সারাদেশে ভূমির ওপর আরোপিত বর্ধিত হারে কর আদায়ের ওপর এক বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার এক সম্পূরক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
আদেশের বিষয়ে আবেদনের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৫ সালের ৩০জুন ভূমি মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কর বাড়ানো হয়। এ আদেশের পর বর্ধিত কর নিতে পারবে না সরকার। তবে এর আগে যে হারে কর নেয়া হতো সেটা নিতে বাধা নেই।
তিনি আরো বলেন,জমির খাজনা আদায়ের জন্য ১৯৫০ সালে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন করে তৎকালিন সরকার। দেশ স্বাধীনের পর খাজনার পরিবর্তে কর আদায়ের জন্য ১৯৭৬ সালে ভূমি কর অধ্যাদেশ নামে একটি আইন করা হয়।
তখন থেকে খাজনার পরিবর্তে ভূমি কর আদায় করা হচ্ছে। যদিও এটা গ্রামাঞ্চলে এখনও খাজনা হিসেবেই পরিচিত।
এ অবস্থায় সরকার ১৯৯৩ সালে ভূমি কর অধ্যাদেশের ৩(১)ধারা সংশোধন করে সেখানে ৩(১)(এ) ধারা যুক্ত করে। ৩(১)(এ) ধারায় বলা হয়,সরকার অফিসিয়াল গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর পুনর্বিবেচনা,বর্ধিত কিংবা হ্রাস করতে পারবে।
এ ক্ষমতাবলে ভূমি মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালের ৩০ জুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ প্রজ্ঞাপনে জমির উন্নয়ন কর কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৭ গুন বাড়িয়ে দেয়া হয়।
কর বাড়ানোর সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বরিশালের দেওয়ান আবদুর রশিদ একটি রিট আবেদন করেন। ওই রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে কর বাড়ানো বা কমানোর বিষয়ে সরকারকে দেয়া ক্ষমতা সম্বলিত আইনের বিধান কেন বাতিল করা হবে না,তা জানতে চেয়ে গত বছর ২২ আগস্ট রুল জারি করে হাইকোর্ট।
আইন সচিব,ভূমি সচিব,অর্থ সচিব ও বরিশালের জেলা প্রশাসকসহ ৫জনকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এ অবস্থায় বর্ধিত কর আদায়ের জন্য সরকার হয়রানি করছে অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে একটি সম্পূরক আবেদন করেন আবদুর রশিদ। ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত মঙ্গলবার বর্ধিত হারে কর আদায়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন।
Leave a Reply