জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। টলিউডে পা রেখেই নিজের জায়গা করে নিয়েছেন এই অভিনেত্রী। দুই বাংলাতেই রয়েছে তার জনপ্রিয়তা। এ পর্যন্ত বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয় করেও তুমুল সমালোচিত হয়েছেন জয়া।
ভারতের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সন্ত্রাস বনাম ইসলাম, ক্যারিয়ার, অভিনয়সহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।
সাম্প্রতিক সন্ত্রাস ও জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে জয়া আহসান বলেন, ওরা ইসলামকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে৷ ইসলামের কদর্যতা দেখাচ্ছে! যেটা ওরা বলছে, যেটা করছে, সেটা তো ইসলাম নয়৷ এখানে ইসলামকে বিকৃত করা হচ্ছে৷ কিন্তু যথার্থ যে ইসলাম, সেটা দিয়েই প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়৷ ইসলাম অদ্ভূত সুন্দর একটা ধর্ম৷ আমাদের মতো দেশে মানুষের ধর্মবিশ্বাসের প্রয়োজন রয়েছে৷ কিন্তু এই কদর্যতা ইসলাম নয়৷ যথার্থ ইসলাম বিপরীত কথা বলে৷ ইসলামের সবচেয়ে বড় শক্তি, মানুষের মধ্যে কোনও ক্লাসিফিকেশন নেই৷ মসজিদে একজন আমির আর গরিব পাশাপাশি বসে৷ আমাদের ধর্মে একই থালা থেকে ভাত খাওয়ার উদাহরণ রয়েছে৷ ইসলামের মূল শক্তি কিন্তু সেই জায়গাতেই৷ আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে সকলে এক৷ একজন বাচ্চা বা ভিখিরির কোনও ফারাক নেই৷ ইসলামের যে সারমর্ম, সেটাই নতুন প্রজন্মকে বোঝানো দরকার৷
তিনি বলেন, আমি অবশ্যই বিলিভার৷ তবে এক্সট্রিমিস্ট নই৷ নমাজ সবগুলো পড়তে পারি না৷ কিন্তু চেষ্টা করি৷ নমাজ ইজ আ কাইন্ড অফ প্রপার মেডিটেশন৷ ওর চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না৷ মন থেকে চাই পাঁচ ওয়াক্তের নমাজ পড়তে৷ আসলে বাংলাদেশ এমন একটা জায়গা, সেখানে এমন চিত্রও দেখলাম, ইদের জামাত হচ্ছে, ৪০ জন হিন্দুধর্মের ইয়ং ছেলে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে, মুসলিমরা নমাজ পড়ছে৷ এরচেয়ে সুন্দর দৃশ্য আর কিছু হতে পারে না৷ আমরা কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই সেক্যুলারিজম-এ বিশ্বাস করি৷ বিদেশিদের ভগবানের চেয়েও বেশি মনে করি৷ কিছু জিনিস ঘটছে…সেটা দুর্ভাগ্য৷ কিন্তু বাংলাদেশে শাহবাগ আন্দোলনও হয়েছে৷ যে উদাহরণ পৃথিবীর অনেক জায়গাতেই নেই!
নিজের অভিনয় নিয়ে জয়া আহসান বলেন, অভিনয় করার তো কোনও বয়স হয় না৷ যারা বাণিজ্যিক ছবির নায়িকা হতে চান, তাদের হয়তো বয়স কম হলে ভালো৷ কিন্তু আমি তো নায়িকা হতে চাই না! নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করতে হলে, সেটা করে দেব৷ কিছুদিন আগেই বাংলাদেশে একেবারে ‘মশালা’ একটা ছবিতে অভিনয় করেছি৷ আমি যখন একেবারে নতুন তখনও বাবলি-বাবলি ইমেজ ভেঙে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে চেয়েছি৷ আমি যেরকম, তারচেয়ে অনেকটা অন্যরকম চরিত্র করতে আমার ভালো লাগে৷ একটাই লিমিটেশন৷ আমাকে সবসময় মহিলার চরিত্রে অভিনয় করতে হয়৷ আমার তো এখন পুরুষ চরিত্র করতে ইচ্ছে করে৷ কোনও পরিচালক আমায় পুরুষ চরিত্র অফার করলে থ্রিলড হয়ে যাব!
‘রাজকাহিনী’ ছবিতে বেশ কিছু সাহসী দৃশ্য নিয়ে বিতর্কের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভীষণ সমালোচনা করেছিল একাংশ৷ আসলে বাংলাদেশের মানুষরা এক্সট্রিমিস্ট, যে ভালোবাসে ভীষণ ভালোবাসে, আবার কেউ সমালোচনা করলে সাংঘাতিক সমালোচনা করে! কিন্তু আমি যেহেতুু অভিনেতা আলোচনা-সমালোচনা দু’টোই নিতে চাই৷ কয়েকটা থ্রেট মেসেজ পেয়েছিলাম৷ আমাকে যদি মেরে দেয়, এমন ভাবনা যে আসেনি তা নয়৷ কিন্তু আমি খুব স্পোর্টিংলি নিয়েছি বিষয়টা৷ আসলে আমাকে তো আমার কাজ দিয়েই প্রতিবাদ করতে হবে৷ আমি তো আর কিছু দিয়ে প্রতিবাদ করতে পারব না৷ কাজই আমার সর্বোচ্চ শক্তি!
Leave a Reply