মাত্র চার বছরে ২৭টি সিনেমা করে নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আলোড়ন তুলেছিলেন নায়ক সালমান শাহ। এসব সিনেমার বেশিরভাগই ছিল আলোচিত এবং ব্যবসাসফল। তিনি এমনই এক তারকা যিনি মৃত্যুর ২১ বছর পরও রয়েছেন আলোচনায়। ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর দিনটি ছিল শুক্রবার। সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীকে টেলিফোন করে বলা হলো তার ছেলের বাসায় যেতে। টেলিফোন পেয়ে নীলা চৌধুরী দ্রুত ছেলে সালমান শাহর বাসায় রওনা হন। তবে সালমানের ইস্কাটনের বাসায় গিয়ে ছেলের মৃতদেহ দেখতে পান নীলা চৌধুরী। ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর ১১/বি নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার বাসার নিজ কক্ষে তাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে তার এই মৃত্যু ‘আত্মহত্যা নাকি হত্যা’ তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে ভক্তদের মাঝে। এবার রুবি নামে এক নারী নিজ মুখে স্বীকার করলেন সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি। তিনি একটি ভিডিও গতকাল ইউটিউবে প্রকাশের পর তা ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাক্ট-সালমান শাহর আত্মহত্যা না মার্ডার। ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই, সালমান শাহ খুন হইছে। আমার হাজব্যান্ড করাইছে এটা আমার ভাইরে দিয়ে, এটা সামিরার (সালমানের স্ত্রী) ফ্যামিলি করাইছে। আর সব ছিল চাইনিজ মানুষ।’ প্রকাশিত ভিডিওতে এমন দাবি করলেন রুবি নামের এক নারী। রুবির দাবি, তিনি একমাত্র জীবিত ব্যক্তি যার কাছে প্রমাণ আছে, সালমান আত্মহত্যা করেননি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। রুবির পুরো নাম রাবেয়া সুলতানা রুবি। তিনি দীর্ঘদিন যাবত আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়াতে চাইনিজ স্বামী ও দুই সন্তানসহ বসবাস করছেন। জানা গেছে, সালমান শাহ্ ঐ নারীকে আন্টি ডাকতেন। রুবির বিউটি পার্লার ছিল। সালমান ও সামিরার সাথে তার বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। সালমান মারা যাওয়া পর অনেকের মতো রুবিকেও পুলিশ সন্দেহ করে। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর থেকে রুবি বিদেশে আছেন। এর আগে অনেকবার দাবি করেন, সালমানের মৃত্যুর ব্যাপারে কিছু জানেন না তিনি। তবে ভিডিওতে তিনি আতঙ্কের কথা বলছেন। রুবি জানান, জীবন হারানোর আশঙ্কায় আছেন তিনি। তার দাবি, সালমান শাহ’কে যে হত্যা করা হয় তার প্রমাণ তার কাছে আছে। তাই তাকেও মেরে ফেলা হতে পারে। কেন খুন করা হতে পারে রুবিকে? তার ভাষ্যে, কারণ আবার (সালমানের মৃত্যুরহস্য) কেস ওপেন হইছে। প্রসঙ্গত, সালমান শাহর মৃত্যুর পর তার বাবা কমরউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। মামলা প্রথমে রমনা থানা পুলিশ পরে ডিবি পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবির তদন্ত করেন। তদন্তকালে সালমান শাহর মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। প্রতিবেদনে তারা সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে বর্ণনা করে। পরে সালমান শাহর পরিবার ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আপত্তি দিলে মরদেহ কবর থেকে তুলে ফের ময়নাতদন্ত করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। তাদের প্রতিবেদনে মরদেহ অত্যধিক পচে যাওয়ার কারণে মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়।
রুবি নামের সেই নারীর ভিডিও লিংক :
Leave a Reply