বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :::
ডেইলি চিরন্তন অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য সিলেটসহ দেশ বিদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহীরা ইমেইলে যোগাযোগ করুন
শিরোনাম ::
শিশু মুনতাহাকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করা হয়,গ্রেপ্তার ৪ রেকর্ড গড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন জো রোগান আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবির ২ শিক্ষকসহ ৯ জন বহিষ্কার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার কোন শিক্ষায় বড় করছেন মেয়েকে, জানালেন ঐশ্বরিয়া বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের ৬ষ্ট প্রতিষ্টা বার্ষিকী উদজাপন ‘মাজার ভাঙচুর করে সুন্নি জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না’ জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার কঠোর বার্তা পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের মেসির মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন মায়ামি কোচ বন্যায় আরো মৃত্যু, সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায় প্রাথমিকের ‘শপথ বাক্য’ থেকে বাদ গেল বঙ্গবন্ধুর অংশ অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন দপ্তর পেলেন নোবেল বিজয়ী থেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য উপদেষ্টা যারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ আশঙ্কা ছিল এ ধরনের একটা আঘাত আসবে : প্রধানমন্ত্রী
জোয়ান পোলা একটু আধটু তো করবই আমিও করি…আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম

জোয়ান পোলা একটু আধটু তো করবই আমিও করি…আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম

selim-safat_47008_1494650233

ছবি: (বাম পাশ থেকে) আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম ও তার ছেলে সাফাত আহমেদ

‘আরে মিয়া, আমার পোলা আকাম (ধর্ষণ) করছে তো কি হইছে। জোয়ান পোলা একটু-আধটু তো এসব করবই। আমিও তো করি। আমার যৌবন কি শেষ হয়ে গেছে? আমি এখনও বুড়া হইনি।’

ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হওয়ার পর ছেলের অপকর্মে সমর্থন দিয়ে এসব কথা বলেন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম। রাজধানীর বারিধারা আবাসিক এলাকায় আপন জুয়েলার্সের অফিসে যুগান্তরকে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় আপন জুয়েলার্সের কর্মকর্তা ডা. দৌলাসহ তার ঘনিষ্ঠ আরও দুই বন্ধু উপস্থিত ছিলেন। তারাও মাথা নেড়ে সেলিমের এমন বক্তব্য সমর্থন করেন।

স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ী দিলদার আহমেদ সেলিমের বড় ছেলে সাফাত আহমেদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

যুগান্তরের পক্ষ থেকে ধর্ষণ মামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে সেলিম বারিধারার সোহরাওয়ার্দী এভিনিউর ১০৩ নম্বর বাড়িতে যেতে বলেন। সেখানে গেলে দেখা যায়, একটা কাচঘেরা কক্ষে স্বল্প আলোতে সোফায় বসে একের পর এক ধূমপান করছেন তিনি। তার দু’পাশে আরও দু’জন মধ্য বয়সী ব্যক্তি বসে আছেন। সাংবাদিক এসেছেন শুনে তিনি ডা. দৌলা নামের আপন জুয়েলার্সের এক কর্মকর্তাকে ডেকে পাঠান। ধর্ষণ মামলা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই সেলিম ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বলেন, ‘আরে ভাই এমন ফালতু বিষয় নিয়ে হৈচৈ করার কি আছে? মানছি আমার ছেলে আকাম করছে। কিন্তু ওই দুইটা মেয়েও তো ভালো না। খারাপ মেয়ে। তা না হলে কেউ গভীর রাতে হোটেলে যায়? ভদ্রঘরের কোনো মেয়ে কি রাত-বিরাতে হোটেলে যাবে?’

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ধর্ষণ কাকে বলে আসলে আপনারা তা জানেন না। জোর করে কিছু করলে তাকে ধর্ষণ বলে। কিন্তু যে মেয়ে নিজের ইচ্ছায় হোটেলে গিয়েছে তাকে ধর্ষণ করতে হবে কেন? আসলে ওরা (ধর্ষিত দুই তরুণী) মনে করছে বড় লোকের ছেলেরে পাইছি। এগুলোরে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসাইতে পারলে কিছু টাকা-পয়সা পাওয়া যাবে।’

সেলিম বলেন, ‘পুরোপুরি প্ল্যানিং করে ওরা এটা করেছে। আমার সাবেক পুত্রবধূ ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাও ওদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।’

সেলিম বলেন, ‘আমিও তো অনেক জায়গায় আকাম করি। করুম না কেন। আমি কি বুড়া হইয়া গেছি নাকি? আমার যৌবন নাই? আমিও তো হোটেলে যাই। আমার ছেলে যদি হোটেলে ওগো লগে কিছু কইরা থাকে তো মিলমিশ কইরা করছে। ধর্ষণ করতে যাইব ক্যান?’

ঘটনার পুরো দায় পিয়াসার ওপর চাপিয়ে তিনি বলেন, পিয়াসা যে এসব করছে তার প্রমাণও তার কাছে আছে। কথাবার্তার ফাঁকে নিজের মোবাইল ফোন থেকে তিনি কয়েকটি ক্ষুদে বার্তা (মেসেজ) দেখিয়ে বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর পিয়াসা আমার কাছে এসব দিয়েছে। ওই বাজে মেয়ে (পিয়াসা) মনে করছে আমরা বিপদে পড়েছি। এখন সে যা বলবে তাই করব। ওই মাইয়া বলেছে, তার সঙ্গে মিটমাট করে ফেললে সে সব সমাধান করে দিতে পারবে। বিনিময়ে বউ হিসেবে তাকে মেনে নিয়ে ঘরে তুলে নিতে হবে। কিন্তু বলেন তো, ওর মতো … মেয়ে কি সেলিমের বউ হতে পারে … ইত্যাদি (একেবারে প্রকাশযোগ্য নয়)।’

সেলিম বলেন, ‘পিয়াসা প্রেমের ফাঁদে ফেলে আমার ছেলেকে বিয়ে করেছিল। কিন্তু তার সম্পর্কে জানার পর আমার ছেলে তাকে তালাক দিয়েছে। তালাকের পর থেকেই ওর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। ক্ষতি করার জন্য সে আমার পরিবারের পেছনে লেগেছে।’

দিলদার আহমেদের এমন মন্তব্যের বিষয়ে তার সাবেক পূত্রবধু ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা যুগান্তরকে বলেন, ‘দিলদার আহমেদ সেলিম একটা প্রথম সারির লম্পট। এখন তার ৫৪ বছর বয়স। কিন্তু নারী লিপ্সা থেকে তিনি পিছু হটছেন না। এক প্রশ্নের উত্তরে পিয়াসা বলেন, মূলত তার লাম্পট্যের কারণেই সাফাত নষ্ট হয়েছে। বাপ হয়ে ছেলের চরিত্র নষ্ট করেছেন তিনি।’

পিয়াসা বলেন, ‘কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করলেই আপনারা বুঝতে পারবেন দিলদার আসলে কেমন চরিত্রের মানুষ।’ তিনি জানান, ‘আমি তখন ওই বাড়ির বউ। একদিন ফোন এলো সাফাতের বাবাকে গুলশানের একটি পাঁচতারকা হোটেলের কর্মচারীরা মারধর করছে। একথা শুনে সাফাত হোটেলে যায়। গিয়ে দেখে ঘটনা ভিন্ন। মদপান করে মাতাল অবস্থায় এক নারীকে তুলে নিতে চাইছিলেন সেলিম। এ নিয়ে হোটেল কর্মচারীদের সঙ্গে তার তুমুল বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে হোটেলে আটকে রাখে। পরে সাফাত ক্ষমা চেয়ে তার বাবাকে ছাড়িয়ে আনে।’

দিলদার হোসেনের বন্ধু-বান্ধবদের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আপন জুয়েলাসের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, সেলিমের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হলেন ডা. দৌলা ও জনৈক রাজনৈতিক নেতা। এদের মধ্যে ডা. দৌলা যুবলীগ নেতা মিল্কী হত্যা মামলায় গ্রেফতার হন। পরে সেলিমই প্রচুর টাকা-পয়সা খরচ করে তার জামিনের ব্যবস্থা করেন। আর রাজনৈতিক দলের জনৈক নেতা একাধিক হত্যা মামলার আসামি। অভিযোগ আছে, তাকে নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত পাঁচতারকা হোটেলে মদপান করেন তিনি।

দিলদার আহমেদ সেলিমের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু যুগান্তরকে বলেন, এমনিতে তার আর কোনো দোষ নেই। তবে মদ ও নারী ছাড়া সেলিমের চলে না। সন্ধ্যার পর গুলশানের কোনো না কোনো বারে তাকে পাওয়া যাবেই। তবে নির্ধারিত একটি হোটেলের বারে নিয়মিত মদপান করেন তিনি। একদিন মাতাল হয়ে বারের এক ক্যাবারে ড্যান্সারকে তার ভালো লেগে যায়। এ নিয়ে হোটেলে লঙ্কাকাণ্ড ঘটে।

ঢাকার অভিজাত হোটেলে ডিজে পার্টির এক আয়োজক যুগান্তরকে বলেন, ‘সেলিমের নারী বন্ধু’র তালিকা অনেক বড়। উনার যে কতগুলো গার্লফ্রেন্ড আছে তা গুনে শেষ করা যাবে না। পার্টিতে এলেই তিনি সুন্দরী মেয়ে খুঁজতেন।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেল কর্মকর্তা শাহরিয়ার শেখের সঙ্গে সেলিমের দহরম-মহরম। হোটেলে রুম বুক থেকে শুরু করে মদ ও নারী সরবরাহের কাজটা করেন এ শাহরিয়ার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু যুগান্তরকে বলেন, দিলদার হোসেন সেলিম শূন্য থেকে কোটিপতি। প্রায় সব সময়ই সে মাতাল অবস্থায় থাকে। এছাড়া তার আশপাশে অপরাধী ও স্মাগলারদের ঘোরাফেরা। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এত টাকা-পয়সা থাকলেও পারিবারিকভাবে সেলিম সাহেব সুখী নন। প্রতিদিন তিনি মাতাল অবস্থায় বাসায় ফেরেন। শুনেছি মাতাল হয়ে স্ত্রী-সন্তানকে গালাগালও করেন।’

সেলিমের পরিবারিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তার সাবেক পুত্রবধূ ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘তার মাতলামির কথা বলে শেষ করা যাবে না। এসব কারণে বড় ছেলে তো নষ্ট হয়েছেই, এখন ছোট ছেলে ইফাতও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ছেলের বন্ধু হলেও নাঈমকে (দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফ ওরফে হালিম) দিয়ে তিনি শোবিজের উঠতি মডেলদের ভাড়া করতেন। অনেক মডেলকে নিয়ে তিনি থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরেও গেছেন। বাবাকে দেখে তার ছেলেও এসবই শিখেছে। সাফাতও আপন জুয়েলার্সের মডেলদের নিয়ে বিদেশে যাওয়া শুরু করেছে। কিছুদিন আগে সে একজন আলোচিত মডেল নিয়ে ভারতে যায়। ওই মডেলের সঙ্গে সাফাতের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেছে।সূত্র-যুগান্তর

সংবাদটি ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

November 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  



© All rights reserved © dailychironton.com
Design BY Web Nest BD
ThemesBazar-Jowfhowo