প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গুলশান ও শোলাকিয়ার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের মদতদাতাদেরও খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গুলশান ও শোলাকিয়ার ঘটনায় জড়িতদের পাশাপাশি পর্দার আড়ালে এর মদতদাতা, পরিকল্পনাকারী, প্রশিক্ষক এবং অর্থদাতাদেরও খুঁজে বের করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসের মদদদাতারা দেশের বা বিদেশের যেখানেরই হোক তাদেরকে খুঁজে বের করা অবশ্যই কর্তব্য। এ ব্যাপারে যেহেতু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন রয়েছে, তাদের খুঁজে বের করা খুব বেশি কঠিন হবে না। এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এদের ধরে উপযুক্ত শাস্তি দেয়া যাবে।’
এসব সন্ত্রাসী ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজন ওই দিনই মারা গেছে। বাকি কয়েকজনকে শনাক্ত করতে এবং ধরতে সক্ষম হয়েছি।’
তিনি বলেন, এ ছাড়া বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ও টেলিভিশনে কয়েকজন মানুষের ছবি দেখানো হচ্ছে। এদের কয়েকজন শনাক্ত হয়েছে। বাকিদের সনাক্ত করতে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে তথ্য দিন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ক্ষমতা গ্রহণের সময় দেশে অর্থনৈতিক মন্দা ছিল। সেই মন্দা থাকার পরও বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বাস, রেলসহ অন্যান্য যানবাহনে মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এসব কিছু করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বের কাছে ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। তবে সরকারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ফলে অতি অল্প সময়ের মধ্যে এই অবস্থার মোকাবেলা করে সরকার বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সক্ষম হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি গুলশানে সংঘটিত ঘটনার পর বিদেশী রাষ্ট্রের বন্ধুরা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং তারা বাংলাদেশের পাশে আছে ও এধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় সবসময় তারা পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা বিশ্বব্যাপী ঘটছে। বাংলাদেশে যারা এসব কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে তারা সত্যিকারভাবে এদেশের উন্নতি অগ্রগতি চায় না। দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না বলেই তারা এ ধরনের অমানবিক ও কাপুরুষোচিত ঘটনা তারা ঘটিয়েছে যা বাংলাদেশের জন্য কল্পনাতীত ঘটনা।’
তিনি বলেন, ‘গুলশানের ঘটনায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে আমাদের বিনিয়োগকারীরা রয়েছেন। মেট্রোরেলের পরামর্শক এখানে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এদেশে ৩৫ বছর ধরে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি করে ব্যবসা করছেন এমন একজন ইতালীয়ান ভদ্র মহিলা নিহত হয়েছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ধরনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এখানে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনা আমাদের জন্য অতন্ত দুঃখের এবং কষ্টের। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’
Leave a Reply