পদ্মাসেতু প্রকল্পে ঋণ দিতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক যে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল তার কোনো প্রমাণ পায়নি কানাডার আদালত। তাই এই দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন অভিযুক্ত তিন ব্যক্তি।
তারা হলেন, এসএনসি-লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী ভূঁইয়া।
কানাডিয়ান সংবাদপত্র দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল শুক্রবার জানায়, পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের কোনো প্রমাণ মেলেনি। তাই এই মামলায় বিবাদী সাবেক সিএনএস কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দিয়েছেন কানাডায় অন্টারিওর আদালত।
আদালতের এ রায়টি হয় গত জানুয়ারিতে। তবে শুক্রবারই তা প্রকাশিত হয়েছে।
এসএনসি লাভানিল অফিস
পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ২০১৩ সালে পুরো প্রকল্প থেকে ১২০ কোটি ডলারের ঋণ প্রত্যাহার করেছিল বিশ্বব্যাংক। বৃহৎ এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের নেতৃত্বে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি) ও জাপানি সহযোগী সংস্থা জাইকাও অর্থায়নে রাজি হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রত্যাহারের ফলে তারাও সরে আসে।
অন্টারিও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ইয়ান নরডেইমার আদেশে বলেন, ফোনে আড়ি পেতে সংগ্রহ করা যে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মামলা এবং তথ্য সাজানো, তা অনুমানভিত্তিক, বানানো গল্প ও গুজবভিত্তিক।
প্রকল্পের কাজ তদারকির পাঁচ কোটি ডলারের কাজ পেতে এসএনসি-লাভালিনের কর্মীরা ২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ যোগাড়ে ফোনে আড়ি পাতা তথ্য (ওয়্যার ট্যাপস) ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ২০১১ সালে তিনটি আবেদন করে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি)।
তবে আড়ি পেতে সংগ্রহ করা তথ্য যে ভিত্তিহীন তা প্রমাণিত হলো।
দুর্নীতির ওই ষড়যন্ত্রে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পদত্যাগে বাধ্য হন সেই সময়ের যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। অভিযোগ ছিল সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধেও। তবে তাদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে সেসময় জানানো হয়।
বর্তমানে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু তৈরি করছে বাংলাদেশ, সঙ্গে আছে চীন। ২০১৮ সালের মধ্যে এর নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে সেতুর ৩৯ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পুরোপুরি শেষ দুই ধারের সংযোগ সড়কের কাজও।
Leave a Reply