নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় র্যাবের দুই সদস্যের সাক্ষ্যগ্রণ সম্পন্ন হয়েছে। এতে ওঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর বহু তথ্য-প্রমাণ।
সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত হাবিলদার নাজিম উদ্দিন ও সৈনিক মিলনের দেয়া এ সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন।
এ সময় গ্রেপ্তারকৃত নূর হোসেনসহ ২৩ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দুজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
আদালতে হাবিলদার নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনার সময়ে আমি আদমজী ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলাম। ঘটনার পর ক্যাম্প ইনচার্জ এমএম রানার নির্দেশে কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের প্রাইভেটকার গাজীপুর নিয়ে রেখে আসি।’
সৈনিক মিলন জানান, ‘ক্যাম্প ইনচার্জ এমএম রানার নির্দেশে টিম প্রস্তুত করে দেই। একইদিন ইমদাদুল হক ও পনেন্দ্র বালাকে দেখি আদমজী ক্যাম্পের এক পাশে বসে দড়ি পাকিয়ে বস্তায় ইট ভরছেন।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান এর সত্যতা নিশ্চিত করে যুগান্তরকে বলেন, তারা দুজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী দিয়েছেন। তাদের দেয়া সাক্ষীতে অপরাধ প্রমাণ করতে সহজ হবে।
আদালতের পিপি এড. ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, দুজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আগামী ১১ জুলাই পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
জানা গেছে, সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী হলেন নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের মেয়ে জামাতা বিজয় কুমার পাল ও অপর বাদী নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। দুটি মামলাতেই অভিন্ন সাক্ষী হলো ১২৭ জন করে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তদন্ত শেষে প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাত খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
এ মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছেন। আর চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে এখনও ১২ জন পলাতক রয়েছেন।
Leave a Reply