আপাতত ‘এ’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকাটা দেখাচ্ছে বেশ! টানা তিন ম্যাচ জিতে শীর্ষে অবশ্যই নিউজিল্যান্ড। কাল পয়েন্ট ভাগাভাগি করা অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশ দুই ও তিনে! দুই ম্যাচ থেকে দুই দলেরই সমান ৩ পয়েন্ট। শ্রেয়তর রানরেট এখানে মাশরাফি বিন মর্তুজাদের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে মাইকেল ক্লার্কদের। আর দুই ম্যাচের দুটোতেই গো-হারা হেরে সাত দলের গ্রুপে সবার শেষে থাকা ইংল্যান্ডের কোয়ার্টার ফাইনাল ভাগ্য এখন ঝুলছে চিকন সুতোর ওপর!
এই মুহূর্তে অন্তত গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কার সামনে দাঁড়িয়ে এউইন মরগানের দল। ইংলিশরা যখন হতাশার চোরাবালিতে নিমজ্জনের চোখরাঙানি দেখছে, তখন মাশরাফিরা বড় প্রাপ্তির আশায় চোয়ালচাপা প্রতিজ্ঞা করতেই পারেন। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ব্রিসবেনের গ্যাবার মতো ভেন্যুতে খেলতে না পারার হাহাকার অবশ্য আছে বাংলাদেশ অধিনায়কের। ২৬ ফেব্রুয়ারি মেলবোর্নে শ্রীলঙ্কা ম্যাচ সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটি খেলতে পারলে আর কিছু না হোক, জমাট প্রস্তুতি অন্তত হতো বলেও মনে করছেন তিনি। সেটি না হওয়ার আফসোসও আছে তাঁর। কিন্তু যেভাবে-যেমন তিনি ভেবেছেন, সেভাবে-তেমন নাও তো হতে পারত। উল্টো অস্ট্রেলিয়ানরা এমন নাকাল করে ছাড়তে পারত যে প্রথম ম্যাচ জেতার আত্মবিশ্বাসেই বড় চোট লেগে যেত!
তাই অনেক বিশ্লেষকের মতেই ব্রিসবেনে কাল খেলা না হয়ে ভালোই হয়েছে। বরং ১ পয়েন্ট পাওয়ায় শেষ আটে ওঠার সম্ভাবনায় বাংলাদেশ নামটা ইংল্যান্ডের চেয়ে বেশিই উচ্চারিত হচ্ছে। যদিও তেমন কিছুকে এখনো বেশ দূরের পথ বলেই মানছেন মাশরাফি। তবে সেই পথ পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে নিজ দলের সামর্থ্যেও কম আস্থাশীল নন তিনি, ‘নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা যদি খেলতে পারি, তাহলে আমাদের বেশ ভালো সুযোগ আছে।’ অবশ্য আশাবাদী বাংলাদেশ অধিনায়ক তাঁর আশার সঙ্গে কঠিন সমীকরণটাও মনে করিয়ে দিতে ভুললেন না, ‘আমাদের এখনো দুটো অথবা তিনটি ম্যাচ জিততে হবে। আমরা সেজন্য মুখিয়েও আছি।’ অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর তাঁর সামনে তোলা হয়েছিল ইংল্যান্ড প্রসঙ্গও। বিশেষ করে ইংলিশরা এখন বাংলাদেশের চেয়েও বেশি চাপে কি না, এমন প্রশ্নও শুনতে হলো মাশরাফিকে। তিনি অবশ্য এমন কোনো উত্তর দিলেন না, যা সংবাদমাধ্যমকে আকৃষ্ট করতে পারে। বরং নিরাপদ উত্তরই বেরোল তাঁর মুখ থেকে, ‘ইংল্যান্ড আমাদের চেয়ে বেশি চাপে আছে কি না, তা আমি বলতে পারব না। আমি যেটা বলতে পারব, তা হলো আমরা ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা এমনকি স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও খেলতে মুখিয়ে আছি।’
মুখরোচক কিছু বলার চেয়ে বরং সেসব ম্যাচের জন্য নিজেদের প্রস্তুতি নিয়েই বেশি ভাবনা মাশরাফির, ‘সব কিছুই নির্ভর করছে প্রস্তুতির ওপর। ওদের বিপক্ষে খেলার জন্য আমরা আমাদের সেরা প্রস্তুতিটা নেওয়ার চেষ্টা করছিও।’ সেই প্রস্তুতির স্বার্থেই অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটি মাঠে গড়ালে খুশি হতেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘এই ম্যাচটি আমরা খুব করে খেলতে চাইছিলাম। কারণ এ ধরনের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ আমরা পাই-ই না। ম্যাচটি খেলতে পারলে আমাদের তাই কিছুটা অভিজ্ঞতা হতো। যে অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে কাজেও লাগত।’ সেই সঙ্গে এও মানছেন, ‘বৃষ্টি হলে তো কিছু করার নেই। এটা আপনাকে মেনে নিতেই হবে। এখন আমরা তাকিয়ে সামনের ম্যাচগুলোর দিকে।’
সামনে সবার আগে শ্রীলঙ্কা। ৯ মার্চ অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এর মাঝে ৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের নেলসনে স্কটল্যান্ড ম্যাচে জয় বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই প্রত্যাশিত। এর আগে-পরে যে দুটো দলের সঙ্গে খেলা, তাদের কারো অবস্থাই সুবিধার নয়। না শ্রীলঙ্কা, না ইংল্যান্ডের। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড সফরে খাবি খাওয়া লঙ্কানরা হার দিয়ে শুরু করেছে বিশ্বকাপ। আর গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হারা ইংল্যান্ড তো ‘এ’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকায় সবার শেষে। এসবই শেষ আটের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখাচ্ছে মাশরাফিদের! ক্রিকইনফো
Leave a Reply