রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় যৌথ অভিযানে নিহত নয় জঙ্গির মধ্যে তিনজনের পরিচয় মিলেছে।
বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), নিহতের সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ এবং স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
তিন ‘জঙ্গির’ একজন সেজাদ রউফ অর্ক। সে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর ছাত্র ছিল। গুলশান হামলায় নিহত জঙ্গি নিবরাসের বন্ধু ছিল অর্ক।
অর্কের বাবার নাম তৌহিদ রউফ। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সি ব্লকে ৩০৪ নম্বর বাড়িতে তার পরিবারের বাস। তাদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে।
র্যাবের হালনাগাদকৃত ৬৮ জনের নিখোঁজ তালিকায় অর্কের নাম ২ নম্বরে ছিল। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি অর্ক নিখোঁজ রয়েছে উল্লেখ করে ভাটারা থানায় জিডি করা হয় বলে জানান ডিএমপির উপ-কমিশনার (ডিসি, মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান।
নিহত আরেক জঙ্গির নাম জুবায়ের হাসান (২০)। সে নোয়াখালী সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। তার বাবার নাম আবদুল কাইয়ুম।
জোবায়ের নিখোঁজ ছিল বলে তার বাবা ১২ জুলাই সুধারাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। নোয়াখালী পুলিশের নিখোঁজ তালিকায় জোবায়েরের নাম এক নম্বরে ছিল।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন এবং জোবায়েরের স্বজনরা নিহতের ছবি শনাক্ত করেছেন। নিহত জঙ্গিদের একজনের ছবির সঙ্গে জোবায়েরের চেহারার প্রায় ৮০ ভাগ মিল রয়েছে বলে তারা জানান।
জোবায়েরের স্থায়ী ঠিকানা সদর উপজেলার কাদিরহানি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পশ্চিম মাইজদী গ্রামে। তবে তার পরিবার নোয়াখালী জেলা হাসপাতালের অদূরে বাসায় থাকে।
নিহত তৃতীয় জঙ্গি চট্টগ্রামের আনোয়ারার সাব্বিরুল হক কনিক (২২) বলে ধারণা করছেন তার স্বজন ও স্থানীয় পুলিশ।
নিহত সাব্বির উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক চৌধুরী রাশেদের ছেলে।
সাব্বির ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি-চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) ইকনোমিক অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্র ছিল। গোল্ডেন জিপিএ পেয়ে সরকারি মুসলিম হাইস্কুল থেকে ২০১০ সালে এসএসসি এবং ২০১২ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে সে।
সাব্বিরের পরিবার চট্টগ্রাম শহরে বাস করে। তার বাবা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে চাকরি করেন। তাকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে।
জানা গেছে, তাবলিগের কথা বলে মাঝে মাঝে সপ্তাহ-১০ দিনের জন্য উধাও হয়ে যেত সাব্বির। বছরখানেক আগে একবার তিন মাসের জন্য নিরুদ্দেশ থাকার পর বাসায় ফিরে আসে।
সর্বশেষ ছয় মাস আগে রাউজানে এক বিয়েতে যাওয়ার কথা বলে বাবার কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে বের হয় সাব্বির। সেই থেকে তার কোনো খোঁজ নেই।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কে তাজ মঞ্জিল নামের ছয় তলা একটি ভবনের পঞ্চম তলায় অভিযানে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ।
পরে মঙ্গলবার ভোরে সেখানে সোয়াটের বিশেষ অভিযানে নিহত হয় সন্দেহভাজন নয় জঙ্গি। উদ্ধার করা হয় অস্ত্র ও বিস্ফোরক।
Leave a Reply