রহস্যজনক ‘ব্লু হোয়েল’ গেম নিয়ে তদন্ত ও প্রয়োজনে এই খেলা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ তথ্য জানান।
গেমটি খেলে তরুণরা আত্মহত্যায় প্ররোচিত হচ্ছে এমন সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসিকে এ নির্দেশ দিল সরকার।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্লু হোয়েল নিয়ে আগে থেকেই আতঙ্কা ছিল। এ পর্যন্ত শতাধিক তরুণ-তরুণী এই গেম খেলে আত্মহত্যায় প্ররোচিত হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি করেছে।
গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশেও এ খেলা শুরু করে তরুণ-তরুণীরা। সম্প্রতি রাজধানীর হলিক্রস স্কুলের এক ছাত্রী গেমটি খেলে আত্মহত্যা করে বলে খবর পাওয়া যায়। তবে এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছে পুলিশ।
ইন্টারনেটভিত্তিক ‘ব্লু হোয়েল’ গেমটি তৈরি হয় ২০১৩ সালে। এটি তৈরি করেন রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া মনোবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ফিলিপ বুদেকিন।
গেমটি খেলে রাশিয়ায় অন্তত ১৬ কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যা করায় বুদেকিনকে গ্রেফতার করা হয়।
দোষ স্বীকার করে তিনি বলেন, যেসব ছেলেমেয়ে সমাজে অপ্রয়োজনীয় তাদের আত্মহননের পথে ঠেলে দিয়ে জঞ্জাল সাফ করাই তার উদ্দেশ্য!
‘ব্লু হোয়েল’ সম্পর্কে প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ব্লু হোয়েল গেমে ৫০টি ধাপ রয়েছে। একাধিক কিউরেটর এটি নিয়ন্ত্রণ করেন। তাদের নির্দেশেই গেম এগিয়ে চলে। সেখান থেকে সহজে বের হওয়া যায় না। আবার কেউ বের হতে চাইলেও তাদের খেলার জন্য বাধ্য করতে পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়।
আর এই গেমের বিভিন্ন ধাপে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। যেমন: ব্লেড দিয়ে হাতে তিমির ছবি আঁকা, সারা গায়ে আঁচড় কেটে রক্তাক্ত করা, কখনও ভোরে একাকি ছাদের কার্নিশে ঘুরে বেড়ানো, রেল লাইনে সময় কাটানো, ভয়ের সিনেমা দেখা ইত্যাদি।
চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করে তার ছবি কিউরেটরকে পাঠাতে হয়। ২৭তম দিনে হাত কেটে ব্লু হোয়েলের ছবি আঁকতে হয়। সব ধাপ পার হওয়ার পর ৫০তম চ্যালেঞ্জ হলো আত্মহত্যা। আর সেখানেই গেমস জয়ের সমাপ্তি ঘটে। কিন্তু যে ব্যক্তি খেলেন, তাকে আর পাওয়া যায় না।
সাধারণভাবে গোপন গ্রুপের মধ্যে অপারেট করা হয় এই গেম। এক্ষেত্রে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপের মতো জনপ্রিয় স্যোশাল প্লাটফর্মকে কাজে লাগায় কিউরেটরা।
Leave a Reply