রাজধানীর হাতিরঝিলে অ্যাম্ফিথিয়েটার ও মিউজিক্যাল ড্যান্সিং ফাউন্টেনের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নাগরিকদের বিনোদনের জন্য এগুলো তার নববর্ষের উপহার।
বাংলা ১৪২৪ সন শুরুর আগের দিন আজ বৃহস্পতিবার গণভবনে এক অনুষ্ঠান থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ দুটি স্থাপনার উদ্বোধন করেন তিনি।
লেকের পানির ওপর নির্মিত এই অ্যাম্ফিথিয়েটার এবং মনোরম মিউজিক্যাল ড্যান্সিং ফাউন্টেইন হাতিরঝিল প্রকল্পের অধীনে নগরবাসীর বিনোদনে নতুন সংযোজন। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ বলে নির্মাতারা উল্লেখ করেছেন। এই অ্যাম্ফিথিয়েটারের আসন সংখ্যা দুই হাজার।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজধানী উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ (রাজউক) এবং ঢাকা ওয়াসা’র সহযোগিতায় বাংলাদেশ সেনাবিহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন (এসডব্লিউও-পশ্চিম) এই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ এই অ্যাম্ফিথিয়েটার এবং মিউজিক্যাল ড্যান্সিং ফাউন্টেইন উদ্বোধন করে এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচ্ছন্ন রাখার এবং যতযত্র এটা সেটা ছুড়ে ফেলে একে অপরিষ্কার- অপরিচ্ছন্ন না করা এবং এর প্রতি যত্নবান হবার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাতিরঝিলের মনোরম পরিবেশে মহানগরীর বিপুল সংখ্যক মানুষ ও দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এই ফাউন্ডেইন পরিদর্শনকালে এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
সেনাবাহিনী প্রধান আবু বেলাল মুহাম্মদ শফিউল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। প্রকল্প পরিচালক মেজর জেনারেল আবু সাইদ মোহাম্মদ মাসুদ ফাউন্টেইন এবং অ্যাম্ফিথিয়েটারের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য দিক অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই সময় গণভবনে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধে কর্মরত। এই জীবনযুদ্ধে হিমসিম খাওয়া মানুষগুলোর তো মাঝে মাঝে একটু চিত্তবিনোদনের প্রয়োজন জয়।
তিনি বলেন, জীবন নিয়ে যাদেরকে চিন্তাযুক্ত থাকতে হচ্ছে সংগ্রাম করে যেতে হচ্ছে- সেখানে তাদের জীবনটাকে একটু সহজ করার চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যে যেমন খাদ্য নিরাপত্তা, চিকিৎসার ব্যবস্থা, তাদের গৃহের ব্যবস্থা, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থায় ইতোমধ্যে আমরা ব্যাপক কাজ করেছি। অন্তত এইটুকু বলতে পারি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন- আর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তিনি চেয়েছেন আর্থ-সামাজিক উন্নত একটি দেশ গড়ে তুলতে।
শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করায় আমাদেরর দুর্ভাগ্য তিনি সেটা করে যেতে পারেননি। এরপর ২১ বছর আমরা বঞ্চিত ছিলাম এবং তাই ক্ষমতায় আসার পর আমাদের লক্ষ্যই ছিল মানুষের মুখে খাবার যোগানো। তাদের বাসস্থানসহ শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। আমরা সেভাবেই পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ, এটা বাঙালির। আমরা এই অঞ্চলে বাংলা নববর্ষটা উদযাপন করি। এটা মূলত ব্যবসা-বাণিজ্যে আমাদের অতীতের পণ্য বিনিময় থেকেই এই নববর্ষের শুরু। পুরনো সব হিসাব শেষ করে নতুন হিসেব লিখে রাখা হত হালখাতায়। এর সঙ্গে আর অন্য কিছু মিলিয়ে ফেললে হবে না। এরসঙ্গে ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই । সম্পর্কটা সংস্কৃতির।
এই অ্যাম্ফিথিয়েটার এবং ফাউন্টেইনকে জাতির জন্য সমগ্র ঢাকাবাসীর জন্য নববর্ষের শুভেচ্ছা বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটিসহ সকল স্থাপনার সৌন্দর্য রক্ষাও আমাদের দায়িত্ব। এসব স্থাপনা জাতীয় সম্পদ এগুলো রক্ষা এবং রক্ষণাবেক্ষণ আমাদেরই দায়িত্ব।
Leave a Reply