অসুস্থ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে দেখতে গ্রামের বাড়ি শেরপুরে যাচ্ছিলেন রঙমিস্ত্রি হারুন। তিনি মহাখালী টার্মিনাল থেকে খেয়া পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি বনানীর বিমানবন্দর সড়কে যাওয়ার পর হারুন বলেছিলেন, ‘ভাই, আমি ইফতার করব। বাসটি একটু থামান।
এরপরও চালক বাসটি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ততক্ষণে ২৫ বছর বয়সী হারুন নেমে বাসের সিট ছেড়ে দরজা পর্যন্ত চলে যান। তখন হেলপার চলন্ত গাড়ি থেকেই তাকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়। এরপর সেই বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হন হারুন।
গত শনিবার ওই ঘটনার পর পুলিশ চালক বাহাদুর আলীকে গ্রেফতার করলে বাসচাপায় যাত্রীকে মেরে ফেলার এমন নিষ্ঠুর ঘটনা জানা যায়। রোববার পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে একদিনের রিমান্ডে নিয়েছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় একজন মারা যাওয়ার খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তখন প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানান, চলন্ত বাস থেকে ওই ব্যক্তিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়।
এরপর সেই বাসটিই তাকে পিষে দিয়ে চলে যায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে পরিচয় শনাক্তের পর স্বজনদের খবর দেয়। এ ঘটনায় নিহতের মা রানী বেগম বনানী থানায় চালক ও হেলপারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
বনানী থানার এসআই রাজিবুল হাসান বলেন, আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তারা জানতে পারেন, বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে যাত্রী হারুনকে মেরে ফেলা হয়েছে। ঘটনার ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে তিনি খিলক্ষেত এলাকা থেকে বাসটি চালকসহ আটক করেন। এরপর চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনা বেরিয়ে আসে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, চালক জানিয়েছে ইফতার করার জন্য হারুন বাসটি থামানোর অনুরোধ করেছিলেন। তিনি বাসটি একটু থামাতেই হেলপার আলম তাকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়। এতে চাকার নিচে পড়ে যান ওই যাত্রী। হেলপার পলাতক থাকায় তার অবস্থান শনাক্তে চালককে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
হারুনের স্বজন মনির হোসেন বলেন, হারুন তার পরিবার নিয়ে কেরানীগঞ্জের আটিপাড়ায় থাকতেন। কয়েক মাস আগে তিনি বিয়ে করেন। স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হলে তাকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। সেখানে অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে যাওয়ার পথেই বাসচালক তাকে পিষে মারল।
Leave a Reply