ডেইলি চিরন্তনঃ প্রথমে ২০০৭ সালে কনস্টেবল পদে চাকরি। ২০১৪ সালে হন পুলিশের এসআই। পুলিশে যোগদান করার পর বদলে গেছে আকবর হোসেন ভূঁইয়া ও তার পরিবারের অবস্থা।
সিলেটে পুলিশ হেফাজতে যুবক রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) বন্দর বাজার ফাঁড়ি ইনচার্জ আকবর হোসেন ভূঁইয়া এখন অভিযুক্ত। এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচিত ও সমালোচিত তিনি। ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত তার জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলায় বগইর গ্রামের মানুষ। তার এ ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচারও দাবি করেন তারা।
জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলা বগইর গ্রামে জাফর আলী ভূঁইয়ার বড় ছেলে পুলিশের এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। সবার বড় বোন। পুলিশে তার চাকরি হওয়ার পর বদলে যায় তার পুরো পরিবারের অবস্থা। এক ভাইকে প্রবাসে পাঠিয়েছেন। অন্য ভাইকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন তিনি। বোনদের বিয়েও দিয়েছেন। গ্রামের বাড়িতে এখন নির্মাণ করেছেন বিলাসবহল দৃষ্টিনন্দন বাড়ি। প্রথম তলার কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছেন।
পাশাপাশি বাড়ির সামনে নির্মাণ করছেন আধুনিক একটি গেট। যার নির্মাণ কাজ এখন চলছে। তার বাড়ির আশপাশে রয়েছে তাদের নামে-বেনামে অঢেল সম্পত্তি। আর সব কিছু হয়েছে পুলিশের কর্মকর্তা আকবর হোসেন ভূঁইয়ার বদৌলতে।
সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হান নামে যুবককে নির্যাতন করে মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা আকবর হোসেন ভূঁইয়া জড়িত থাকায় হতবাক তার জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার মানুষ। তারা বলছেন, পুলিশ কর্মকর্তা আকবর হোসেন ভূঁইয়া ও তার পুরো পরিবার বিতর্কিত। তার পিতা জাফর আলী ভূঁইয়া স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলার আসামি ছিলেন। জেলও খেটেছেন এক মাস।
বিএনপি আমলে ওই পরিবারের ছিল একক আধিপত্য। সময়ের সঙ্গে তারা এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এখন জড়িত। অভিযোগ আছে, টাকার বিনিময়ে তিনি পুলিশে চাকরি নিয়েছিলেন। পুলিশের চাকরিতে যোগদান করে হয়েছেন অগাধ সম্পত্তির মালিক।
স্থানীয় রবিউল সানী জানান, এক সময় এই গ্রামের ছেলে পুলিশে চাকরি করে বলে আমরা গর্ব করতাম। সিলেটের ঘটনার পর তা আর করতে ইচ্ছা করে না। আগে তাদের পরিবারে অবস্থা ভালো ছিল না। পুলিশে চাকরির পর তাদের অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে।
রাফি হোসাইন নামে আরেকজন জানান, ঘটনাটি আশুগঞ্জ উপজেলার জন্য কলঙ্কজনক। পাশাপাশি তার সব সম্পত্তির হিসাব তদন্ত ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হানিফ মুন্সি জানান, বিষয়টি আশুগঞ্জের জন্য খুবই লজ্জাজনক ও নিন্দনীয় কাজ। পাশাপাশি পুলিশ কর্মকর্তা আকবর হোসেন ভূঁইয়া ও তার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে কখনও জড়িত ছিল না বলে তিনি দাবি করেন।
তবে তার গ্রামের বাড়িতে থাকা তার ছোট ভাই আরিফ ভূঁইয়া জানান, তার ভাই আকবর ভূঁইয়া এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে না।
Leave a Reply