আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। স্বাধীনতাকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। যে উন্নয়ন-অর্জন হচ্ছে তা বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে।
বুধবার সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিভাগীয় তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের যেসব কমিটি মেয়াদউত্তীর্ন সেই সব কমিটি নতুন করে করতে হবে। বছরের পর বছর জমিদারের মতো পদে বসে থাকা চলবে না। দলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করে দেবে। সম্মেলন করতে হবে। কোনো টালবাহানা চলবে না। আর যেখানেই কমিটি হবে পকেট কমিটি কোনো অবস্থায় মেনে নেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগকে সুশৃঙ্খল হতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আরো শক্তিশালী ও আধুনিক আওয়ামী লীগ নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিতে চাই এবং বিজয়ী হতে চাই।
পেশাহীন ও পেশিজীবি মুক্ত আওয়ীলীগ চাই উল্লেখ করে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সিলেটের যারা সৎ ও শিক্ষিত মানুষ তাদের শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগে যোগদানের আহ্বান জানাই। রাজনীতিতে যদি ভালো মানুষেরা না আসে রাজনীতি খারাপ মানুষের হাতে চলে যাবে। খারাপ লোকেরা এমপি-মন্ত্রী হবে। দেশের বারোটা বাজাবে।
তিনি বলেন, আমি আশ্বস্থ করছি, আপনারা ভালো মানুষেরা আসেন, আওয়ামী লীগকে আমরা আপনাদের কাছে গ্রহণযোগ্য করবো। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা আরো শক্তিশালী, আরো স্মার্ট ও আরো আধুনিক আওয়ামীলীগ গড়ে তুলতে চাই।
কাদের বলেন, কর্মীরাই আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস। কর্মীবাহিনীকে আমরা সুশৃঙ্খল করতে চাই। দলের করবেন, দলের নিয়মশৃঙ্খলা মানবেন না, তা করার কোনো অধিকার আপনার নেই। অপকর্মের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি।
বক্তৃতাকালে দলীয় নেতাকমৃীদের আচরণেরও সমালোচনা করেন কাদের। এসময় কর্মীদের মূল্ল্যায়ণ করতে ও জনগনের সাথে ভালো আচরণ করতে নেতাদের প্রতি নির্দেশ দেন তিনি।
এসময় বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ৩ বছরে যা করেছেন, বিগত সরকারগুলো ২৮ বছরেও তা করতে পারি নি। এই বছরই সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের চার লেনে উন্নীতের কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
বিভিন্ন মহল দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো লীগ নাম ব্যবহার করে দোকান খুলে বসে আছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই আওয়ামী ওলামালীগ, প্রচার লীগ, আওয়ামী তরুণলীগ, আওয়ামী প্রবীণলীগ, আওয়ামী প্রজন্মলীগ, আওয়ামী কর্মজীবিলীগ, আওয়ামী ডিজিটাললীগ, আওয়ামীলীগ হাইব্রিডলীগ এই সব এল কোথা থেকে। এই সব আওয়ামীলীগের নামে আলাদা আলাদা দোকান খুলে বসে আছে। এইসব নাম ব্যবহার বন্ধ করতে হবে, এই সব চলতে দেওয়া যাবে না।
বিএনপি সম্পর্কে কাদের বলেন, বিএনপিকে নিয়ে ভয় পাবেন না। ওদের নিয়ে বিচলিত হওয়ার কারণ নেই। আমি এদের নাম দিয়েছি- বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। নির্বাচনে ব্যর্থ, আন্দোলনে ব্যর্থ। ঘরে বসে বসে খালি মিথ্যাচার করে। নালিশের ভাঙ্গা রেকর্ড বাজায়।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, এই সম্মেলন নির্বাচনের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। নির্বাচনের আগেই দলকে সংগঠিত করতে হবে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপির সভাপতিত্বে ও সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনের পরিচালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল মাল আব্দুল মুহিত, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ’র সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ এমপি, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীসহ বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার নেতারা বক্তব্য রাখেন।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৫ বছর পর এই বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল। সিলেটসহ বিভাগের অন্য তিন জেলার নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply