ট্রান্সকম গ্রুপের মালিক লতিফুর রহমানের মেয়ে শাজনীন তাসনিম রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শহীদুল ইসলামের করা রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিউ) খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ রোববার শুনানি শেষে রিভিউ আবেদন খারিজ করেন।
রিভিউ খারিজ হওয়ায় আসামি শহীদ এখন কেবল প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারবেন। তবে তিনি প্রাণভিক্ষা চেয়ে আবেদন না করলে বা আবেদন করার পর তা খারিজ হলে কারাবিধি অনুযায়ী তার দণ্ড কার্যকর করা হবে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ট্রান্সকম গ্রুপের মালিক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লতিফুর রহমানের মেয়ে স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী শাজনীন তাসনিম রহমান ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানে নিজ বাড়িতে খুন হন। মামলায় ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে তাদের বাড়ির সংস্কার কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসান ও গৃহপরিচারক শহীদুল ইসলাম শহীদসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
অপর চার আসামি হলেন— ঠিকাদার হাসানের সহকারী বাদল, গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন (মিনু) ও পারভীন এবং কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডল। পরে ওই বছর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন। ২০০৬ সালের ১০ জুলাই ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর এক আসামি শনিরাম মণ্ডলকে খালাস দেন।
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল আপিল বিভাগ চার আসামি হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীনের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করেন। পরে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অপর আসামি শহীদুল জেল আপিল করেন। সাত বছর পর ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ ওই আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়।
এরপর গত বছরের ২ আগস্ট আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মধ্যে শহীদের সাজা বহাল রেখে অপর চারজনকে খালাস দেওয়া হয়। পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শহীদ রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এই আবেদনই খারিজ করে রোববার আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
Leave a Reply