ডেইলি চিরন্তনঃ আজ ৩০ নভেম্বর। সৈয়দা তামান্না বেগমের বিয়ের ২ মাস। গত ৩০ সেপ্টেম্বর আজকের এ দিনে পরিবার ছেড়ে নতুন সংসারের জন্য লাল-বেনারশি শাড়ি পড়ে নববধূ সেজেছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্য সংসার করতে দেয়নি তামান্নাকে। স্বামী নামক পাষন্ডের হাতে নির্মম ভাবে খুন হয়ে পরপারে চলে যেতে হলো। বিয়ের ২ মাস পূর্ণ হয়েছে সেই সাথে খুন হওয়ার ১ সপ্তাহ হলো। খুন হওয়ার ১ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও আসামীদের ধরতে পারেনি পুলিশ। এখন পর্যন্ত একজন গ্রেপ্তার হলেও তামান্নার স্বামী আল-মামুনসহ বাকি রয়েছেন আরও ৫ জন।
নিহত তামান্না বেগমের বাড়ি দক্ষিণ সুরমা থানার লালাবাজার ইউনিয়নের ফুলদি গ্রামে।বর্তমানে তার পরিবার দীর্ঘ দিন যাবত থেকে গোলাপগঞ্জ উপজেলার এমসি একাডেমি সংলগ্ন একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।
তামান্নার মা হাফিজুন চৌধুরী স্বামী ছাড়া সন্তানদের খুব কষ্ট লালন-পালন করেছিলেন। তাদেরকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য একাই পরিশ্রম করে গেছেন। নিজের শরীরের রক্ত বিক্রি করে সন্তানদের টিউশনের টাকার জোগাড় করে দিয়েছেন। কখনো সন্তানদের অভাব বুঝতে দেন নি। স্বামী ছাড়া ৭-৮ জনের পরিবার একাই টেনে নিয়েছেন।
তিনি স্বপ্ন দেখছিলেন তামান্নার ভাল একটি সংসার হবে। সুখে থাকবে আদরের মেয়েটি। কিন্তু সুখ যে তার কপালে নেই। নিজের চোখের সামনেই টগবগে মেয়ের লাশ দেখবেন কখনো তিনি ভাবেন নি।
তামান্নার স্বামী মো. আল মামুনের জন্মস্থান বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার হোগলারচরে। তবে তার ভোটার আইডি কার্ডে ঠিকানায় রয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বারুতখানা এলাকার নাম। তিনি বারুতখানা এলাকার আবুল কাশেম সরদার ও আমম্বিয়া বেগমের ছেলে। তামান্না খুন হওয়ার পরদিনই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বারের সাথে কোন মিল পায়নি নির্বাচন কমিশন। ভুল আইডি কার্ড দিয়ে তামান্নাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। তার নগরীর জিন্দাবাজারস্থ আল-মারজান শপিং সেন্টারের ঐশি ফেব্রিক্স নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এদিকে তামান্না হত্যার সাথে জড়িত তার স্বামীসহ বাকিদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান, কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সেলিম মিঞা।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার দুপুরে সিলেট নগরীর উত্তর কাজীটুলার এলাকার অন্তরঙ্গ ৪/এ বাসার দুতলার একটি কক্ষ থেকে নববধূ সৈয়দা তামান্না বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগ থেকেই তামান্নার স্বামী আল মামুন পলাতক রয়েছেন।
Leave a Reply