করোনাভাইরাসে ধ্বস নেমেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। একই অবস্থা বাংলাদেশেও। করোনায় সৃষ্ট ব্যবসায়িক মন্দা পরিস্থিতিতে দুই মাসের স্থগিত করা ঋণের সুদ আদায়ের হার ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের এপ্রিল ও মে মাসের সুদ সম্পূর্ণ মওকুফ করা হয়েছে। তবে বিদেশি ঋণ ও ক্রেডিট কার্ডের ঋণগ্রহীতারা এ সুবিধা পাবেন না।
এছাড়া এক লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের বিপরীতে বার্ষিক ২ শতাংশ হারে এবং ১০ লাখ টাকার বেশি ঋণে ১ শতাংশ হারে সুদ মওকুফ পাওয়া যাবে। অর্থাৎ এক লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের সুদ (ঋণের সর্বোচ্চ সুদ ৯ শতাংশ ধরে) ২ শতাংশ মওকুফ করা হয়েছে। বাকি ৭ শতাংশ গ্রাহককে পরিশোধ করতে হবে।
১০ লাখ টাকার ওপরে ঋণের সুদ ১ শতাংশ মওকুফ করা হয়েছে। বাকি ৮ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে গ্রাহককে। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদ আদায়ের সময় নির্ধারণ হবে। তবে একজন গ্রাহক ঋণের সুদ ১২ লাখ টাকার বেশি মওকুফ পাবেন না।
বুধবার (১০ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি হয়েছে।
এর আগে করোনাভাইরাসের কারণে দুই মাস সব ধরনের ঋণের সুদ স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ১ এপ্রিল থেকে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত আরোপিত সুদ বা মুনাফা ‘সুদবিহীন ব্লকড হিসাবে’ স্থানান্তর করতে বলা হয়। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্লক হিসাবে স্থানান্তরিত ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে কোনো সুদ আদায় করা যাবে না বলে ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুদ আদায়ের হার ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সম্প্রতি সরকার গত দুই মাসে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য দুই হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়ার ঘোষণা দেয়। ব্যবসায়ীরা যে ঋণ নিয়েছেন, সেই ঋণের ১৬ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকার যে সুদ হয়েছে, সেই সুদ পরিশোধ বাবদ সরকার এই টাকা দেবে। সুদের অবশিষ্ট অর্থ ব্যবসায়ীরা যাতে ১২ মাসের কিস্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পরিশোধ করতে পারেন, সেই উদ্যোগও নেয় সরকার।
সরকারের দুই হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়ার ফলে আনুমানিক এক কোটি ৩৮ লাখ ঋণগ্রহীতা সরাসরি উপকৃত হবেন। কোভিড-১৯ এর কারণে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সব বন্ধ ছিল। সেই কারণেই তাদের এ সুযোগ দেয় সরকার।
Leave a Reply