নিজের বাড়িতে ভাইয়ের গুলিতে নিহত হয়েছেন পাকিস্তানের বিতর্কিত মডেল কান্দিল বেলুচ। শনিবার পাকিস্তানের মুজফ্ফরবাদের গ্রিন টাউন এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানের দৈনিক ডনের অনলাইন ভার্সনে কান্দিলের নিহতের খবর প্রকাশ করা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন সময়ে নগ্ন ছবি এবং ভিডিও প্রকাশ করে বেশ আলোচনায় থাকতেন কান্দিল।
মুলতান পুলিশের ভাষ্য, কান্দিল বেলুচ তার ভাইয়ের বন্দুকের গুলিতে নিহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নগ্ন ছবি আপ করার কারণেই তাকে খুন করেছেন তার ভাই। বেশ কিছুদিন থেকেই এসব খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য কান্দিলকে তার ভাই হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
কান্দিলের আসল নাম ফাউজিয়া আজিম। কিন্তু তিনি কান্দিল বেলুচ নামেই নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিষ্ঠিত করেন।
পাক পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কান্দিল আগেই বহুবার খুনের হুমকি পেয়েছিলেন। নিরাপত্তার কারণেই তার বাড়ির ঠিকানা প্রকাশ্যে কখনও আনেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কান্দিলের পরিবারের এক সদস্য বলেছেন, কান্দিল মুসলিম পরিবারের মেয়ে। ওর ভাই অনেকদিন ধরেই ওকে মডেলিং ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু কান্দিল তা শোনেনি।
কান্দিলের মৃত্যুতে আরও একবার অনার কিলিংয়ের ঘটনা ঘটল বলেই মনে করছে পাক পুলিশ। দিন কয়েক আগেই এক সাক্ষাত্কারে কান্দিল বলেছিলেন, আমি এখানে নিরাপদে নেই। ঈদের পরই আমি বিদেশে সেটল করব।
তিন সপ্তাহ আগে ইসলামাবাদের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এক চিঠিতে নিজের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি করেছিলেন কান্দিল। মূলত তার পাসপোর্টের ছবি সামাজিক যোাগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই তিনি নিজেকে নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন।
এজন্য পাসপোর্ট অফিসের কর্তৃপক্ষসহ দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যক্তিদের দায়ি করেন কান্দিল। তিনি বলেছিলেন, কীভাবে রাষ্ট্রের সংরক্ষিত ডাটাবেজ থেকে এভাবে তথ্য চুরি হয়ে গেল।
তিনি বলেছিলেন, পাসপোর্টের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই মোবাইল ফোনে তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। সেজন্য তার বাড়িতে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদারের দাবি করেছিলেন এই মডেল। আর তিন সপ্তাহ পরেই খুন হলেন কান্দিল।
কিছুদিন আগেই প্রকাশ্যে আসে কান্দিলের বিয়ের খবরও। ১৭ বছর বয়সে হুসেইন নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কিন্তু দু’বছরের মধ্যে ছেলে নিয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। তার ডিভোর্স হয়ে যায়। বালুচ বলেছিলেন, আমার স্বামী আমাকে মারত। ছেলেকে বলতে দিত না যে, আমি ওর মা। আমাকে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়েছিল।
ডিভোর্সের পরই শুরু হয় কান্দিলের মডেলিংয়ের কেরিয়ার। কিন্তু বার বার বিতর্কে জড়ানোয় বাধা আসছিল পরিবারের মধ্যে থেকেই।
গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পাক পুলিশ।
Leave a Reply