জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চলছে মানববন্ধন। ২৫ থেকে ৩০ জন পুরুষ দাঁড়িয়ে আছেন ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে। ফেস্টুনে লেখা, ‘পুরুষ হলেও আমি মানুষ। বিচার পাওয়া আমার নাগরিক অধিকার।’
তাঁদের দাবি, নারী নির্যাতনবিরোধী আইনসহ বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে পুরুষদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে, সহজেই জেল খাটানো হচ্ছে। এ ধরনের ‘পুরুষ নির্যাতন বন্ধ’ করার দাবি জানান তাঁরা।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করে ‘পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধ আন্দোলন বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন।
সংগঠনের আহ্বায়ক শেখ খায়রুল আলম বলেন, ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ আইনের কোনো যাচাই-বাছাই নাই। মামলা হলেই আগে তিন মাস জেল। তারপর আপস। জেলও খাটতে হয়, আবার আপসও করতে হবে। এখানে পুরুষের কোনো মানবাধিকার নেই।’
খায়রুল আলম জানালেন, সারা দেশে নির্যাতিত পুরুষদের নিয়ে তাঁরা একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন।
খায়রুল আলম বলেন, ‘আমরা ২১ দফা দাবি তুলে ধরছি। জেলা প্রশাসকদের স্মারকলিপি দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকেও দিয়েছি।’
মানববন্ধনে আসা এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার অপরাধটা যাচাই-বাছাই করার জন্য একটা সময় নেবে, সময় নেয়নি। আমাকে সরাসরি কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে।’
অন্য এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার অনুমতি ছাড়া চাকরি করেছে। আমি এর প্রতিবাদ করেছি বলে আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন প্রতিরোধবিষয়ক মামলা করা হয়। দুই মাস জেল খাটিয়েছে।’
ওই কর্মসূচিতে একজন নারীকে পাওয়া যায়। যিনি নির্যাতিত পুরুষের পক্ষে দাঁড়াতে চান। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে থাকতে পারে, ভাই থাকতে পারে।’
নারী অধিকার নিয়ে কাজ করেন শামসুননাহার জোসনা। তিনি সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের নেত্রী। এমন কর্মসূচি দেখে সেখানে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। তিনি বললেন, ‘নারী নির্যাতনবিরোধী আইনের যদি অপপ্রয়োগ হয় তবে সেটা আইনের দোষ নয়, যারা অপপ্রয়োগ করছে তাদের দায়দায়িত্ব।’
শামসুননাহার জোসনা বলেন, ‘যদি আইনের অপপ্রয়োগ হয় তবে সরকার তার মনিটর করবে।’ তিনি বলেন, ‘পুরুষ তো ধর্ষিত হয় না। নারী ধর্ষিত হয়। রাষ্ট্রীয় আইনে নারীর প্রতি বৈষম্য আছে। ওই বৈষম্যের নিষ্পত্তি চাই।’
শামসুননাহার জোসনা আরো বলেন, ‘বোঝার ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা আছে। ওনারা ভাবছেন নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইন আছে তাহলে পুরুষ নির্যাতনে নেই কেন। সেটা তো একটা সাধারণ আইনেই হতে পারে।’
Leave a Reply