ডেইলি চিরন্তনঃ সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ নামের এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিন পুলিশ সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। সোমবার বিকেলে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. জিহাদুর রহমান ১৬৪ ধারায় তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দিতে ঘটনার দিন রায়হান আহমদকে কীভাবে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয় এবং ভেতরে নির্যাতনের সাথে কারা জড়িত ছিলেন এ ব্যাপারে বিশদ বর্ণনা দেন তারা।
সাক্ষ্য প্রদানকারীরা হলেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য সাইফুল, দেলোয়ার ও শামীম।
সোমবার বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বিচারক তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
সূত্র জানায়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম তিন পুলিশ সদস্যকে আদালতে হাজির করেন। ওই তিন পুলিশ সদস্য ঘটনার সময় (১০ অক্টোবর দিবাগত রাতে) বন্দরবাজার ফাঁড়িতে দায়িত্বরত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ অক্টোবর ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে নগরীর নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান আহমদকে গুরুতর আহতাবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহী। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রায়হানের মৃত্যু হয়। শুরুতে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়,ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকার জন্য ফাঁড়িতে নির্যাতনের মৃত্যুর অভিযোগ তোলা হলে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী বাদি হয়ে হত্যা ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলা দায়ের করলে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেনসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়।
বরখাস্তের পর ১২ অক্টোবর থেকে গা ঢাকা দেন এসআই আকবর।
এদিকে, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়। তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর ও নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। ঘটনার আদ্যোপান্ত জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করে কয়েকজনকে। মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয়।
ময়নাতদন্তে রায়হানের শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ১৪টি ছিল গুরুতর। দুই হাতের দুটি নখ ছিল উপড়ানো।
Leave a Reply