কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে ডিপথেরিয়া রোগ। এ পর্যন্ত ৯৫ রোগী শনাক্ত করেছে টেকনাফ স্বাস্থ্য বিভাগ।
টেকনাফ স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে আগত ১ থেকে ১৮ বছরের শিশু কিশোররা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সম্প্রতি উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ডিপথেরিয়া রোগ ধরা পড়ে। তবে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৩২ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে।
দেশী-বিদেশী সংস্থাসমূহ এই রোগ নিরাময়ে কাজ করলেও সহজে এর সুফল পাওয়া যাচ্ছেনা। ডিপথেরিয়া হল ব্যাকটেরিয়া জাতীয় ছোঁয়াচে রোগ। এ রোগটি কোন স্থানে দেখা দিলে তা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। তাই সব স্থানে প্রতিরোধের ব্যবস্থা জরুরী বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এদিকে ডিপথেরিয়া রোগটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেখা দেওয়ার পর থেকে রোহিঙ্গা আশ্রয় ক্যাম্পের আশপাশ্বের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে টেকনাফের হোয়াইক্যং উনচিপ্রাং, চাকমারকুল, হ্নীলার নয়াপাড়া ও লেদা এলাকায় ৯৫ জন শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানায় টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক প্রণয় রুদ্র।
তিনি আরও জানায়, এই রোগ প্রতিরোধে ক্যাম্পে রোহিঙ্গা ও সংশ্লিষ্টদের মাঝে ঠিকা প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া এলাকায় সহজে ছড়িয়ে না পরে সে বিষয়ে হাসপাতালের পক্ষ থেকে গত ১৪ থেকে ২১ জানুয়ারী পর্যন্ত প্রথম রাউন্ডে টেকনাফ উপজেলার ইউনিয়ন ও পৌরসভার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে ডিপথেরিয়া রোগ প্রতিরোধের ঠিকা প্রদান করা হয়। এছাড়া অন্যান্য স্থানে ২য় রাউন্ডের ২৭ জানুয়ারী থেকে ২ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ঠিকা দেওয়া হবে।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা ডাঃ সুমন বড়ুয়া জানান, মায়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন মারাত্মক রোগ রয়েছে। বিশেষ করে এইচআইভি, জন্ডিস, ডিপথেরিয়া, গ্যাষ্ট্রিক, আলসার ও নিমোনিয়াসহ নানা রোগব্যাধি। তবে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্মের পর থেকে কোন প্রকার টিকা দেওয়া হয়না। ফলে শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। অপুষ্টির কারণে ডিপথেরিয়া রোগ মারাত্মক আকার ধারন করেছে। ইতিমধ্যে রোগ প্রতিরোধে রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে জাতিসংঘের ডাব্লিউএইচও দেশীয় স্বাস্থ্য সংস্থা কাজ শুরু করেছে। আশা করি তা অচিরে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
Leave a Reply