জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যাতে বাড়ির বাইরে যেতে না পারে এবং একসঙ্গে যাতে দুজন চলাচল না করে-এই নির্দেশনা মানাতে বুধবার (২৫ মার্চ) সকাল থেকে মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন সেনারা। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে বৈঠক করেছেন। সেখানে জানানো হয়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে চারটি ক্যাম্প ও ১৭টি সাব ক্যাম্পের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করবে সশস্ত্র বাহিনী।
উপকূলীয় এলাকাগুলোতে কাজ করবে নৌবাহিনী। জরুরি ওষুধ সরবরাহ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করবে বিমানবাহিনী। আর শহরগুলোতে সার্বিক নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে সেনাবাহিনী। বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না সাধারণ মানুষ। এখনো তেমন কারও মধ্যে আসেনি সচেতনতা। স্বাভাবিক সময়ের মতোই সবাই রাস্তায় চলাচল করছে। বিদেশফেরত কেউই মানছে না হোম কোয়ারেন্টাইন। ইচ্ছে মতো করছে ঘোরাফেরা। এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সারাদেশে মাঠ পর্যায়ে সশস্ত্র বাহিনী নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
জানা যায়, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের পদক্ষেপগুলো শতভাগ সফল করতে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আইসোলেশন এবং কোয়ারেন্টাইন প্রতিষ্ঠিত করতে সশস্ত্র বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া সাধারণ মানুষের গণজমায়েত বন্ধে বিভিন্ন জনসচেতনতা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। বাজারে নিত্যপণ্য ও খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসকে সাহায্য করবে সেনাবাহিনী। বাজার, ওষুধের দোকান, মুদি দোকান, হোটেল ছাড়া সব কিছু বন্ধ থাকবে। বিনা প্রয়োজনে কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবে না। বের হলে অবশ্যই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘বুধবার থেকে গণজমায়েতের কোনো সুযোগ নেয়। কেউ কারো সংস্পর্কে আসতে পারবে না। কেউ কারো কাছে আসবে না। এটা দূর করতে হবে। বিনা প্রয়োজনে কেউ যেন বাসা থেকে বের না হয়। তবে অনেকের চিকিৎসা, বাজার বা ওষুধ লাগতে পারে। কিন্তু শুধু শুধু চায়ের দোকানে বসে থাকবো, গল্প করব এটা করতে দেওয়া হবে না।
এদিকে ঢাকা ছাড়াও বাইরের জেলা শহরের বাইরেও এসব নির্দেশনা মানাতে বৈঠক করেছেন সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, অচেনা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ জনে। এদিকে সোমবার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল দেশের সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩১ মার্চ থেকে বাড়িয়ে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ছুটি ঘোষণা পর থেকে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। এরই মধ্যে নৌ-পরিবহন, ট্রেন, বাস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এছাড়া রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।
Leave a Reply