প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিনে সারা দেশে চলছে টিকা উৎসব। এক দিনে ৭৫ লাখ টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে সিটি করপোরেশন, জেলা-উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়নে দেওয়া হচ্ছে টিকা। এর পাশাপাশি চলছে নিয়মিত টিকাদান।
গতকাল সকাল ৯টায় শুরু হয়ে টিকাদান চলছে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
তবে অনেক স্কুলে টিকাদান কেন্দ্র করায় ক্লাস শেষে দুপুর আড়াইটাই শুরু হয়েছে টিকাদান। এতে সকালে টিকা নিতে আসা অনেকে ফিরে গেছেন। লক্ষ্যপূরণ না হলে সেসব কেন্দ্রে আজও টিকা দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেছেন, কেউ টিকা ছাড়া ফিরে যাবেন না।
অনেকেই নিবন্ধন করে দুই-তিন মাস ধরে এসএমএস পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। তাদের অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। এর ভিতরে যদি কোনো বয়স্ক মানুষ চলে আসেন আমরা তাদেরও টিকা দেব। সিদ্ধান্ত হচ্ছে- কেউ আজ ফিরে যাবে না।
আজ টার্গেট পূরণ না হলে কালও (বুধবার) টিকা দেওয়া হবে। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডির ১৫ নম্বর ওয়ার্ড টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে তিনি একথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরাসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। আহমেদ কায়কাউস আরও বলেন, ‘আজ থেকে আমরা বড় অঙ্কের টিকা দেব; যাতে অপেক্ষমাণ যারা আছেন তাদের সংখ্যা কমে আসে। তারপর আমরা বয়সসীমা ২৫ বছর থেকে ধাপে ধাপে কমিয়ে আনব।
’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ১ হাজার করে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার তিনটি বস্তিতে আরও ১ হাজার করে টিকা দেওয়া হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৭৫টি ওয়ার্ডের ৭৫টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৩৫০ ডোজ টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সকাল ৯টায় টিকাদান শুরুর কথা থাকলেও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কয়েকটি কেন্দ্রে টিকা নিতে এসে লোকজন ফিরে গেছেন। ডিএনসিসির ২৯, ৩০ ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্ধারিত টিকাদানকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, টিকা নিতে আসা লোকজন ফিরে যাচ্ছেন। দুপুরের পর টিকা দেওয়া হবে বলে তাদের জানানো হয়েছে। ডিএনসিসির ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সূচনা কমিউনিটি কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, টিকা নিতে আসা লোকজনকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। সময় পরিবর্তন হলেও নতুন করে কোনো মাইকিং করা হয়নি। অনেক কেন্দ্রে বেলা আড়াইটাই শুরু হয়েছে টিকাদান।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ৭৫ লাখ মানুষকে টিকাদানের লক্ষ্যে দেশব্যাপী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্যপূরণে অনেক কেন্দ্রে সন্ধ্যা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি কোনো কেন্দ্রে টিকা থাকে তাহলে বুধবারও দেওয়া হবে। অনেক জায়গায় আবহাওয়া খারাপ থাকায় টিকা দান বিঘ্নিত হয়েছে। সেসব কেন্দ্রে আজকেও টিকা দেওয়া হবে। ঢাকার বাইরে সারা দেশে চলেছে উৎসব মুখর পরিবেশে টিকাদান।
আমাদের প্রতিনিধিরা জানান, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডের ৮৪টি কেন্দ্রে বিশেষ টিকা কার্যক্রম চলেছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ১ হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্রগুলোতে লোকসমাগম বেশি হওয়ায় টিকার পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার। এ ছাড়া রাজশাহীর ৫টি পৌরসভা ও ৭৩টি ইউনিয়নেও চলছে বিশেষ টিকা কার্যক্রম। এসবের প্রতিটিতে সারা দিনে ১ হাজার ৫০০ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। বরিশাল জেলা ও মহানগরীর ১২৭টি কেন্দ্রে দেওয়া হয়েছে টিকা। বরিশাল জেলার ১০ উপজেলায় ৮৭টি ইউনিয়নের ৯৭টি কেন্দ্রের ২৬১টি বুথে এবং সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডের ৩০ কেন্দ্রের ৪০টি বুথে গতকাল ৯টায় শুরু হয় টিকা ক্যাম্পেইন। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রংপুরে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ জনকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ড ও ৮ উপজেলার ৭৬টি ইউনিয়নসহ মোট ১০৯টি কেন্দ্রে টিকাদান কর্মীরা নিবন্ধিত ব্যক্তিদের টিকা প্রদান করেন। প্রতিটি কেন্দ্রে ১ হাজার ৫০০ জনকে টিকা প্রদান করা হয়েছে।
Leave a Reply