প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ মরণশীল, মৃত্যু অবধারিত, সবাইকে মরতে হবে। কিন্তু কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া, মানুষের কাছ থেকে সম্মান পাওয়া একজন রাজনীতিকের বড় পাওয়া, বড় অর্জন।
একজন রাজনীতিকের এর চেয়ে আর বড় কিছুই পাওয়ার নেই। একজন রাজনীতিবিদ যদি গণমানুষের পাশে থাকেন, মানুষের সমর্থন পান তাহলে তার অর্থবিত্ত, শক্তি কোনো কিছুই লাগে না। রাজনীতিবিদরা নিষ্ঠাবান হলে জনগণের উন্নতি হয়।
দশম জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতে রবিবার উত্থাপিত শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক, সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার আখতার হামিদ সিদ্দিকীসহ বিশিষ্টজনদের নামে সংসদে এ শোক প্রস্তাব আনা হয়।
শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ছায়েদুল হক সততা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তার কাজের সফলতায় মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে। একজন রাজনীতিবিদ সৎ হলে দেশ এগিয়ে যায়। ছায়েদুল হককে আমরা সেই রকমই একজন মন্ত্রী পেয়েছিলাম।
তিনি এমনই একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন যে, তিনি পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০১ সালে আমাদের পরিকল্পিতভাবে পরাজিত করা হয়। তখনও ছায়েদুল হক বিজয়ী হয়েছিলেন। তৃণমূলে তার জনপ্রিয়তা এমন পর্যায়ে ছিল যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেষ্টা করেও তাকে হারাতে পারেনি। কারণ জনগণ তার সঙ্গে ছিল, জনগণের সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের প্রয়াত সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, গোলাম মোস্তফা তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে এমনভাবে মিশে গিয়েছিলেন যে, তার প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে ছিলেন, অর্থবিত্তশালী ছিলেন। বলা হতো ওই এলাকা জাতীয় পার্টির এলাকা। কিন্তু তৃণমূলে তার যে সম্পর্ক ছিল, সাধারণ মানুষের প্রতি যে দরদ ছিল, তার প্রতি মানুষের যে সমর্থন ছিল। সেই সমর্থনে তিনি জয়ী হয়ে আসেন। মূলত একজন রাজনীতিবিদ যদি গণমানুষের পাশে থাকেন, মানুষের সমর্থন পান, তাহলে অর্থবিত্ত, শক্তি কোন কিছুই তার বিরুদ্ধে কাজে লাগে না।
শেখ হাসিনা বলেন, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতো, আতঙ্ক বিরাজ করতো। বিশেষ করে ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হয়। নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল তারা। সেই জায়গায় সেখানে লিটন নির্বাচিত হয়ে আসে। দুর্ভাগ্য আততায়ীর গুলিতে লিটন নিহত হয়। এরপর একেবারে তৃণমূলের একজন নেতা গোলাম মোস্তফা সেখানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি সব সময় আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করতেন। তিনি ৩২ বছর সুন্দরগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি একেবারেই একজন তৃণমূলের মানুষ। তৃণমূলের সঙ্গে মিশে যাওয়া একজন নেতা। জনপ্রিয়তার কারণে তিনি নির্বাচিত হয়ে আসেন। এসব মন্ত্রী ও এমপিদের মৃত্যুতে দলের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে।
Leave a Reply