শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :::
ডেইলি চিরন্তন অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য সিলেটসহ দেশ বিদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহীরা ইমেইলে যোগাযোগ করুন
শিরোনাম ::
শিশু মুনতাহাকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করা হয়,গ্রেপ্তার ৪ রেকর্ড গড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন জো রোগান আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবির ২ শিক্ষকসহ ৯ জন বহিষ্কার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার কোন শিক্ষায় বড় করছেন মেয়েকে, জানালেন ঐশ্বরিয়া বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের ৬ষ্ট প্রতিষ্টা বার্ষিকী উদজাপন ‘মাজার ভাঙচুর করে সুন্নি জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না’ জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার কঠোর বার্তা পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় বাংলাদেশের মেসির মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন মায়ামি কোচ বন্যায় আরো মৃত্যু, সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায় প্রাথমিকের ‘শপথ বাক্য’ থেকে বাদ গেল বঙ্গবন্ধুর অংশ অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন দপ্তর পেলেন নোবেল বিজয়ী থেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য উপদেষ্টা যারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ আশঙ্কা ছিল এ ধরনের একটা আঘাত আসবে : প্রধানমন্ত্রী
সিলেটের বড়শলা’র আতঙ্ক ‘বতুশা’ বাহিনী

সিলেটের বড়শলা’র আতঙ্ক ‘বতুশা’ বাহিনী

সিলেটের বড়শলা’র আতঙ্ক ‘বতুশা’ বাহিনী

PicsArt_06-29-08.25.21

সুলতান সুমনঃ সিলেট সদর উপজেলার বড়শলা গ্রাম। একটি সু-শৃঙ্খল ও শান্তি প্রিয়। কিন্তু সেই গ্রামের বর্তমান মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে উঠেছে ‘বতুশা’। ফয়জুল হক বতুশা তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে সাধারণ জনগণের জায়গা দখল, জাল দলিল তৈরি, মারপিট, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকী ও মসজিদের ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করেছে। তাছাড়া উচ্চ আদালতের জামিনের কাগজ জালিয়াতি। বিদুৎ এর তিন তিনটি লাইন অবৈধ ব্যবহার ডিফেন্স এর জায়গা দখল সহ নানা ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে জড়িত বতুশা। তার বিরুদ্ধে কোন সচেতন মানুষ প্রতিবাদ করলে, ওই ব্যক্তিকে মারপিট করে নিজস্ব বাহিনীর লোক দিয়ে নারী নির্যাতন থেকে শুরু করে নানা ধরণের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করানো হয়। আর বতুশা’র এ সকল অনৈতিক কর্মকান্ডে সহযোগিতা করেন কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা। এ সকল বিষয়ে বড়শালা এলাকাবাসী সিলেট জেলা প্রশাসক, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, র‌্যাব-৯ এবং থানায় ৫ জিডি, ১টি দ্রুতবিচার আইনের মামলা,তার ছেলের বিরুদ্ধে একটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা ও বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে ২০টি অভিযোগ দাখিল করেন। তবু থেমে থাকেনি বতু বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।

বড়শলা গ্রামবাসী জানান, বতুশা’র বাড়ি হচ্ছে বড়শলা গ্রামের সম্মুখে। তার বাড়ির সামন দিয়ে সিলেট বিমানবন্দর সড়কে চলাচল করতে হয় গ্রামবাসীকে। ফলে বতুশা গ্রামের মূল সড়কের উপর খুঁটি দিয়ে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে গ্রামের সকল লোকের গতিবিধি লক্ষ করে এবং সে অনুযায়ী সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে পরিকল্পনা মাফিক অনেককেই মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করে আসছে।

গ্রামবাসী আরো জানান, বতুশা তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর বড়শলা মসজিদে স্বঘোষিত সেক্রেটারি পদ ধরে রাখে। ফলে মসজিদের ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ, দূর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগে গত বছরের ১৭ নভেম্বর ৬১ নম্বর স্মারকে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে এলাকাবাসী অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর থেকে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে তার ছেলে রাফি, তার ভাগনা পারভেজ ও তার বাহিনী। বতু বাহিনীর অন্যতম সদস্য হেলাল ও চৌকিদেখির রোমান আহমদ মুন্না। তাদের বিরুদ্ধে ৮ টি করে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন, হত্যা, দুদুকের মামলা, মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও অস্ত্র আইনের মামলা রয়েছে। ওই দুইজন ছাড়াও বতু বাহিনীতে রয়েছে আরও ১৫ জন সন্ত্রাসী। এদেরকে পুলিশ ও র‌্যাব-৯ একাধিকবার গ্রেফতারও করেন।

সূত্র জানায়, বড়শলা গ্রামবাসীর অনুরোধে বতুশা’র কাছে মসজিদের হিসেব চান একই গ্রামের বাসিন্দা ও ক্রিসেন্ট মেডিকেল সার্ভিসের মালিক এবং সিলেটের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, লক্ষ টাকার উপরে করদাতা জাকির আহমদ চৌধুরী। হিসেব চাওয়ার কারণে ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর রাত প্রায় ১১ টায় বতুশা তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে চৌকিদেখির বিলাস কমিউনিটি সেন্টারের সামনে হামলা করে জাকিরকে হত্যার উদ্দেশ্যে, তবে বেঁচে গেলেও তার গাড়ি ভাঙচুর করে। পরবর্তীতে ওই এলাকার কাউন্সিলর অফিসের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন জাকির। সেই মামলায় বতুশা ও তার বাহিনীর আরো ৬ জন উচ্চ আদালতে ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে ৭০১৭৮ নম্বর মিসকেইসে দুই সপ্তাহের জামিন লাভ করেন। কিন্তু ওই তারিখে আইনজীবী সাহিনারা তারেকের পেডে জালিয়াতির মাধ্যমে ২৮ দিনের জামিন লিখে তা পুলিশের কাছে প্রদান করে। বতুশা এরপর থেকে গ্রামবাসীকে ঘায়েল করতে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে শুরু করে একের পর এক অন্যায়, অনৈতিক ও সন্ত্রাসী মূলক কর্মকান্ড। এর ফল স্বরূপ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বতুশার ভাগ্নি জামাই ও অন্য আসামিদের বোনের জামাই শাহাদাতুজ্জামান জোহাকে ফিটনেস ও কাগজপত্র বিহীন জীপ গাড়ি নং ঢাকা ঘ-১৪-০১৩১ দিয়ে সন্ত্রাসী হামলার নাটক সাজিয়ে জাকির চৌধুরী ও তার মামলার ২ সাক্ষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে এবং জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করলে বিমানবন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। কিন্তু পুলিশ সেখানে গিয়ে ঘটনার কোন সত্যতা না পাওয়া কোন মামলা নেয়নি। পরবর্তীতে এ নিয়ে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন জোহা। আদালত বিমানবন্দর থানাকে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু পরবর্তীতে মামলাটি দ্রুত বিচার আইনে রেকর্ড হয় । সেই মামলায় জাকির ও তার দুই সাক্ষী সিলেট মেট্রোপলিটন আদালতে আত্মসমর্পণ করে ২৬ জানুয়ারি ২০ ইং তারিখে জামিন নেন। এরপর থেকে বতুশা ও তার বাহিনী আরো হিংস্র হয়ে উঠে। এলাকায় বতুশা তার লাইসেন্সকৃত দুনলা বন্দুকের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র দিয়ে নিরিহ লোকদের জায়গা দখল, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে থাকে। বড়শলা এলাকাবাসী মসজিদের নতুন কমিটি করেন। সেই কমিটির সদস্যদেরকেও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ফাঁকা গুলি করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বতু বাহিনী। ফলে জাকির বতুশার বন্দুকের লাইসেন্স বাতিলের আবেদন করলে, সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বিমানবন্দর থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রবাস কুমার সিংহের ২৩ মার্চ ২০ ইং তারিখের তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ৪ মে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স নং ৮৩২/১৬৮৭, দোনালা বন্দুক নম্বর ১৯৫২২ জব্দ করেন। এরপর থেকে বতুশা ও তার বাহিনীর সন্ত্রাসীরা এলাকায় অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দিয়ে জনমনে ত্রাস সৃষ্টি করে যাচ্ছে। আর জাকির আহমদ চৌধুরী, মসজিদ কমিটির বর্তমান সকল সদস্যবৃন্দ এবং নিরীহ গ্রামবাসীকে মিথ্যা-বানোয়াট কল্প কাহিনী সাজিয়ে তার আত্মীয় ও বাহিনীর লোকদের দ্বারা পুলিশের সাথে যোগসাজসে নানা ধরণের মিথ্যা মামলা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। যার ফলে বড়শলা এলাকার সর্বস্থরের জনগনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে বড়শালা মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি সাদ আহমদ জানান, বতুশা মসজিদের ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র সহকারে এলাকার লোকদের হুমকি দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। আর বিভিন্নজনকে মিথ্যা মামলায় জড়িত করছেন।

কমিউনিটি পুলিশের ওয়ার্ড সভাপতি সামাদ আহমদ জানান, বতুশা বিভিন্নজনকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। তার ব্যবহৃত বন্দুক জব্দ হওয়ার পর। সে তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এলাকায় অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।

স্থানীয় ওয়ার্ডের মেম্বার সাকির আহমদ জানান, বতুশা ও তার বাহিনী বর্তমানে বড়শলার আতঙ্ক। সে তার বাহিনীর মাধ্যমে বিভিন্ন লোকজনকে হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় জড়িত করে।

৩ নম্বর খাদিমনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তারা মিয়া জানান, বতুশা একটা সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। সে তার বাহিনী দিয়ে জায়গা দখল, দালালি ও অস্ত্রের মহড়া দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। তাছাড়া এলাকার লোকজনকে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। বতুশা এখন একটা আতঙ্কই বলা চলে।

এলাকাবাসীর সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে ফয়জুল হক বতুশা জানান, তাঁর নাম ফয়জুল হক খাঁন। বড়শলা মসজিদের কমিটি ও হিসেব নিকাশি নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। তিনি জানান, তার লাইসেন্সকৃত বন্দুক বর্তমানে পুলিশের কাছে জব্দ রয়েছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার জেদান আল মুসা জানান, যে কারো বিরুদ্ধে অন্যায়-অনিয়ম, দূর্নীতি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ উঠলে। তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসএমপি’র বিমান বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহদাৎ হোসেন জানান, বতুশার বিরুদ্ধে একাধিক জিডি রয়েছে। আর এলাকাবাসীর দেয়া লিখিত অভিযোগ উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে তদন্তাধীন। সাধারণ মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করার বিষয়টি সঠিক নয়। যে কেউ অভিযোগ করলে তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সংবাদটি ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

November 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  



© All rights reserved © dailychironton.com
Design BY Web Nest BD
ThemesBazar-Jowfhowo