‘সাগিনা মাহাতো’ ছবির কথা। ওই ছবিতে সায়রা বানুর বিপরীতে চিন্ময় রায়কে সিলেক্ট করেছিলেন তপন সিনহা। কিন্তু, সায়রাকে আগে থেকে সে কথা বলা হয়নি। কলকাতায় শুটিং করতে আসার আগে পর্যন্ত তিনি জানতেন না তাঁর বিপরীতে কে। হাসতে হাসতে গল্প করছিলেন চিন্ময় রায়।
সাগিনা মাহাতো ছবির সেট পড়েছিল কলকাতায়। শুটিংয়ের ডেট অনুযায়ী সায়রা এলেন কলকাতায়। এমন নামি, সুন্দরী হিরোইন, বম্বে থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে। বিপরীতে উত্তম, সৌমিত্র থাকবেন, এ রকম ধারণা থাকে সবার। নিদেনপক্ষে শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় বা সমিত ভঞ্জের কেউ একজন। কিন্তু পরিচালক নাম ঘোষণা করলেন চিন্ময় রায়ের।
তখনও চিন্ময়-সায়রা মুখোমুখি হননি। যখন দেখা হলো, সায়রার চোখ তো ছানাবড়া। বলেই ফেললেন, ইয়ে মেরা হাজব্যান্ড? তারপর প্রায় অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার জোগাড়। মাথা ঘুরে পড়লেন টেবিলে।
সবাই মিলে দৌড়দৌড়ি। চোখে মুখে জলের ছিটে দিয়ে জ্ঞান ফেরাতে হলো। জ্ঞান ফিরলে তিনি বললেন, আমি এর সঙ্গে অভিনয় করতে পারব না। মুডই পাব না। এ কথা শুনে স্বাভাবিকভাবেই খারাপ লেগেছিল চিন্ময় দা’র। তা তো লাগবেই। সেটাই স্বাভাবিক। খারাপ লেগেছিল এ কথা ভেবে যে গুণের বিচার কেউ করে না। রূপই মানুষ দেখে। তপন সিনহা তো আর এমনি এমনি তাঁকে নির্বাচন করেননি। কিন্তু…। যাই হোক। নিজের মনকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, বিদেশে পড়াশোনা করেছেন। বম্বেতে থাকেন। বলিউডের টপ হিরোইন। এটুকু তো বলতেই পারেন।
সেই খারাপ লাগা নিয়েই সেদিন রিহার্সাল শুরু করলেন চিন্ময় রায়। পরিচালক তপন সিনহার কছেও করলেন, নিজে নিজেও করলেন। তারপর এলো শটের সময়। শট তো হলো। সায়রার সঙ্গেই হলো। শটের শেষে তপনবাবু চিন্ময়দাকে বললেন, কাট। ভালো শট হয়েছে। চিন্ময়দারও মনে হয়েছিল শটটা ভালোই দিয়েছেন তিনি। আর সায়রা?
শটের পর বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন। দেখলেন, সায়রা বানু ফ্লোর থেকে বেরিয়ে তাঁর দিকেই এগিয়ে আসছেন। এসে তাঁরই সামনে দাঁড়ালেন। হাত বাড়িয়ে বললেন, ”হায় চিনু। ইউ আর হ্যান্ডসাম।” চিনুদা’র রি-অ্যাকশন- সেদিন তো আমিই অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম।
Leave a Reply