তিনি বলেছেন, “কোভিড ১৯ মহামারী দেখিয়ে দিয়েছে, সবাই নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত কেউ নিরাপদ নয়।
“এজন্য বৈষম্য হ্রাস, দারিদ্র্য বিমোচন এবং কার্বন নির্গমন হ্রাস করে আমাদের গ্রহকে সুরক্ষিত করতে হবে এবং আমাদের বহুপাক্ষিক প্রয়াসকে আরও জোরদার করতে হবে।”
জাতিসংঘের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্পেন সরকার আয়োজিত ‘বহুপাক্ষিকতা জোরদারে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান’ শীর্ষক বৈশ্বিক এক উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে ভিডিও বক্তব্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এই অনুষ্ঠানে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেন এবং কোস্টারিকার প্রেসিডেন্ট কার্লোস আলভার্দো কেসাদা সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট, কানাডার প্রধানমন্ত্রী, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, জর্ডানের উপ প্রধানমন্ত্রী, সেনেগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কেরিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক ভাইস মিনিস্টারের ধারণকৃত ভিডিও ভাষণ অনুষ্ঠানে প্রচার করা হয়।
জাতিসংঘের ৭৫ তম বার্ষিকী উদযাপনের ভিডিও এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের বক্তব্যের একটি ভিডিও প্রদর্শিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে কার্যকর বহুপাক্ষিকতার বিকল্প নেই। মানবজাতির অভিন্ন অগ্রগতি এবং ন্যায়ভিত্তিক আন্তর্জাতিক নির্দেশনার এটিই একমাত্র পথ।
প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারী থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ইতিহাস প্রমাণ করে যে সম্মিলিত প্রচেষ্টা থেকে যে কোনো বিচ্যুতি মানবজাতির জন্য বিপর্যয় নিয়ে আসবে।”
বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়নের জন্য ক্ষতিকর ক্রিয়াকলাপ থেকে বিরত থাকতে সবার প্রদি আহ্বান জানান তিনি।
করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় তার সরকারের কর্মকাণ্ডও বিশ্ব নেতাদের সামনে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
“আমাদের জনগণের জীবিকার সুরক্ষায় আমরা ইতোমধ্যেই ১৪.১৪ বিলিয়ন বরাদ্দ দিয়েছি, যা আমাদের জিডিপির ৪.৩ শতাংশ। মহামারীর প্রভাব সত্ত্বেও সরকারের সময় উপযোগী পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ ৫.২৪ শতাংশ জিডিপি অর্জন করেছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বহুপাক্ষিকতার পতাকা বাহক। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীতে সর্বোচ্চ উপস্থিতি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শান্তি ও সুরক্ষার পক্ষে জোরালোভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, বহুপাক্ষিকতা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার চেতনা বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
“আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১০৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণে সম্মিলিত প্রচেষ্টার গুরুত্ব এবং জাতিসংঘের ভূমিকার কথা তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘জাতিসংঘ দুঃখ, দুর্দশা এবং সংঘাতের এই পৃথিবীতে ভবিষ্যৎ মানুষের আশার কেন্দ্র হয়ে থাকবে’।’ তার মন্তব্য এখনও আমাদের বহুপাক্ষিকতার ভিত্তি হয়ে আছে।”
দ্বিতীয়বারের মতো ৪৮ সদস্যের ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের নেতৃত্ব দিতে নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশ সম্মানিত বোধ করছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নে অঙ্গীকারও স্মরণ করেন তিনি।
Leave a Reply