বাসরুদ্ধকর উত্তেজনায় কেটেছে বিগত কয়েকটি ঘণ্টা! কে বলবে এটা একটি টেস্ট ম্যাচ! ভাগ্য দুলে উঠছিল বারবার! উত্তেজনা আর আশঙ্কায় কেটেছে প্রতিটি প্রহর! দর্শকদের হার্টবিট বাড়িয়ে দিয়ে সবকিছুর শেষ হলো বিজয়ে! আর কোনো শঙ্কা নেই, অপ্রয়োজনীয় হয়ে গেছে পারফর্মেন্সের কাঁটাছেড়া। সকল বিভেদ ভুলে; সকল সমস্যা কিছু সময়ের জন্য হলেও ভুলে গিয়ে বাঙালী আজ মেতে উঠুক ক্রিকেট উৎসবে। ক্রিকেট বিশ্ব আজ চেয়ে দেখুক কলম্বোর পি সারা ওভালে কী অসাধারণ ইতিহাস রচনা করল টিম টাইগার! দেশের ক্রিকেটের ঐতিহাসিক শততম টেস্টের মাইলফলকে দাঁড়িয়ে অবিস্মরণীয় জয় তুলে নিল মুশফিক বাহিনী! অসাধারণ; অবিশ্বাস্য; লড়াকু- আর কীভাবে ৫ উইকেটের এই জয়কে ব্যাখ্যা করা যায়? ব্যাখ্যার অবকাশ নেই; কারণ এখন সময় বিজয়োল্লাসের!
পঞ্চম দিন প্রথম সেশনে টাইগারদের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ১৯১ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ২২ রানেই দুই উইকেট হারানোর চাপকে পাত্তাই দিলেন না তামিম-সাব্বির। লঙ্কান অধিনায়ক পরপর দুই আঘাত হেনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন। তার দুই বলে ফিরে যান দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সৌম্য সরকার (১০) এবং ইমরুল কায়েস (০)। হেরাথের বলে তুলে মারতে গিয়ে লং অফে উপুল থারাঙ্গাকে ক্যাচ দেন সৌম্য। হেরাথের পরের বলটি ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে গুণারত্নের তালুবন্দী হলেন তিনি। নির্ভরযোগ্য এই দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর শঙ্কা জাগে বাংলাদেশ শিবিরে।
কিন্তু এরপরই শুরু হয় আসল খেলা! দারুণ ব্যাটিং করে সব শঙ্কাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন তামিম ইকবাল এবং প্রথম টেস্টে বাদ পড়া সাব্বির রহমান। তৃতীয় উইকেটে এই দুজন ১০৯ রানের জুটি গড়েন। জন্মদিনের একদিন আগে ক্যারিয়ারের ৪৯তম টেস্টে ৮৭ বলে ২২তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম ইকবাল। ঐতিহাসিক টেস্টেই তিনি পেতে পারতেন ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি। কিন্তু হঠাৎ কী হলো তার; দিলরুয়ান পেরেরার বলে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন। মিড অনে দাঁড়িয়ে বলটি দারুণভাবে তালুবন্দী করলেন দিনেশ চান্দিমাল। ড্রেসিংরুমের বারান্দা থেকে কোচ হাথুরুসিংহের বিরক্তি দেখা গেল স্পষ্ট! এমন সময়, জয়ের এত কাছাকাছি গিয়ে কী দরকার ছিল এমন একটা শট খেলার?
পাগালমি করতে গিয়ে ১২৫ বলে ৭ চার এবং ১ ছক্কায় ৮২ রানের ইনিংসটি শেষ হলো তামিমের। অপর প্রান্তে দারুণ ব্যাট করতে থাকা সাব্বির রহমানের সঙ্গী হন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। জুটিতে ১২ রান আসতে না আসতেই আবারও ছন্দপতন! ৭৬ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৪১ রান করে পেরেরার দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন সাব্বির রহমান। এলবিডাব্লিউয়ের আবেদনে প্রথমে সাড়া দেননি আম্পায়ার। কিন্তু শ্রীলঙ্কা রিভিউ নিলে সিদ্ধান্ত পাল্টে যায়। সাকিবের সঙ্গী হন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। একসময় মনে হচ্ছিল এই দুজনই ম্যাচ শেষ করে ফিরবেন। কিন্তু মহান অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেট নাটকীয়তা উপহার দিতে পছন্দ করে।
৫ম উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে ১৯ রানের জুটি গড়ে ফিরলেন সাকিব আল হাসান (১৫)। তার উইকেটের পাশে লেখা থাকবে ‘বোল্ড আউট’; কিন্তু আসলে সেই আউটটি ছিল দুর্ভাগ্য। নিশ্চিত হওয়ার জন্য থার্ড আম্পায়ার কল করতে হলো। দেখা গেল পেরেরার বলটি সাকিবের পায়ে লেগে স্ট্যাম্প ছুঁয়ে কিপারের পায়ে লাগল। খুব ধীরেসুস্থে বেল পড়ে গেল স্ট্যাম্পের! বিষয়টি বুঝতে লঙ্কানদের কিছুটা সময় লাগল। এরপর আবেদন। তৃতীয় আম্পায়ার বললেন ফিরতে হবে সাকিবকে। অধিনায়কের সঙ্গী হলেন অভিষিক্ত মোসাদ্দেক হোসেন। নাটকীয়তার আরও বাকী ছিল! স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে যাওয়া বল মুশফিকের প্যডে লাগলে আউট দিয়ে বসেন ভারতীয় আম্পায়ার সুন্দরম রবি! কিন্ত রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান অধিনায়ক। এরপর তার একটি ক্যাচও ছাড়েন হেরাথ। সাবলীল ব্যাটিং করতে করতে জয় থেকে ২ রানের ব্যবধানে ফিরেন মোসাদ্দেক। এরপর
Leave a Reply