ডেইলি চিরন্তনঃ পুলিশের মাত্রাতিরিক্ত নির্যাতনেই রায়হান আহমেদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। সিলেটে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনে মারা যাওয়া যুবক রায়হানের লাশ তুলে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের পর এমন তথ্যই উঠে এসেছে। এদিকে এ ঘটনার মূল হোতা বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর হোসেন ভূঁইয়া এখনো ‘নিখোঁজ’। তিনি যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন সে জন্য সব ইমিগ্রেশনকে সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে সিলেটে এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার সড়ক অবরোধের সময় পুলিশ তা সরাতে গেলে উত্তেজিত জনতা তাদের ধাওয়া করে।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজিব আহমেদ ও মেজবাহ উদ্দিনের উপস্থিতিতে গতকাল সকালে পিবিআইয়ের একটি দল আখালিয়া এলাকার নবাবী মসজিদের পঞ্চায়েতি কবরস্থান থেকে রায়হানের দেহ কবর থেকে তোলে। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই সিলেটের পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম, স্থানীয় কাউন্সিলর মুখলিছুর রহমান কামরানও উপস্থিত ছিলেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রায়হানের লাশ ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে নেওয়া হয়।
এর আগে রায়হানের দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শামসুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছিল।
ময়নাতদন্ত শেষে ডা. শামসুল ইসলাম বলেন, শরীরে অতিরিক্ত আঘাতের কারণেই রায়হান আহমেদের মৃত্যু হতে পারে। রায়হানের শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হাতে পেলে আরো বিস্তারিত বলা যাবে।
এদিকে সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্ত ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া যাতে পালিয়ে যেতে না পারেন সে জন্য দেশের সব ইমিগ্রেশনে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাজধানীর ধানমণ্ডিতে অবস্থিত পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, আকবর যেন কোনোমতেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারেন সে জন্য সব ইমিগ্রেশনে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও সীমান্তের বিভিন্ন ইমিগ্রেশন সেন্টারে জানানো হয়েছে।
এদিকে রায়হান হত্যার প্রতিবাদে গতকালও নগরের আখালিয়া এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। বিকেল ৪টার দিকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের আখালিয়া এলাকায় রায়হানের বাড়ির সামনে এই অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ সড়ক থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে গেলে তাদের ধাওয়া করে উত্তেজিত জনতা। এ সময় সড়কের দুই পাশে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে। পরে স্থানীয় কাউন্সিলরের হস্তক্ষেপে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী।
Leave a Reply