প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিগত দিনে কোন পরিকল্পনা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ায় রাজধানী ঢাকার উন্নয়নে সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বহুমুখী সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, রাজধানী ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য নগরী হিসাবে গড়ে তুলতে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ে ঢাকা মহানগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সংক্রান্ত এক বৈঠকে এসব কথা বলেন। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ ঢাকা মহানগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ১০টি প্রকল্পের ওপর তাদের পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করেন।
প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ঢাকা সার্কুলার রোড : সেকেন্ড ফেস এবং ইষ্টার্ণ বাইপাস, ঢাকা নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা টঙ্গি এবং ঢাকা মাওয়া রেল লাইন, টঙ্গি- নারায়ণগঞ্জ সাবওয়ে, মাস-র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) এবং বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), ঢাকা ইলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা- আশুলিয়া ইলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, শান্তিনগর-ঢাকা-মাওয়া ফ্লাইওভার, গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক প্রজেক্ট এবং বাস রুট র্যাশিওনালাইজেশন ও কোম্পানি বেজড অপারেশন ও বিআরটি এক্সপ্রেসওয়ে।
তিনি বলেন, নগরীতে যানবাহনের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে এবং মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু সড়কগুলো সে তুলনায় প্রশস্ত হচ্ছে না। রাজধানীর অধিকাংশ সড়ক উত্তর ও দক্ষিণমুখী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সমস্যা মাথায় রেখেই তাঁর সরকার ১৯৯৬ সালে পূর্বাঞ্চলীয় বাইপাস প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। কিন্তু ২০০১ সালে ক্ষমতার পরিবর্তন হওয়ায় এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হয়নি।
সরকার প্রধান নগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করা এবং দ্রুত ও সহজভাবে পণ্য পরিবহনের জন্য রাজধানীর চারপাশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের উপর দিয়ে সার্কুলার রোড ও ওয়াটার সার্কুলার পথ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, নগরীতে বক্স কালভার্ট করার সময়ে অনেক লেক ও পুকুর ভরাট হয়ে গেছে। এতে নগরীতে জলাবদ্ধতা হচ্ছে। এক সময় নগরীর সকল লেক নদীর সাথে সংযুক্ত ছিল, অথচ সামরিক স্বৈর শাসনের সময়ে এর অধিকাংশই বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, জনগণের ভোগান্তি নিয়ে কোনো উন্নয়ন কাজ হওয়া উচিৎ না, অথচ, অতিতে সেই কাজগুলোই হয়েছে, যা দুঃখজনক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নগরীতে বেশ কয়েকটি বাইপাস ও ওভারপাস নির্মিত হয়েছে। অনেক জমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। তারপরও নগরীতে চলাচল আরো স্বাভাবিক করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা মহানগরীর উন্নয়নের জন্য একটি মাষ্টার প্লান ছিল, অথচ অতিতের সরকারগুলো সড়ক, কালভার্ট ও লেন নির্মাণে কেউ এটি অনুসরণ করেনি।
অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এলজিআরডি এবং সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রেলমন্ত্রী এম মুজিবুল হক, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদ্বয় উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply