অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মাতলো বাংলাদেশের জনগণ। দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে ৩ উইকেটে হারালো বাংলাদেশ।
বড়রা যা করতে পারেনি, অধিনায়ক আকবর আলীর ব্যাটে চড়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ জয় করলো বাংলাদেশের যুবারা। আইসিসির বড় ইভেন্টে প্রথমবার বিশ্ব ট্রফি ছুঁয়ে দেখলো বাংলার তরুণরা। এই ভারতের কাছেই অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে হেরেছিলো। আর, ভারতের জাতীয় দলের কাছেও এশিয়া কাপের ফাইনালে হেরেছিলো বাংলাদেশ জাতীয় দল।
বাংলাদেশের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে দলীয় ৫০ রানে। ২৫ বলে ১৭ রান করে আউট হন ওপেনার তানজিদ হাসান। বিষ্ণুইয়ের বলে উঠিয়ে মারতে গিয়ে ত্যাগির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর, দলীয় ৬২ রানে রাভি বিষ্ণুইয়ের বলে বোল্ড হন কিউইদের বিপক্ষে সেমিফাইনালের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয়। আউট হওয়ার আগে তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ১২ বলে ৮ রান। ৬২ রানেই তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে। বিষ্ণুইয়ের বলে ২ বলে শূন্য রানে এলবিডাব্লিউ হয়ে আউট হন তৌহিদ হৃদয়। পরে, বিষ্ণুইয়ের চতুর্থ শিকারে পরিণত হন শাহাদাত হোসেন। ১০ বলে ১ রান করে স্ট্যাম্পড হয়ে ফিরেন তিনি। তারপর, শামীম হোসেন ৭ রানে ও ৫ রানে অভিষেক দাস ফিরে গেলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
তখনই, আহত হয়ে রিটায়ার্ড হয়ে ফিরে যাওয়া ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন আবারও ক্রিজে ফিরে আসেন। হাল ধরেন অধিনায়ক আকবর আলীর সঙ্গে। ধীরে ধীরে জয়ের বন্দরে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন এ দুজন। তবে বিধিবাম! জয় থেকে ৩৫ রান দূরে থাকতে জাসওয়ালের এক ফ্লাইট ডেলিভারিতে আকাশের ক্যাচে প্যাভিলিওনে ফেরেন ইমন। আউট হওয়ার আগে ৭৯ বলে ৪৭ রান করেন তিনি। এরপর, অধিনায়ক আকবর আলীর সঙ্গে জুটি বেঁধে রাকিবুল হাসান বাংলাদেশকে এনে দেন অধরা সোনার ট্রফি। আকবর আলী অপরাজিত থাকেন ৪৩ রানে ও রাকিবুল করেন অপরাজিত রান। ৪১তম ওভারে খেলা শেষ হওয়ার পর বৃষ্টি নামলে কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। তবে, সব শঙ্কা দূর করে জয় হলো বাংলাদেশেরই।
এর আগে, টাইগার যুবাদের অনবদ্য বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভার থেকে ১৬ বল বাকি থাকতেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারতকে ১৭৭ রানে অলআউট করে দেয় প্রথমবার ফাইনালে খেলা বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে অভিষেক দাস ৩টি, শরিফুল ইসলাম ২টি, তানজিম হাসান সাকিব ২টি ও রাকিবুল হাসান ১টি উইকেট শিকার করেন।
শিরোপা লড়াইয়ে টস জিতে ফিল্ডিং নেয় টাইগার যুবারা। শুরু থেকেই ভারতের ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরে টাইগার বোলাররা। প্রথম দুই ওভার মেইডেন। সপ্তম ওভারে সাক্সেনাকে তুলে নিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন অভিষেক দাস। প্রথম দশ ওভারে ভারত তুলতে পেরেছে মোটে ২৩ রান। তবে, আরেক ওপেনার জাসওয়াল ২য় উইকেটে তিলককে সঙ্গে নিয়ে সামাল দেন প্রাথমিক বিপর্যয়। ৩৮ রান করে আউট হন তিলক। চারে নেমে সুবিধে করতে পারেননি ইন্ডিয়ান ক্যাপ্টেন প্রিয়ম গার্গ। তবে, আরেক প্রান্ত আগলে সেঞ্চুরির দিকে এগুচ্ছিলেন জাসওয়াল। কিন্তু, দলীয় ১৫৬ রানে ডাবল ব্রেক থ্রু এনে দেন শরীফুল। শতক থেকে মাত্র ১২ রান দূরে থাকতে ভারতীয় ওপেনার জাসওয়ালের উইকেটটা তুলে নেন তিনি। এরপর টিকতে দেননি ভীরকেও। পরের বলেই সাজঘরে ফেরান তাকে। এরপর, ব্যাক্তিগত ২২ রানে রানআউট হয়ে ফেরেন জুরেল।
টিকতে পারেননি রাভি বিষ্ণুই, শরিফুলের দুর্দান্ত থ্রো ইনে রানআউট হন তিনি। দাঁড়াতে পারেনি লেজের দিকের কেউই। একে একে অংকেলাকার, ত্যাগি ও মিশ্রা ফিরে গেলে দু’শোর আগেই অলআউট হয় মেন ইন ব্লুজ।
Leave a Reply