্খল বখাটেরা দলবেঁধে ঘুরে বেড়ায়। তারা নারীদের উদ্দেশ্য বিভিন্ন মন্তব্য ছুঁড়ে দেয়। এমন অপরাধীদের শনাক্ত ও ধরতে পুলিশের সদস্যদের পাশাপাশি নারী গোয়েন্দারা মাঠে কাজ করবেন। ইভটিজিং ও ছিনতাই রোধে ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই কৌশলের অংশ হিসাবে নারী গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছে। মার্কেটের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় প্রধান মনিটরে বসে পুলিশ পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবেন। ক্যামেরায় কোনো যুবককে সন্দেহ হলে তার পিছনে ওই নারী গোয়েন্দাদের লাগিয়ে দেয়া হবে। এমন ব্যবস্থা ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গেছে।
রাজধানীর কয়েকটি শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, উপচে পড়া ভিড়। ওই শপিংমলগুলোর নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা দর্শনার্থীদের তল্লাশি করে সেখানে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। আর বাহির হওয়ার সময় আলাদা একটি পথ দিয়ে বের হচ্ছেন। প্রত্যেকটি শপিংমলগুলোতে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখো গেছে। তবে শপিংমলগুলোর বিভিন্ন রাস্তার ফুটপাথে পাশে বিভিন্ন পণ্যের দোকান বসানোর কারণে ওই মার্কেটগুলোর সামনে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ওই ভিড় ঠেলে মার্কেটের মধ্যে প্রবেশ করতে নারীদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। বসুন্ধরা শপিংমলের মোস্তফা মার্কেটের বিক্রয়কর্মী সানজিদা বেগম জানান, ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা বাড়ে। পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে সবাই কেনাকাটা করতে আসেন। এ সময় নারীদের বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। অনেকেই মান সম্মানের ভয়ে কোনো কথা বলেন না। গাউসিয়া মার্কেটের আমেনা বিতানের মালিক শফিকুল ইসলাম জানান, রাজধানীর মধ্যে যতগুলো মার্কেট আছে তার মধ্যে বেশি ভিড় থাকে গাউসিয়া মার্কেটে। এখানে সুলভ মূল্যে ভালোমানের জিনিস পাওয়া যায়। ওই মার্কেটে নারীরা তুলনামূলকভাবে বেশি আসেন। কেউ একা আসেন। কেউ পরিবারের সঙ্গে আসেন। যারা একা আসেন তারা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় পুলিশ আগের চাইতে সতর্ক আছে।
Leave a Reply