প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, পদ্ম সেতু নিয়ে কম ষড়যন্ত্র হয়নি। বিশ্বব্যাংক সহযোগিতার কথা বললেও পরে তারা সরে গেছে।
সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করে যাচ্ছি। পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান। সৎ সাহস ও নিজের আত্মবিশ্বাস থাকলে যে কোন কঠিন কাজ করা যায়। আমরা কারো চেয়ে কম নই। বিদেশের সঙ্গে আমরা সমানে সমান। সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ে বিদেশী সাটিফিকেট প্রয়োজন নেই।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ‘রাজনীতিতে সত্য-মিথ্যা: পদ্মা সেতুর অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সুশীলদের উচ্চাভিলাসের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমাদের সুশীলদের মধ্যে একটি শ্রেণি আছে তাদের কাজ সারা দুনিয়া ঘুরে বেড়ানো। দেশে এসে তাদের আর কোনো কাজ নেই।
তারা এনজিও করে, সেমিনার করে, বক্তব্য দিয়ে বেড়ায়। এই এনজিও সেমিনার কার পয়সায় চলে? বিদেশিদের। এটা তাদের ব্যবসা। তারা হচ্ছে বিদেশিদের গোলাম। সরকারের সমালোচনা না করলে তারা বিদেশ থেকে টাকা আনতে পারবে না। তাদের আয় বন্ধ হয়ে যাবে। এই সুশীলরাই বলেছিলো নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করলে অর্থনীতিতে চাপ পড়বে। কিন্তু আমরা নির্মাণ করে প্রমাণ করেছি, কোন চাপ পড়েনি। তিনি আরো বলেন, সুশীলদের একটা রূপ আছে, তারা মনে করে আমরা তো উচ্চ শিক্ষিত, ইংরেজি বলি, বিদেশিদের সঙ্গে খাতির, এত টাকা-পয়সা বানিয়েছি এখন দরকার ক্ষমতা। কিন্তু মানুষের ভালোবাসা ছাড়া ক্ষমতায় আসা যায় না। ওয়ান ইলেভেনে ড. ইউনুস চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে জয় বলেন, বিশ্বে আমাদের অর্থনীতি এখন ৩৩তম। কারণ আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। একের পর এক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করছি। ষড়যন্ত্র কখনো শেষ হয় না। এটা রাজনীতির বাস্তবতা।
পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন না করতে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের মাধ্যমে ড. ইউনূস বিশ্বব্যাংককে প্রভাবিত করেছিলেন বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের উচ্চপর্যায় থেকে আমাদের জানানো হয়েছে ড. ইউনূস হিলারি ক্লিনটনকে অনুরোধ করেন বিশ্বব্যাংক যেন বাংলাদেশকে শাস্তি দেয়। এ কারণেই বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতু থেকে সরে গেছে।
জয় আরও বলেন, ‘তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাথা নত করেননি। আমেরিকান অ্যাম্বেসির একজন প্রতিনিধি আমাকে হাসতে হাসতে দুইবার হুমকি দিয়েছিলেন, বলেছিলেন তোমার ট্যাক্সের অডিট হতে পারে। আমিও হাসতে হাসতে উড়িয়ে দিয়েছিলাম বলেছিলাম, করতে পারো, কিছুই পাবে না। সৎ থাকার সুবিধা হচ্ছে ভয় করতে হয় না বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র।
সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, অ্যামেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন।
সুচিন্তা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, পঁচাত্তরের পর থেকে যে অপপ্রচার এটা কিন্তু আগে মোকাবিলা হতো না। আমরা একটু লাজুক ছিলাম। এখন মিথ্যার মোকাবিলার জন্যই আমাদের জোর গলায় সত্যকে তুলে ধরতে হবে। জয় বলেন, এমনও দেখেছি, নামকরা পত্রিকার এডিটোরিয়ালে লিখেছে আওয়ামী লীগ করেছে, কিন্তু এটা এত বলার কী দরকার। এর কারণ হলো তারা জানে আওয়ামী লীগ বলতে থাকলে তাদের কথা আর কেউ বিশ্বাস করবে না।
Leave a Reply