সোমবার, ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, ২রা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
বন্যায় স্বাস্থ্য সমস্যা: করণীয় Reviewed by Momizat on . বন্যায় স্বাস্থ্য সমস্যা: করণীয় বন্যা নিয়ে অনেক উপকথা রচিত হলেও বন্যা প্রকৃতপক্ষে প্রাকৃতিক এক বিপর্যয়। বন্যার দূষিত পানি মানুষের জীবন যাত্রাকে বিপন্ন করে তোলে। বন্যায় স্বাস্থ্য সমস্যা: করণীয় বন্যা নিয়ে অনেক উপকথা রচিত হলেও বন্যা প্রকৃতপক্ষে প্রাকৃতিক এক বিপর্যয়। বন্যার দূষিত পানি মানুষের জীবন যাত্রাকে বিপন্ন করে তোলে। Rating: 0
You Are Here: Home » ফিচার » বন্যায় স্বাস্থ্য সমস্যা: করণীয়

বন্যায় স্বাস্থ্য সমস্যা: করণীয়

বন্যায় স্বাস্থ্য সমস্যা: করণীয়

cb431ead4748742c7eb240c38f8a6a64-5d3401ed9dfe6

বন্যা নিয়ে অনেক উপকথা রচিত হলেও বন্যা প্রকৃতপক্ষে প্রাকৃতিক এক বিপর্যয়। বন্যার দূষিত পানি মানুষের জীবন যাত্রাকে বিপন্ন করে তোলে। বন্যায় সংক্রামক ব্যাধির বিস্তার বেড়ে যায়। প্রাপ্ত বয়স্কদের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় অল্পবয়সীরা। বিশুদ্ধ পানির অভাবে দেখা দেয় নানা সমস্যা। ডায়রিয়া, কলেরা, রিক্ত আমাশয়, টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড, ভাইরাল হেপাটাইটিস, পেটের পীড়া, কৃমির সংক্রমণ, চর্মরোগ, চোখের অসুখ প্রভৃতি সমস্যা মহামারী হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে কারণীয় কী।

যেহেতু বন্যায় পানির উত্স সংক্রমিত হয়ে যায়, সুতরাং পানি ভালো মতো ফুটিয়ে পান করতে হবে। টিউবওয়েলের পানি এক ঘন্টা চেপে ফেলানোর পর তা সংগ্রহ করতে হবে। তবে টিউবওয়েলের পানিও ফুটিয়ে নেয়াটা নিরাপদ। পানি ফুটানোর ব্যবস্থা না থাকলে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করতে হবে।

এক লিটার পানিতে চার মিগ্রা হ্যালোজেন ট্যাবলেট আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা রাখলে পানি বিশুদ্ধ হবে। তবে এতে অন্যান্য জীবাণু মরলেও ভাইরাস জাতীয় জীবাণু মরে না। একমাত্র ফুটানোর ফলে ভাইরাস জীবাণু ধ্বংস হয়। অনেকে ফিটকারি ব্যবহার করতে আগ্রহী, কিন্তু ফিটকারিতে পানি জীবানুমুক্ত হয় না। পানি বিশুদ্ধ করার জন্য বাসার পানির ট্যাঙ্কে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা চলে। প্রতি এক হাজার লিটার পানিতে আড়াই গ্রাম ব্লিচিং পাউডার এক ঘন্টা রাখলে পানি বিশুদ্ধ হবে। এক্ষেত্রেও ভাইরাস জীবাণু ধ্বংস হবে না।

বন্যার পানিতে হাঁটা কিংবা পানি শরীরে লাগানো স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। বন্যার পানিতে গোসল করা, কাপড়-চোপড় ধোয়া, থালাবাসন পরিষ্কার করা চলবে না। শিশু-কিশোরদের বন্যার পানি থেকে দূরে রাখতে হবে। বন্যায় রাস্তাঘাটে পানি ঢুকে যায়। এসব জায়গায়খেলাধূলা করা যাবে না। কেননা বন্যার পানি শরীরে লেগে শিশু-কিশোরদের চর্মরোগ কিংবা চক্ষুরোগ হতে পারে। তাই যতটা সম্ভব বন্যার পানি এড়িয়ে চলতে হবে। একজনের গামছা বা তোয়ালে আরেকজন ব্যবহার করা যাবেনা।

ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলেই পরিমাণ মতো খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। দুই বছরের কম শিশুকে প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ১০-২০ চা চামচ খাবার স্যালাইন দিতে হবে। দুই থেকে ১০ বছরের শিশুকে দিতে হবে ২০ থেকে ২৪ চা চামচ। ১০ বছরের বেশি শিশুকে দিতে হবে যতটা বেশি দেয়া যায়। খাবার স্যালাইন বা ওআরএস না থাকলে বিকল্প হিসেবে বাড়িতে প্রস্তুতকৃত লবণ-গুড়ের শরবত খাওয়াতে হবে। এর সাথে ভাতের মাড়, চিঁড়ার পানি, ডাবের পানি খাওয়ানো যেতে পারে। প্রত্যেক শিশুকে এ সময় চিকিত্সকের পরামর্শ মতো ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যেতে পারে। যদি পাতলা পায়খানা ও বমির মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে কাছের স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা চিকিত্সকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। কারণ এ ক্ষেত্রে রোগীর শিরাপথে স্যালাইন ও অন্যান্য ওষুধের প্রয়োজন পড়ে।

খাবার গ্রহণে সতর্ক হতে হবে। বাসি, পঁচা খাবার খাওয়া যাবেনা। রাস্তার পাশ থেকে ফুচকা বা চটপটি খাওয়া একেবারেই বন্ধ করতে হবে। এ সময় খিচুড়ি খাওয়াটা স্বাস্থ্যোপযোগী। খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

মল ত্যাগের ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেখানে সেখানে মল ত্যাগ করার ফলে কৃমির সংক্রমণ বেড়ে যায়। একটি নির্দিষ্ট স্থানে মল ত্যাগ করতে হবে এবং মল ত্যাগের সাবান বা ছাই দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। মল ত্যাগের সময় কখনো খালি পায়ে থাকা চলবে না। কেননা বক্রকৃমির জীবাণু সর্বদা খালি পায়ের পাতার ভেতর দিয়ে শরীরে সংক্রমিত হয়। এ সময় বাসার সবাইকে এক ডোজ কৃমির ওষুধ খেতে হবে। তবে দু’বছর বয়সের নিচে কাউকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো নিরাপদ নয়।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক

অর্থোপেডিকস ও ট্রমা বিভাগ

ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।

চেম্বার: পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি. ২, ইংলিশ রোড, ঢাকা
সূত্র-ইত্তেফাক

এ সংবাদটি এ পর্যন্ত 824 জন পাঠক পড়েছেন

About The Author

Number of Entries : 4058

Leave a Comment

সম্পাদক ও প্রকাশক মো: ইকবাল হোসেন
অফিস: ৯ নং সুরমা মার্কেট,৩য় তলা সিলেট।
ইমেইল-dailychironton@gmail.com
ওয়েব-www.dailychironton.com
মোবাইল-০১৭১৬-৯৬৯৯৭৮

© 2015 Powered By dailychironton.Designed by M.A.Malek

Shares
Scroll to top