আওয়ামী লীগের যে সব সংসদ সদস্য মানুষকে ‘কষ্ট দিয়েছে’ তাদের আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না দিয়ে ‘শাস্তির ব্যবস্থা’ করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল সোমবার নিউ ইয়র্কে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা এবং প্রবাসীদের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুহিত বলেন, আগামী বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষে নির্বাচন হবে। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগের প্রচার শুরু হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগকে আরও একবার ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এমপি সাহেবরা, যারা মানুষকে কষ্ট দিয়েছে, তাদের আগামী নির্বাচনে নমিনেশন না দিয়ে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। মনোনয়ন না পাওয়াই হবে তাদের শাস্তি। ‘
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, গত ৯ বছরে সরকার যে উন্নয়ন করেছে, তার ধারাবাহিকতা রক্ষায় দেশের মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগকে আরেক দফা ক্ষমতায় আনবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি আরো বলেন, কেননা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জনগণের সেবা ছাড়া অন্য কিছু নেই। দেশের মানুষের সেবা ছাড়া তার আর অন্য কিছু আর পাওয়ার নাই।
মুহিত বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়দ ৯ বছর হতে চলেছে। প্রথম মেয়াদে আমাদের অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০১২ বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার মধ্যে আমাদের দেশ চালাতে হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল। জ্বালাও-পোড়াও-হরতাল-অবেরোধের মধ্যে আমাদের দেশ চালাতে হয়েছে। এর মধ্যেও আমরা ৬ শতাংশের বেশি হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। ১৪ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় ৩৪ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গেছি। আমদানি ব্যয় বেড়ে হয়েছে ৪২ বিলিয়ন ডলার। অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি করেছি। বিদ্যুৎ উৎপাদন তিন হাজার মেগাওয়াট থেকে এখন ১৪ হাজার মেগাওয়াটে নিয়ে এসেছি। আমরা যে গতিতে কাজ করছি তাতে ২০২৪ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩০ হাজার মেগাওয়াট হবে। নানা অসুবিধার পরও সরকার সফল হয়েছে বলে দাবি করেন অর্থমন্ত্রী।
দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের অবদান স্বীকার করে তিনি বলেন, রেমিটেন্সের উপর ভর করেই রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যা দিয়ে আট মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। মুহিত বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের সব বাহিনী জেহাদ ঘোষণা করেছে এবং সফলও হয়েছে।
এ সময় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থের একটি অংশ ফেরত এসেছে। বাকিটা ফেরত আনতে তৎপরতা অব্যাহত আছে। তবে সব নাও পাওয়া যেতে পারে।
আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের আকার কত হবে- এ প্রশ্নে মুহিত বলেন, ১ জুন সংসদে বাজেট পেশ করা হবে। এবার বাজেটের আকার হবে ৪ লাখ কোটি টাকার বেশি। ৪ লাখ ১৫ থেকে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। মে মাসের শেষ দিকে সব কিছু ঠিক হবে।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্ব ব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে যোগ দিতে গত ১৯ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে যান অর্থমন্ত্রী। তিন দিনের বৈঠক শেষে রবিবার সন্ধ্যায় তিনি নিউ ইয়র্কে আসেন। সফর শেষে ২৮ এপ্রিল তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
Leave a Reply