পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের সঙ্গে যারা সুর মিলিয়েছিল তাদের এখন সরকারের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। এ প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ কানাডার আদালতেও নাকচ হওয়ার পর ফেসবুকে লেখা এক প্রতিক্রিয়ায় এ মত প্রকাশ করেন তিনি।
ফেসবুকে দেওয়া এক স্টেটাসে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা জয় লিখেছেন, ‘বিশ্বব্যাংক এ মিথ্যা তৈরি করেছে। পুরো উপাখ্যান চলাকালে আমি তাদের এসব প্রমাণাদি দেখেছি। এতে সুনির্দিষ্ট-বিস্তারিত কিছু নেই, যা সুস্পষ্টভাবেই বানানো। ‘ তিনি লিখেছেন, ‘রয়েছে কেবল একটি বেনামি সূত্র, যা এমনকি কানাডার আদালতের কাছেও প্রকাশ করা হয়নি। সুতরাং তারা অভিযোগ দায়ের করেছে, কিন্তু দাবির পক্ষে প্রমাণ দিতে অস্বীকার করেছে। আমার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সুনামহানি করতে বিশ্বব্যাংক এ ষড়যন্ত্র করেছে। ‘
এর আগে বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন জানিয়েছিল। তবে প্রকল্পে কানাডীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের একটি ষড়যন্ত্রের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে মামলা করেছিল দুদক। তার পাঁচ বছর পর শুক্রবার কানাডার আদালতের দেওয়া রায়ে বাংলাদেশের এ প্রকল্পে তার দেশের কম্পানির বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংক উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের কোনো প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই বলে আসছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ তোলা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এতে বাংলাদেশিরাও জড়িত ছিলেন। সম্প্রতি সংসদে তিনি বলেন, ‘হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন আটকে দিয়েছিলেন নোবেলজয়ী বাংলাদেশি মুহাম্মদ ইউনূস। ‘ এতে বাংলাদেশের এক সম্পাদকেরও ভূমিকা ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জয় তার স্টেটাসে আরো লিখেছেন, ‘এটা লজ্জাজনক যে, আমাদের সুশীল সমাজের একটা অংশ দ্রুত আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে ও বিশ্বব্যাংকের পক্ষে অবস্থান নেন। তারা বেশ কয়েকজন পরিশ্রমী, সম্মানিত যোগ্য মানুষের গায়ে কালিমা লেপন করেছেন…যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তারা দেশপ্রেমিক নয়। ‘
জয় লিখেছেন, ‘ইউনূসের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সরকারকে শায়েস্তা করতে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল করতে বিশ্বব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ সরকারকে হিলারির হুমকি সংবলিত বার্তা পৌঁছে দিতে তার সঙ্গেও তখন কয়েকবার যোগাযোগ করেছিল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা। ‘ তিনি লিখেছেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকে করা একটি স্বাধীন কমিশনের অডিটে দেখা গেছে, এই ট্রাস্ট থেকে লাভের এক পয়সাও গ্রামীণ ব্যাংক কিংবা তার অন্য কোনো প্রকল্প পায়নি। ‘
ড. ইউনূস ও তার বন্ধু সমর্থকদের সমালোচনা করে জয় আরো লিখেছেন, ‘আপনারা কি জানেন, ইউনুস, তার পরিবার, বন্ধুরা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে লাভজনক টেলিযোগাযোগ কম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিক? একটি বেসরকারি ট্রাস্ট্রের মাধ্যমে তার এটার মালিক হয়েছে, কেবল তারাই এর সুবিধাভোগী। গ্রামীণ ব্যাংকের একটি মাল্টি মিলিয়ন ডলারের লোন থেকে এই শেয়ারের টাকা দেওয়া হয়েছে, যা অবৈধ। দাতাদের অর্থে দরিদ্রদের ক্ষুদ্র ঋণ দিতে খরচ করে গ্রামীণ ব্যাংক। এখান থেকে ব্যক্তিগত ব্যবসার জন্য ঋণ করা যায় না। ‘
Leave a Reply