শুক্রবার গভীর রাতে নিজের ভাইয়ের হাতে খুন হয়েছেন পাকিস্তানের বিতর্কিত মডেল কান্দিল বেলুচ। কান্দিল বেলুচ সব সময় বিতর্কিত মন্তব্য করে খবরের শিরোনাম হতেন। কখনও পাকিস্তান জিতলে নগ্ন হয়ে নাচের প্রমিস করেছেন। কখনও বিরাট কোহলির জন্য স্নান করতে করতে ‘লাভ’ মেসেজ দিয়েছেন। আবার কখনও বা ছোট পোশাক পরে নাচের জন্য তার ভিডিও ব্লক করে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।
পুলিশের দাবি, অনার কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন কান্দিল। প্রাথমিকভাবে পুলিশের সন্দেহ হয়, তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। কিন্তু ময়নাতদন্তকারী চিকিত্সকদের মতে, সম্ভবত শ্বাসরোধের আগে তাকে বিষাক্ত কিছু খাওয়ানো হয়েছিল।
এদিকে খুন হওয়ার দিনেও, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের একটি ছবি পোস্ট করে কান্দিল লিখেছিলেন, কত বার আমাকে টেনে নামানো হবে তাতে আমার কিচ্ছু আসে যায় না, আমি কিন্তু একজন যোদ্ধা এবং আমি উঠে দাঁড়াবোই।
গত ১৪ জুলাই কান্দিল পোস্ট করেছিলেন, একজন মেয়ে হিসেবে আমাদের নিজেদের হয়েই উঠে দাঁড়াতে হবে… মেয়ে হিসেবে আমাদের একজনের পাশে অন্যজনকে দাঁড়াতে হবে… মেয়ে হিসেবে আমাদের সুবিচারের জন্য লড়াই করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি আমি একজন আধুনিক সময়ের নারীবাদী। আমি সমান অধিকারে বিশ্বাস করি। মেয়েদের কেমন হওয়া উচিত এটা আমরা ঠিক করে দিতে পারি না। শুধু সমাজের কথা ভেবে নিজেদের পরিচয়ে তকমা লাগানোর কোনও প্রয়োজন আছে বলেও আমি মনে করি না। আমি শুধুমাত্র একজন মুক্ত চিন্তা এবং মুক্ত মনের নারী এবং আমি যেমন আমি তেমন থাকতেই ভালবাসি।
পাকিস্তানের রক্ষণশীল সমাজ বা পরিবারের মধ্যে থেকেও খুবই খোলামেলা এবং তোয়াক্কা না করা জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন কান্দিল। নিজের নগ্নতা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা করতেও পিছ পা ছিলেন না। যৌনতা বা নগ্নতা নিয়ে তার খোলামেলা কথাবার্তা নিয়ে বিতর্কেও পড়েছেন বারবার। কিন্তু নিজের অবস্থানে অটল থেকে গোটা ব্যাপারটাকে রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে একজন মেয়ে হিসেবে নিজের লড়াই বলেই দেখাতে চেয়েছেন।
কান্দিল বালুচ হত্যাকাণ্ডে তার ভাই মহম্মদ ওয়াসিম আজিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কান্দিলের বাবার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কান্দিলকে খুনের কথা স্বীকারও করেছে ওয়াসিম। তার দাবি, পারিবারিক ‘সম্মান’ রক্ষার জন্যই তিনি এই খুন করেছেন।
Leave a Reply