প্রতিবেশী এক পুলিশ পরিবারের দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের উইকেটকিপার ও ব্যাটসম্যান শামীমা সুলতানার বাবা মুক্তিযোদ্ধা সলেমান শেখ (৭৪) এখন জেল হাজতে। মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের সলেমান শেখের মেয়ে শামীমা বর্তমানে জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের হয়ে খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করছেন।
বৃদ্ধ বাবার জেলে যাওয়ার খবরে তিনি সেখান থেকে উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করে নিজের ফেসবুক পেজে পোষ্ট দিয়েছেন- ‘কি হবে দেশের জন্য ক্রিকেট খেলে? যদি আমার মুক্তিযোদ্ধা বৃদ্ধ বাবাকে মিথ্যা মামলায় জেল খাটতে হয়?’
সলেমান শেখের ছোট ভাই মহম্মদ আলী অভিযোগ করে বলেন, সলেমান শেখ গরুর খামারের পাশাপাশি গবাদী পশুর খাবারের ব্যবসা করেন। সম্প্রতি তিনি প্রতিবেশী এক পুলিশ সদস্য স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের কাছে বাকিতে কিছু গরুর খাবার বিক্রি করেন। ওই পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে বিরোধের জেরে আনোয়ারার ছেলে আশিকুর রহমান শামিমার বাবাকে মারপিট করে। একজন বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধার গায়ে হাত তোলায় ক্ষুব্ধ হয়ে পরে এলাকাবাসী আশিকুর রহমানকে উল্টো মারপিট করে। আহত আশিক মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ৪-৫ দিন চিকিৎসা নেন। এ ঘটনার পুলিশ সদস্যর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম শনিবার শ্রীপুর থানায় নারী নির্যাতন ও ছেলেকে মারপিটের ঘটনায় সলেমান শেখ ও তার স্ত্রী, ছেলে, ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রীসহ আরো ৪-৫ জনের নামে মামলা করেন। পুলিশ ওই দিনই সলেমান শেখকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এ বিষয়ে শামীমা সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আনোয়ারা বেগমের পরিবারটি আমার বাবাসহ আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করে আসছে। আমার বৃদ্ধ বাবার বয়স ৭৪ বছর হলেও মামলায় ৫৭ বছর দেখিয়ে নারী নির্যাতন মামলা দিয়েছে।’
মামলার বাদী আনোয়ারা বেগম সমকালকে বলেন, সামান্য পাওনা টাকার জন্য সলেমান শেখ তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন। এমনকি তার ছেলে আশিককে ধরে নিয়ে বেদম মারপিট করে বাড়িতে আটকে রাখে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আইন সবার জন্য সমান। তবুও ক্রিকেটার শামিমার উপর সন্মান দেখিয়ে ঘটনার পরও স্থানীয়ভাবে মিমাংসার মিমাংসার জন্য পাঁচ দিন সময় দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তারা মিমাংসা করতে ব্যর্থ হওয়ায় বাধ্য হয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি।’
Leave a Reply