ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের থানাকান্দি গ্রামে প্রতিপক্ষ দাঙ্গাবাজদের বর্বর হামলায় পা হারানো মোবারক মিয়া (৪৫) অবশেষে মারা গেছেন। চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে শেষ পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মঙ্গলবার দিবাগত রাত প্রায় দেড়টার দিকে মোবারক মারা যান।
এ খবর এলাকায় প্রচার হলে, এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মোবারক ঢাকায় রিক্সা চালাতেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন বলে জানান তার স্বজনেরা।
জানা গেছে, এলাকায় গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও এলাকার সর্দার আবু কাউছার মোল্লার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিলো। ইতিমধ্যে এই দুই গ্রুপে একাধিকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় বহু হতাহতের ঘটনাও ঘটে।
পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত ১২ এপ্রিল রবিবার সকালে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত লোক আহত হন। এ সময় একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে কাউছার মোল্লার পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের পক্ষের লোক রিক্সা চালক মোবারক মিয়ার (৪৫) একটি পা কেটে হাতে নিয়ে গ্রামে জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে ‘আনন্দ মিছিল’ করে।
মোবারকের নিকট আত্মীয়রা জানান- নরপশুরা তার বাঁ পা কেটে নিয়ে যাওয়ার পর তার ডান পা-ও কুপিয়ে আলাদা করার চেষ্টা করা হয়। এছাড়া, তার দুই হাত এবং পিঠেও প্রচন্ডভাবে কোপানো হয়।
মৃত্যুর আগে মোবারক তাকে কোপানোর সঙ্গে জড়িত ক’জনের নাম প্রকাশ করে যান বলে জানায় তার স্বজনেরা। হামলাকারীরা হচ্ছেন, থানাকান্দির হাতবাড়ি গ্রামের সিরাজের ছেলে খোকন, হাজিরহাটি গ্রামের মাঈনুদ্দিনের ছেলে রুমান, জিল্লুর ছেলে শাহিন ও মালির ছেলে জাবেদ। ইতিমধ্যে আহত মোবারকের ওই রেকর্ড করা বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরালও হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মকবুল হোসেন আজ সকালে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে কালের কণ্ঠকে বলেন,”মোবারকের ওপর নৃশংস হাসলাবারীদের গ্রেপ্তারে জোর অভিযান চলছে। এখন অারেকটি হত্যা মামলা হবে।”
Leave a Reply