এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথম রাতেই বিড়াল মারার মতো কাজ সেরে ফেলতে হবে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রী জানান, হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেলে আরোহী হওয়ায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অনুতপ্ত হয়েছেন।সড়কের শৃঙ্খলা ফেরানোর বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার প্রায়োরিটি (অগ্রাধিকার) হচ্ছে সড়কে এবং পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। এ দুটি বিষয় প্রধান অগ্রাধিকার পাবে। কারণ সড়ক এবং পরিবহনে বিশৃঙ্খলা জিয়ে রেখে যত উন্নয়ন কাজই করি না কেন, তাতে কোনো লাভ হবে না। তিনি বলেন, আট লেনের রাস্তা করলাম কিন্তু শৃঙ্খলা নেই, তাতে কোনো লাভ হবে না। এ বিষয়ে আমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছি। তাদের নানা নির্দেশনা দিয়েছি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীও নির্দেশনা দিয়েছেন। এ কাজগুলো শুরুতে করতে হবে। পরে এসব করা যাবে না। প্রথম রাতেই বিড়াল মারার মতো কাজ সেরে ফেলতে হবে।
শৃঙ্খলা ফেরানোর কৌশল জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিভাবে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনব সেটা তো আমার নিজস্ব কিছু কৌশল আছে। আবার জেনারেল কিছু বিষয় আছে; যা সবার জানা। ছোট ছোট যানগুলো হাইওয়েতে চলছে, লাইসেন্সবিহীন ছোট ছোট গাড়ি চলছে- এসব বেশি বিশৃঙ্খল।
মোটরসাইকেল একটি নতুন আতঙ্ক উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তবে ঢাকা শহরে আমরা অনেকটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছি, কিন্তু ঢাকার বাইরে মোটরসাইকেলগুলো বেপরোয়া চলছে। এক মোটরসাইকেলে তিনজন চলছে, তারপর আবার লাইসেন্স ছাড়া। তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো ঠিক করতে হবে। তবে কাজটা এত সহজ নয়, তবে করা যাবে না এমনও নয়। আমরা যদি সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করি তাহলে করা যাবে। তবে অসম্ভব নয়।
সামনের দিনের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার চ্যালেঞ্জ হবে চলমান কাজগুলো সমাপ্তের পাশাপাশি আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ রোড প্রজেক্ট আছে, একটা ঢাকা-সিলেট, আরেকটা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ফোরলেনে উন্নীত করা। এই দুটি কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা চলতি বছরের জুনের আগে শুরু করতে চাই। অন্তত ঢাকা-সিলেট চার লেনের কাজ জুনের আগেই শুরু হবে। আর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের কাজ শুরু করতে একটু সময় লাগবে। তিনি বলেন, উন্নয়ন তো হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংক যখন চলে গেল তখন আপনারা ভাবতে পারতেন- পদ্মা সেতু হবে? হচ্ছে তো, আপনারা ভাবতে পারতেন- মেট্রোরেল হবে? হচ্ছে তো। অসম্ভবের কিছু নেই। ফলে আই লাভ দ্য ইম্পসিবল, আই এনজয় দ্য চ্যালেঞ্জ।
নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের মতামত ছাড়া একান্ত সচিব (পিএস) নিয়োগ দেয়া হয়েছে- এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে কারণেই নিয়োগ দেয়া হোক, কাজটা বেঠিক হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বেছে বেছে খোঁজ নিয়ে এটা করেছেন। আমার মনে হয় ভালো হবে।
হয়তো এটা দিয়ে পারফরম্যান্স বিবেচনা করা হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী একান্ত সচিবদের দিয়েছেন, যদি তার (পিএস) পারফরম্যান্স ভালো না হয় তাহলে তাকে কেন রাখব? যেমন আমার কাছে একজন আসছেন, যোগ দিয়েছেন। আমিও তাকে যোগ দিতে বলেছি, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী তাকে যোগ দিতে বলেছেন। আমি তাকে দেখব, পারফরম্যান্স সঠিক না হলে পিএমকে (প্রধানমন্ত্রী) বলব তাকে দিয়ে আমার চলছে না।নতুন মন্ত্রিসভায় নিয়োগ পাওয়ার পর ৮ জানুয়ারি মোটরসাইকেলে প্রথম অফিসে আসেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। মোটরসাইকেলে চড়ার ছবিও তিনি ফেসবুকে দেন। ছবিতে দেখা যায়, তার মাথায় হেলমেট নেই। এ ঘটনায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছি, হি এক্সপ্রেস হিজ রিগ্রেট ফর ইট (ওই ঘটনায় সে অনুতপ্ত)। সে বলেছে, সে ভুল করেছে, সে আর রিপিট করব না (এমন কাজ আর করবেন না)। এ কথাটা সে খুব খোলা মনে আমার কাছে স্বীকার করেছে, সে আমাদের মন্ত্রী। হি রিগ্রেট এক্সপ্রেস, এরপর তো আমি কিছু বলব না। সে তো বলেনি, সে সঠিক করেছে।
এর আগে সকালে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা করে না, নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। আগামী দিনে আন্দোলন করলেও তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। তিনি বলেন, একজন রাজনীতিকের জীবনে মানুষের ভালোবাসার চেয়ে বড় সম্পদ আর কিছু নেই। শেখ হাসিনার কাছ থেকেও মানুষকে ভালোবাসার শিক্ষা পেয়েছেন তারা। বঙ্গবন্ধুর সততা ও সাহসের আদর্শকে ধারণ করার শপথ নেবেন আজ থেকে। তিনি আরও বলেন, আমাদের শপথ হবে, আমরা মাটির কাছে থাকব, মানুষের কাছে থাকব, মানুষের কাজে থাকব এবং জনস্বার্থে কাজ করে যাব।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় দলের সিনিয়র নেতারাও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানান নবগঠিত মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
Leave a Reply