টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে দেশের ৫ কোটি ৬৭ লাখ শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও মর্যাদাকে প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি ২৬ লাখ বেকারের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক একথা জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর শ্রম জরিপ অনুয়ায়ী দেশে বর্তমানে শ্রমশক্তির মধ্যে ৩ কোটি ৯৫ লাখ পুরুষ ও এক কোটি ৭২ লাখ নারী। এরমধ্যে অনানুষ্ঠানিক কাজে যুক্ত আছেন প্রায় চার কোটি ৭০ লাখ। প্রায় ৮৭ শতাংশ শ্রমশক্তি অনানুষ্ঠানিক কাজ করে থাকেন। বাকি ১৩ শতাংশ শ্রমশক্তি আনুষ্ঠানিক ক্ষেত্রে কাজ করে থাকেন। দেশে বর্তমানে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখের কিছু বেশি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে পোশাক শিল্পে প্রায় ৪২ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করে। ২০০৯ সালে যেখানে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ছিল মাত্র ১৬০০ টাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে ২০১৩ সালে শ্রমিকদের বেতন ২২৩ ভাগ বৃদ্ধি করে ন্যূনতম ৫,৩০০ টাকা করা হয়েছে। শ্রমিকরা সরকারি চাকরিজীবীদের মতো প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধিরও সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়া তাদের জন্য বিশেষ কল্যাণ তহবিল রয়েছে। শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে ২০০ কোটি টাকার বেশি জমা হয়েছে। রপ্তানিমুখী পোশাক শ্রমিকদের জন্য আলাদা আরো বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছে। শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করতে ট্রেড ইউনিয়ন করার অবাধ অধিকার আজ প্রতিষ্ঠিত। শ্রমিক স্বার্থে সরকার হাসপাতাল, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, নিরাপদ কর্মক্ষেত্র তৈরি ইত্যাদি কাজ দেশি-বিদেশি সহায়তায় করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের মেহনতের কারণেই আজ আমাদের দেশের অর্থনীতির এ উন্নতি হয়েছে। গতবছর আমাদের রফতানি ছিল ৩৪ দশমিক ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর ৮১ ভাগই এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। ’
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে ১৬০ দেশে প্রায় ৯০ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছেন। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে বিদেশে নারীদের কর্মসংস্থান শুরু। ১৯৯১ সালে মাত্র ২ হাজার ১৮৯ জন নারী বিদেশে গিয়েছিলেন। ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫৬ জন নারী বিদেশে চাকরি নিয়ে গেছেন।
সূত্র: বাসস
Leave a Reply